অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা উৎপাদন স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ম্যারিল্যান্ডের বাল্টিমোরের যে কারখানায় টিকা উৎপাদন করা হচ্ছিল সেখানে কয়েকদিন আগে জনসন অ্যান্ড জনসনের উৎপাদিত দেড় লাখ ডোজ টিকা নষ্ট হওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত নিল মার্কিন হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসেস ডিপার্টমেন্ট। মার্কিন স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বরাতে এ খবর জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো।
উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এমারজেন্ট বায়ো সল্যুশন দুর্ঘটনাবশত দুটি ভ্যাকসিনের উপাদান মিশিয়ে ফেলে। এ ঘটনায় ওষুধ নিয়ন্ত্রকদের ভ্যাকসিন অনুমোদনে বিলম্ব হয়। এরপর কারখানাটিতে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন উৎপাদন স্থগিত করা হলো।
মার্কিন স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জনসন অ্যান্ড জনসনের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে, কারখানায় ভ্যাকসিন উৎপাদন তদারকি করার জন্য একটি নতুন টিম গঠনের জন্য। এমারজেন্টের পক্ষ থেকে এই পরিবর্তনের কথা স্বীকার করা হয়েছে। তারা ভ্যাকসিনের ডোজ নষ্ট হওয়ার পূর্ণাঙ্গ দায় নিয়েছে। অন্যদিকে অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানিয়েছে, বিকল্প উৎপাদন কারখানা খুঁজে পেতে বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করবে তারা।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রে জনসন এন্ড জনসনের তৈরি প্রায় দেড় কোটি ডোজ করোনার টিকা নষ্ট যায়। প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছিলো, কারখানার ভুলের কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। করোনার টিকা উৎপাদনে গতিশীলতা আনতে নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া জনসন এন্ড জনসনের জন্য এটি বড় এক ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে।
ফার্মাসিউটিক্যাল জগতের জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান জনসন এন্ড জনসন ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরে ইমার্জেন্ট বায়োসলিউশন পরিচালিত একটি কারখানায় উৎপাদিত করোনা টিকাগুলো রাখা ছিল। পরে তারা বুঝতে পারে, যথাযথ মান নিশ্চিত করে সেসব টিকা সংরক্ষণ করা হয়নি। যে কারণে টিকাগুলো নষ্ট হয়ে গেছে।
প্রতিষ্ঠানটি অবশ্য জানিয়েছে, নিজেদের উৎপাদিত টিকায় যথাযথ মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই তাদের শীর্ষ অগ্রাধিকার।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, একটি কারখানার ভুলে জনসন এন্ড জনসনের টিকা নষ্ট হওয়ার পর এই কোম্পানির তৈরি অন্য টিকার মানেও ভবিষ্যতে প্রভাব পড়তে পারে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনও (এফডিএ) এ বিষয়ে তদন্ত করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এএফডিএ’র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সংস্থাটি এ বিষয়ে অবগত বলে এএফপিকে জানানো হয়।
জনসন অ্যান্ড জনসন জানিয়েছে, কোভিড-১৯ টিকা উৎপাদনে প্রযোজনীয় তত্ত্বাবধান, দিকনির্দেশনা প্রদান এবং সার্বিক সহায়তা দিতে সাইটগুলোতে আরও বেশিসংখ্যক বিশেষজ্ঞ পাঠাচ্ছে তারা। এর ফলে এপ্রিল মাসে আরও ২ কোটি ৪০ লাখ টিকা সরবরাহ করতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি। জনসন এন্ড জনসন বলছে, ‘২০২১ সালের শেষ নাগাদ আমরা ১০০ কোটি ডোজ করোনা টিকা সরবরাহ করতে পারব।’
এএফপি জানিয়েছে, জনসন এন্ড জনসনের করোনা টিকা উৎপাদন ও সংরক্ষণের জন্য বাল্টিমোরের ইমার্জেন্ট বায়োসলিউশনের কারখানাটি এখনও যুক্তরাষ্ট্রের যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি পায়নি। তবে মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, অনুমোদন না থাকলেও কারখানাটিতে নিকট ভবিষ্যতে কোটি কোটি ডোজ করোনা টিকা উৎপাদনের কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনসন অ্যান্ড জনসনের একটি ডোজই যথেষ্ট। মডার্না ও ফাইজারের টিকার মতো এটি ঠান্ডা বা হিমায়িত স্থানে সংরক্ষণেরও প্রয়োজন পড়ে না।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১২৩৭
state watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগীতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগীতার অনুরোধ জানাচ্ছি।
[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ