অন্যে যেন বিরক্ত না হয় তাই সৌদি আরবে মসজিদে মাইক ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। আজান ও ইকামাত ছাড়া মসজিদের মাইক ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটির ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি মাইকের আওয়াজ সীমিত করারও নির্দেশ দিয়েছে দেশটি। দুবাই ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম গালফ নিউজের খবর
সরকারের ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রী আবদুল লতিফ আল শেখ এ সংক্রান্ত এ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে সৌদি আরবের সব মসজিদে শুধু আজান ও ইকামতের সময় লাউড স্পিকারের ব্যবহার সীমাবদ্ধ রাখতে এবং এর আওয়াজ এক তৃতীয়াংশে নামিয়ে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নামাজের প্রথম আহ্বান আজান এবং দ্বিতীয় আহ্বানকে ইকামাত বলা হয়। ইকামাতের অর্থ ইমাম সাহেব জামায়াতে নামাজের জন্য কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছেন এবং নামাজ শুরু হতে চলেছে।
সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে একটি হাদিসের বরাত দেওয়া হয়েছে। ওই হাদিসে বলা হয়েছে, ‘তোমাদের সবাই সৃষ্টিকর্তাকে নীরবে ডাকছ। কেউ কাউকে বিরক্ত করা উচিত নয় এবং (সূরা) পাঠ বা নামাজে একজনের কণ্ঠের ওপর কণ্ঠ তোলা উচিত নয়।’
নতুন এই সিদ্ধান্তের পক্ষে শেখ মোহাম্মদ বিন সালেহ আল ওথামীন ও সালেহ আল ফাওযানের মতো সিনিয়র ইসলামিক স্কলারদের ফতোয়াকে ভিত্তি হিসেবে দেখানো হয়েছে। সেখানেও মসজিদে লাউডস্পিকার কেবল আযান ও ইকামতের জন্য ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে।
একই বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মসজিদের মাইকে আযানের মিষ্টি সূর অনেক বিধর্মির কাছেও মধুর। কিন্তু সেই আযান যদি বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতির ঢাকা শহরে ৩০০ মিটার দূরে দূরে স্থাপিত মসজিদ থেকে আধুনিক মাল্টিপল হর্ণ লাগানো কিলোওয়াট ক্ষমতার এম্পলিফায়ার ব্যবহার করে গগণ ফাটানো চিৎকারযোগে পরিবেশিত হয় তবে তা আর মধুর আহ্বান থাকে না, রীতিমত টর্চারে পরিণত হয়। এক মসজিদে ঐ শব্দযন্ত্রণা শুরু হবার সাথে সাথেই শুরু হয়ে যায় নিকটবর্তি সব মসজিদের সন্মিলিত চিৎকার। এতে শব্দ দূষণের পাশাপাশি আমাদের সামাজিক শৃঙ্খলাও বিঘ্নিত হয়। মসজিদের মাইক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।
অতীতের কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমাদের দেশে মসজিদের মাইক ব্যবহার করে নানা দাঙ্গা ফ্যাসাদের সৃষ্টি হয়। গুজব ছড়িয়ে মানুষ হত্যার প্রতিযোগিতায় নামে। মসজিদের মাইকে প্রচারিত যেকোনো বার্তারই সাধারণ মানুষের নিকট ভিন্ন রকম এক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে যা ধর্মীয় আবেগের সাথে সংশ্লিষ্ট।
তাদের মতে, আমাদের দেশেও মসজিদের মাইক ব্যবহার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নিয়ম থাকা দরকার। যেসব মসজিদ ও মাদ্রাসা হতে উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করা হয়—সেসব মসজিদ ও মাদ্রাসার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইন থাকা উচিত।
তারা আরও বলেন, ধর্মকে ব্যবহার করে কেউ যেন কখনো এই বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা. দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করার সাহস না করে তার সবরকম আইনগত ভিত্তি থাকা উচিত।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/ ১৪২০
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ