যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের যেকোনো দেশ থেকে বাংলাদেশে আসা যাত্রীদের ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সরকার নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানে বা হোটেলে কোয়ারেন্টিনে থাকার খরচও তাদের বহন করতে হবে। আগামীকাল বুধবার(৩১ মার্চ) থেকেই এ নিয়ম কার্যকর হবে বলে আজ মঙ্গলবার(৩০ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) জানিয়েছে, আগামীকাল ৩১ মার্চ থেকে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত এই ঘোষণা কার্যকর থাকবে।
দেশে ও বর্হিবিশ্বে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
এসব দেশ থেকে আসা যাত্রীদের করোনাভাইরাসের টিকা নেওয়া থাকলেও বাধ্যতামূলকভাবে কোয়ারেন্টিনের এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে।
সংস্থাটির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোয়ারেন্টিন শেষে পিসিআর পরীক্ষার যেসব যাত্রীর করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট আসবে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় দেশগুলো ছাড়া অন্য যেকোনো দেশ থেকে বাংলাদেশে আসলে সেখানে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর করোনার কোনো উপসর্গ দেখা না গেলে কঠোরভাবে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। যদি কারো শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা যায় তাহলে তাদেরকে নিজ খরচে সরকার অনুমোদিত হোটেল বা সরকারি স্থাপনায় বাধ্যতামূলকভাবে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।’
করোনার ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও সব যাত্রীকে বাংলাদেশে আসার আগে করোনার পিসিআর পরীক্ষায় নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিতে হবে এবং তা বিমানবন্দরে দেখাতে হবে।
ফ্লাইট ছাড়ার ৭২ ঘণ্টা আগে পিসিআর পরীক্ষা করাতে হবে বলেও ঘোষণায় উল্লেখ করা হয়েছে।
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করার পর নতুন এই নিয়ম ঠিক করে দিল বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবার উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ায় সোমবার সব ধরনের জনসমাগম সীমিত করাসহ ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করে সরকার।
সেখানে বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক (হোটেলে নিজ খরচে) কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করার কথা বলা হয়।
এতদিন লন্ডনফেরত যাত্রীদের জন্য সাত দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক ছিল। বাকিদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকলেই চলত।
এদিকে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়ছেই। একদিনে করোনাভাইরাসের রেকর্ড সংক্রমণ হয়েছে। রোববার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত পাঁচ হাজার ১৮১ জন। গত বছরের ২ জুলাই করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছিলেন চার হাজার ১৯ জন। এরপর এটিই সর্বোচ্চ। এছাড়া এই ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয় ৪৫ জনের।
এদিকে আজ মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ট্রানজিট হয়ে দুবাই ও কাতারের ফ্লাইটে আসা লন্ডনফেরত ১৫ যাত্রীকে কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে জন্য যাত্রীদের আশকোনা হজক্যাম্পে রাখার ব্যবস্থা করা হয়।
তবে শাহজালাল বিমানবন্দরে এখন পর্যন্ত কেবল ইউরোপ থেকে আসা যাত্রীদেরই কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হচ্ছে। এদিকে বেনাপোলে স্থলবন্দরে ভারত ফেরত যাত্রীদের রাখার জায়গা নির্ধারিত না হওয়ায় চালু হয়নি কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা।
যুক্তরাজ্যে নতুন স্ট্রেইনের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির পর চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের দেশগুলো থেকে ফেরত ব্যক্তিদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে থাকার সরকার নির্দেশনা দিয়েছিল। বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনের সব খরচ যুক্তরাজ্যফেরত যাত্রীদের নিজ দায়িত্বে বহন করার কথাও বলা হয়েছিল।কিন্তু কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন অব্যবস্থাপনায় তা অনেকটা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছিল।
দেশের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কোভিড ভাইরাসের আমদানি রোধ করতে হলে অতিসত্বর যুক্তরাজ্যের সাথে বিমান চলাচলে স্থগিত ঘোষণা করতে হবে। সরকার যদি যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ফ্লাইট বন্ধে কোনো সমস্যা মনে করে তবে যুক্তরাজ্য থেকে আগত যাত্রীদের সরকারি ব্যবস্থাপনায় বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে রাখা উচিত বলে মনে করেন তারা। এমনকি যাদের নেগেটিভ সনদ থাকবে তাদেরও কোয়ারেন্টাইনে পাঠাতে হবে। কারণ সফরের সময় তারা ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হতে পারেন বলে জানান।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৬১০
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগীতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগীতার অনুরোধ জানাচ্ছি।
[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ