জনগণের দ্রুত ও ভোগান্তিমুক্ত ন্যায়বিচারের অধিকার নিশ্চিত করতে বিচারক ও আইনজীবীদের প্রতি বুধবার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘দ্রুত, অল্প খরচে ও ভোগান্তিমুক্ত বিচার পাওয়া জনগণের অধিকার। এটি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস বাড়িয়ে তুলতে পারে। যদিও বিচার বিভাগের প্রতি আমাদের আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে, (আমরা অনুরোধ করব) এ বিষয়ে বিশেষ নজর দিন।’
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকায় নবনির্মিত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত আদালতে প্রায় ৩৭ লাখ ৯৪ হাজার ৯০৮টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
তিনি বিচারক এবং আইনজীবীদের এ সব মামলার দীর্ঘসূত্রিতা কমিয়ে দ্রুততম সময়ে রায় দেয়ার উপায় খুঁজতে অনুরোধ করেন।
‘এত বেশি মামলা যেন না পড়ে থাকে। একটু আন্তরিক হোন এবং এই বিচারগুলো সম্পন্ন করার পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কিছু করার প্রয়োজন হলে তা করা হবে, কিন্তু এতগুলো মামলা এভাবে পড়ে থাকুক তা আমরা চাই না,’ বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সর্বদা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ‘যখনই আমরা ক্ষমতায় এসেছি, আমরা প্রথমে এটি নিশ্চিত করেছি, সবার জন্য ন্যায়বিচারের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমরা বিশেষ মনোযোগ দিয়েছি। আমরা সেভাবেই কাজ করি।’
১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হত্যার পর তিনি এবং তার ছোট বোনের বিচার চাওয়ার অধিকার ছিল না জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ন্যায়বিচারের অনুপস্থিতিতে’ তাদের মতো কেউ যেন ভোগান্তিতে না পড়েন।
নারী ও শিশু ধর্ষণ একটি জঘন্য কাজ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, অপরাধীদের কঠোর শাস্তি প্রদান এবং এই অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার ইতোমধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ২০২০ (সংশোধন) অধ্যাদেশ জারি করেছে। ইতোমধ্যে মন্ত্রিসভায় এটি পাস হয়েছে এবং সংসদের পরবর্তী অধিবেশনে এটি তোলা হবে এবং আইন হিসেবে পাস করা হবে।
মাদকের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, এটি সমাজে একটি বড় সমস্যা, কারণ এই ব্যাধি একটি পরিবারকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়। সরকার মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই মাদকের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত শাস্তি দেয়া হোক যাতে সমাজ ও পরিবারগুলো মাদকের থাবা থেকে মুক্তি পেতে পারে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন দেশের প্রধান তিনটি অঙ্গ -আইনসভা, বিচার বিভাগ ও নির্বাহী- একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করেন তখন দেশ সঠিকভাবে চলতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সংবিধানে সেই নির্দেশটি খুব যথাযথভাবে দেয়া হয়েছে। ১৯৭২সালের সংবিধানে বিচার বিভাগের স্বাধীনতাও খুব ভালোভাবে বলা হয়েছিল।’
তিনি কেরানীগঞ্জের কারাগারের মতো সকল কারাগারে ভার্চুয়াল আদালত চালুর জন্য বিচার বিভাগকে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বিচার বিভাগের উন্নয়নে সরকারের নেয়া বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. গোলাম সরোয়ার প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সূত্র : ইউএনবি
আপনার মতামত জানানঃ