ভারত পাকিস্তানের তিনটি বিমান ঘাঁটিকে টার্গেট করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের এই দাবির বিষয়ে ভারত এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার (৯ মে) স্থানীয় সময় সময় দিবাগত রাতে নূর খান, মোরিদ ও শোরকোট বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায় ভারত। ভারত এসব ঘাঁটিতে বিমান থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। তবে এগুলো এখনো নিরাপদ রয়েছে বলে নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারে পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেন, ভারত তিনটি বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে ‘ক্ষেপণাস্ত্র হামলা’ চালিয়েছে। তিনি বলেন, ‘অধিকাংশ ক্ষেপণাস্ত্র’ প্রতিহত করা হয়েছে এবং ‘কোনো বিমানের’ ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়ে পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র আরও বলেন, ‘এখন শুধু আমাদের জবাবের জন্য অপেক্ষা করুন।’
পাকিস্তান যেসব ঘাঁটিতে আঘাত হানার দাবি করেছে তার মধ্যে একটি হলো রাওয়ালপিন্ডির নূর খান। এটি দেশটির সামরিক সদর দফতরের আবাসস্থল। পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে ১০ কিলোমিটার (৬.২ মিটার) দূরে এর অবস্থান।
ভারতের হামলার পর পরই শনিবার ভোরে পাকিস্তান দেশটির বিভিন্ন সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার দাবি করেছে।
পাকিস্তানের আইএসপিআরের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, ‘ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু করেছে পাকিস্তান সশস্ত্রবাহিনী।
নিরাপত্তা সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে দেশটির বিভিন্ন মিডিয়ার খবরে বলা হয়, ভারতের বিভিন্ন কৌশলগত অবস্থান এই হামলার টার্গেট করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিশোধমূলক সামরিক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে পাকিস্তান ভারতের উধমপুর ও পাঠানকোট বিমান ঘাঁটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রগুলো পাকিস্তানের নিজেদের তৈরি ফতেহ-১ বলে জানা গেছে। ভারতের সামরিক বাহিনী পাকিস্তানের হামলার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
এদিকে,ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে শুক্র ও শনিবারের মাঝ রাতে উত্তরের বারামুল্লা থেকে গুজরাতের ভুজ পর্যন্ত ২৬টি জায়গায় ড্রোন দেখা গিয়েছে। এসব সন্দেহভাজন সশস্ত্র ড্রোন বেসামরিক ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার চেষ্টা করেছিল বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
বারামুল্লা, শ্রীনগর, অবন্তীপোরা, নাগরোটা, জম্মু, ফিরোজপুর, পাঠানকোট, ফাজিলকা, লালগড় জাট্টা, জয়সলমীর, বারমের, ভুজ, কুয়ারবেত এবং লক্ষী নালার কাছে ওই ড্রোনগুলি দেখা গেছে।
ফিরোজপুরের একটি বেসামরিক এলাকায় এমনই একটি ড্রোন হামলা চালায়। ওই হামলায় স্থানীয় অনেক বাসিন্দা গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং নিরাপত্তা বাহিনী এলাকায় তল্লাশী চালাচ্ছে।
“ভারত জানিয়েছে যে তাদের সামরিক বাহিনী সতর্ক অবস্থায় রয়েছে এবং এ জাতীয় সমস্ত হামলা ড্রোন প্রতিরোধী ব্যবস্থাপনা দিয়ে মোকাবেলা করা হচ্ছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সীমান্ত অঞ্চলের বাসিন্দাদের বাড়ির ভিতরে থাকার এবং এলাকায় জারি করা সুরক্ষা নির্দেশাবলী মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে।
আপনার মতামত জানানঃ