সম্প্রতি সৌদি সরকার এক নির্দেশনায় মসজিদে মাইকের আওয়াজ সীমিতকরণ তথা লাউড স্পিকারের আওয়াজের সর্বোচ্চ সীমা বেঁধে দেয়। দেশটির ইসলাম ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এক ঘোষণায় বলেছে, সব মসজিদের লাউডস্পিকারের আওয়াজ সর্বোচ্চ সীমার এক তৃতীয়াংশে সীমিত রাখতে হবে।
কিন্তু রক্ষণশীল মুসলিম দেশটিতে সরকারের এই পদক্ষেপ অনেকেই ভালোভাবে নেননি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে সমালোচনা। এই নিষেধাজ্ঞার পর রেস্টুরেন্ট ও ক্যাফেতে উচ্চস্বরে গান বাজানো নিষিদ্ধের ডাক দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করা হচ্ছে।
তবে নানা সমালোচনা ও প্রতিবাদ সত্বেও দেশটির সরকার তাদের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন। এবিষয়ে দেশটির ইসলামবিষয়ক মন্ত্রণালয় যুক্তি দেখিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের দাবি, সে দেশের নাগরিকদের অভিযোগের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে।
দেশটির ইসলামবিষয়ক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ আল শেখ জানান, মসজিদের আজানের উচ্চ শব্দ নিয়ে যারা অভিযোগ করেছেন তাদের মধ্যে অনেক বাবা-মা আছেন, লাউডস্পিকারের শব্দে তাদের শিশুদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে বলে জানিয়েছেন তারা।
রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভিডিওতে তিনি বলেন, যারা নামাজ পড়তে চান তাদের ইমামের ডাকের জন্য অপেক্ষা করার প্রয়োজন হয় না।
অনলাইনে এই পদক্ষেপের যারা সমালোচনা করেছেন তাদের ‘দেশের শত্রু’ অভিহিত করে এরা ‘জনমতকে উস্কাতে চায়’ বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মাদ বিন সালমান দেশটিকে আরও উদার ও জনগণের মধ্যে ধর্মীয় বিধিনিষেধ শিথিল করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছেন। উচ্চস্বরে মসজিদের মাইক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা এসব পদক্ষেপের সর্বশেষ সংযোজন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান দেশটিকে একটি উদার, আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছেন। জনজীবনে ধর্মের ভূমিকাও কমিয়ে আনার চেষ্টা করছেন তিনি।
এসব উদ্যোগের অংশ হিসেবে নারীদের গাড়ি চালনার ওপর বিধিনিষেধ তুলে নেওয়াসহ বিভিন্ন সামাজিক বিধিনিষেধ শিথিল করেছেন তিনি।
কিন্তু নিজের এসব উদ্যোগের বিপরীতে দেশটিতে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর খড়্গহস্ত হয়েছেন। দেশটিতে হাজার হাজার সমালোচকে গ্রেপ্তারের পর কারারুদ্ধ করে রেখেছেন তিনি।
সৌদি আরবে ভ্যাকসিন নেওয়া পর্যটকদের কোয়ারেন্টিনের প্রয়োজন নেই
এদিকে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন গ্রহণ করা পর্যটকরা সৌদি আরবে গেলে কোনো কোয়ারেন্টিনের দরকার পড়বে না বলে আজ মঙ্গলবার (১ জুন) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে দেশটির বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।
খালিজ টাইমসের বরাতে জানা যায়, যারা ভ্যাকসিন নিয়েছেন তাদের ওপর থেকে কোয়ারেন্টিনের বিধিনিষেধ তুলে দিয়েছে সৌদি আরবের বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। এতে করে দেশটিতে পৌছানো ভ্যাকসিন প্রাপ্ত পর্যটকদের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।
তবে এর জন্য শর্তও জুড়ে দিয়েছে সৌদি আরব। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোয়ারেন্টিনের বিধিনিষেধ থেকে বাঁচতে পর্যটকদের অবশ্যই ভ্যাকসিন সার্টিফিটেক সঙ্গে রাখতে হবে। শুধুমাত্র ফাইজার-বায়োএনটেক, মডার্না, অক্সফোর্ড-এস্ট্রাজেনকা এবং জনসন এন্ড জনসনের উদ্ভাবিত করোনার ভ্যাকসিন সার্টিফিকেটগুলোই গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ডক্টর মোহাম্মদ আল-আবদ আল-আলি জানান, বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানের টিকাগুলো নিরাপদ প্রমাণিত হয়েছে। যার কারণে শুধু সেসব টিকা নেওয়া পর্যটকদের ছাড় দেওয়া হবে। তবে এর জন্য তাদের সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হবে।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৬২৩
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ