বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা মহানগরীর ব্যস্ত সড়কে দায়িত্বপালনকারী ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের মাঝে ৬৪ শতাংশই শ্রবণ সমস্যায় ভুগছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নে গবেষণাটি করেন শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে স্পেশালাইজড হসপিটাল অ্যান্ড নার্সিং কলেজের চিকিৎসক ডা. আবির্ভাব নাহা পরিচালিত এক গবেষণায় এমন ভয়ানক অবস্থা ধরা পড়েছে।
‘নয়েজ এক্সপোজার অ্যান্ড নয়েজ ইনডিউকেড হিয়ারিং লস অ্যামং দ্য ট্রাফিক পুলিশ ইন ঢাকা মেট্রোপলিটন সিটি’ শীর্ষক গবেষণাপত্রটি বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের জার্নালে প্রকাশের অপেক্ষায় আছে। এ গবেষণার জন্য ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের জুলাই পর্যন্ত সময়ে তথ্য সংগ্রহ করেন তিনি।
গবেষক ডা. নাহা জানান, গবেষণায় প্রথমে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিম চারটি অঞ্চলের ২৮টি এলাকার শব্দের মাত্রা নির্ণয় করা হয়। পরে দ্বৈবচয়নের ভিত্তিতে ট্রাফিক পুলিশের চারটি বিভাগের রাস্তায় দায়িত্ব পালন করা ১০০ সদস্যের কান পরীক্ষা করা হয়। এতে দেখা যায়, ৬৪ শতাংশেরই শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত। ফলে ৪০ শতাংশ ট্রাফিক পুলিশ সদস্য ঘুমের সমস্যায় ভোগেন। ঘুমের মধ্যেও তারা শব্দের মাত্রা অনুভব করেন। ৫৬ শতাংশ কানে সার্বক্ষণিক বিদঘুটে শব্দ পান এবং ২৭ শতাংশ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একজন মানুষ ৮০ ডেসিবল শব্দের মধ্যে সর্বোচ্চ ৮ ঘণ্টা কাজ করতে পারে। শব্দের মাত্রা এর বেশি হলে তা মানব শরীরে মারাত্মক প্রভাব ফেলে ।
এ বিষয়ে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান রেডিও তেহরানকে বলেন, শুধু ট্রাফিক পুলিশ নয়, উচ্চ শব্দের মাঝে যাদের দীর্ঘ সময় ধরে অবস্থান করতে হয় তাদের শ্রবণ শক্তি কমে আসার পাশাপাশি শ্রবণ ইন্দ্রিয়ের সাথে যুক্ত স্নায়ুতন্ত্রের জটিলতা এবং মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে থাকে।
দেশের শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০০৬ অনুযায়ী, শব্দের মানমাত্রা নীরব এলাকায় দিনে ৫০ ও রাতে ৪০, আবাসিক এলাকায় দিনে ৫৫ ও রাতে ৪৫, মিশ্র এলাকায় দিনে ৬০ ও রাতে ৫০, বাণিজ্যিক এলাকায় দিনে ৭০ ও রাতে ৬০ এবং শিল্প এলাকায় দিনে ৭৫ ও রাতে ৭০ ডেসিবলের বেশি হতে পারবে না।
তবে ঢাকার প্রতিটি স্থানেই শব্দের মাত্রা শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০০৬ নির্দেশিত মানমাত্রা অতিক্রম করেছে বলে এক জরিপ প্রতিবেদনে আগেই জানিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর
আপনার মতামত জানানঃ