ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে ঢাকায় বায়তুল মোকাররমে সংঘর্ষের প্রতিবাদে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে হেফাজতের উদ্যোগে ব্যাপক বিক্ষোভ ও ভাঙচুর হয়েছে। বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আরও কয়েজন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে।
আজ বিকেল ৫টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ি সূত্রে চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। হাটহাজারী থেকে ৪ জন গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে চমেক হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। তাদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। তবে হেফাজত মৃত ব্যক্তিদের তাদের কর্মী বলে প্রাথমিকভাবে দাবী করেছেন। নিহতরা হলেন- হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষার্থী রবিউল, মেহরাজ, জামিল ও আব্দুল্লাহ নামের স্থানীয় একজন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, হেফাজত অনুসারী মুসল্লিরা মিছিল নিয়ে হাটহাজারী থানার দিকে এগুতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় হেফাজতের বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ প্রথমে টিয়ারশেল ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালায়। এতেও থামানো না গেলে এক পর্যায়ে রাবার বুলেট ছুড়তে শুরু করে পুলিশ। এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এতে সাত মাদ্রাসা শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে।
হাটাহাজারী থানা সূত্রে জানা যায়, সংঘর্ষের সময় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা হাটহাজারী থানায় ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। বর্তমানে তারা চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছে। আশেপাশের দোকানপাট বন্ধ আছে।
হাটহাজারি থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, হেফাজত অনুসারীরা মিছিল করার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে তারা হাটহাজারী থানায় প্রবেশ করে ভাঙচুর চালায়। সংঘর্ষ চলাকালে রাস্তায় পুলিশ অবস্থান নিলে হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে আগত অনুসারীদের নিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে তারা।
এদিকে হেফাজতের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইদ্রিস বলেন, পুলিশের গুলিতে কমপক্ষে সাতজন ছাত্র গুলিবিদ্ধ হয়েছে। কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বিনা উস্কানিতে পুলিশ ছাত্রদের মিছিলে গুলি চালায়।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, হাটহাজারীতে হেফাজত আমাদের সরকারি অফিসগুলোতে তাণ্ডব চালাচ্ছে। ভূমি অফিসে আগুন দিয়েছে। থানা ভাঙচুর করছে। ডাক বাংলোতে ভাঙচুর করছে।
দুপুর আড়াইটার দিকে হাটহাজারীতে থানা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাংলো ও এসিল্যান্ডের কার্যালয়ে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে মোদীর সফরের প্রতিবাদে রাজধানী ঢাকার বায়তুল মোকাররম এলাকায় শুক্রবারের জুমার নামাজের পর বিক্ষোভ হয়। ওই এলাকায় কয়েক ঘন্টা ধরে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ চলে – যাতে সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগীতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগীতার অনুরোধ জানাচ্ছি।
[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ