জুলিয়ান অ্যাসেঞ্জের ফাঁস করা সব নথির মধ্যে মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে আফগান যুদ্ধসম্পর্কিত ৭৬ হাজার এবং ইরাক যুদ্ধ সম্পর্কিত আরও ৪০ হাজার নথি ছিল, যা যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও পেন্টাগনকে চরম বেকায়দায় ফেলে দেয়।
গোটা বিশ্বের আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে ‘উইকিলিকস’ এর প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসেঞ্জের বিরুদ্ধে অন্যতম প্রধান এক সাক্ষীর মিথ্যা তথ্য দেয়ার ঘটনায়। বিভিন্ন সূত্র মতে খবর, এফবিআইকে সাহায্য করে নিজেকে বেকসুর মুক্ত করতেই এই মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন সেই সাক্ষী। এদিকে জুলিয়ান অ্যাসেঞ্জকে যদি যুক্তরাষ্ট্রে হস্তান্তর করা হয়, তাহলে তাকে সর্বোচ্চ ১৭৫ বছর জেলে কাটাতে হতে পারে।
উইকিলিকসের সাবেক স্বেচ্ছাসেবক সিগারদার ইনগি থোরডারসন, যেকিনা পরবর্তীতে এফবিআইয়ের সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করেছে, তিনি আইসল্যান্ডের সংবাদপত্র স্টানডিনকে জানান, অ্যাসেঞ্জের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে সে মিথ্যআ বলেছে।
থোরডারসন বলেন, অ্যাসেঞ্জ কখনওই আমাকে কোনও কিছু হ্যাক করতে বলেননি। যদি আগে তিনি দাবি করেছিলেন, অ্যাসেঞ্জ লমেকারদের কম্পিউটার হ্যাক করে তাকে গোপন ফোনালাপ সংগ্রহ করতে বলেছিলেন।
পত্রিকার সূত্র মতে, থোডারসন এখন বলছেন, তিনি তৃতীয় পক্ষের থেকে কিছু ফাইল পেয়েছিলেন, যাতে এমপিদের বিভিন্ন তথ্য ছিল এবং ওই তৃতীয় পক্ষ অ্যাসেঞ্জকে এগুলো দিতে চেয়েছিল, যদিও তিনি জানতেন না ওই ফাইলগুলোতে আদতে কী ছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তার দাবি তিনি কখনও ফাইলগুলোতে কী আছে দেখেন নি। যদিও তৃতীয় পক্ষের দাবি ছিল ফাইলগুলোতে অডিও রেকোর্ডিংস আছে।
এই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির (এনএসএ) সাবেক সদস্য এডওয়ার্ড স্নোডেন টুইটারে বলেন, জুলিয়ান অ্যাসেঞ্জের বিরুদ্ধে মামলা এখানেই শেষ।
অনুসন্ধানী সাংবাদিক গ্লেন গ্রিনওয়াল্ডও বলেন, এই মামলা শেষ হওয়া উচিত এবার।
অ্যাসেঞ্জ গত ২ বছর ব্রিটেনের কারাগারে আছেন। তার বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের। ক্লাসিফাইড ইনফরমেশন ফাঁস করার জন্য ২০১০ সালে তাকে অভিযুক্ত করা হয়, যখন উইকিলিকস নির্যাতনের বিভিন্ন বিশদ তথ্য প্রকাশ করেছিল, যার মধ্য আফগানিস্তান এবং ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর দ্বারা চালানো সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধও ছিল।
যদি তাকে যুক্তরাষ্ট্রে হস্তান্তর করা হয়, তাহলে ১৭৫ বছরের সাজা হতে পারে তার। কিন্তু একজন ব্রিটিশ বিচারক তাকে হস্তান্তরের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধকে আটকে দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, সাত বছর ধরে একুয়েডর দূতাবাসে আশ্রয় নিয়ে থাকা অ্যাসাঞ্জকে ২০১৯ সালে গ্রেপ্তার করে ব্রিটিশ পুলিশ। অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক এই অ্যাসাঞ্জ পেন্টাগন ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লাখ লাখ সামরিক ও কূটনৈতিক গোপন নথি ফাঁস করে দিয়ে বিশ্বজুড়ে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন।
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/১৯৫০
আপনার মতামত জানানঃ