ফ্রান্সের পর এবার ইংল্যান্ডের ইয়র্কশায়ারে একটি স্কুলের ক্লাসে বাচ্চাদেরকে হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)-এর কার্টুন প্রদর্শন করে। এতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) স্কুলের বাইরে কয়েকশ সাধারণ মানুষ, অভিভাবক ও শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে ওই শিক্ষককে বরখাস্ত করার দাবী জানিয়েছেন।
২৯ বছর বয়সী ধর্মীয় স্টাডিজের এই শিক্ষক গত সোমবার ক্লাসে ছাত্রদের কাছে চিত্রটি দেখিয়েছিলেন বলে জানা যায়। এ ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে স্কুলে অভিভাবকদের মাঝে উত্তেজনা দেখা দেয় এবং তারা জড়ো হয়ে প্রতিবাদ করতে থাকেন। বৃহস্পতিবার রাতে, অনলাইনে তার নাম প্রকাশিত হলে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ তাকে সরিয়ে নেয়।
ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ার পুলিশের একজন মুখপাত্র বলেছেন, বিক্ষোভের সময় স্কুলের কাছাকাছি রাস্তাটি স্বল্প সময়ের জন্য বন্ধ ছিল। এই ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
এদিকে একজন বিক্ষোভকারী স্থানীয় বাসিন্দা বলেছেন, এই কার্টুন সমগ্র মুসলিম সম্প্রদায়কে অপমানিত করেছে। তিনি প্রধান শিক্ষককে মৌখিক ভাবে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান।
অভিবাবকদের পাশাপাশি ছাত্ররাও এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। চার সন্তানের জনক স্কুলের ওই ধর্ম শিক্ষকের নিরাপত্তার জন্য তার বাসা থেকে সরিয়ে নিয়েছে পুলিশ।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক গ্যারি কিবল ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন এবং তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ব্যাটলি ব্যাকরণ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গ্যারি কিবলে ফরাসি ব্যঙ্গাত্মক পত্রিকা চার্লি হেবদো থেকে নেয়া কার্টুনগুলো ব্যবহারের জন্য অভিভাবকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে একটি ইমেইল করেছিলেন। ইমেলটিতে কিবলে বলেন, তদন্তের পরে স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, পাঠটিতে ব্যবহৃত উপকরণটি সম্পূর্ণ অনুপযুক্ত ছিল এবং আমাদের স্কুল সম্প্রদায়ের সদস্যদের কাছে বড় ধরনের অপরাধ করার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত এবং সম্পূর্ণ ক্ষমাপ্রার্থী।
অন্যদিকে এডুকেশন সেক্রেটারি গেবিন উইলিয়ামসন, শিক্ষককে হুমকি ও ভয় দেখানোর নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, কোন সমস্যা উদ্ভূত হলে আমরা অভিভাবক এবং বিদ্যালয়ের মধ্যে সংলাপকে উৎসাহিত করি। তবে, হুমকি প্রদান এবং করোনাভাইরাস বিধিনিষেধের লঙ্ঘন সহ আমরা যে প্রতিবাদের প্রকৃতি দেখেছি তা সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য এবং অবশ্যই এর অবসান ঘটাতে হবে।
এর আগে গত বছর মহানবী হযরত মোহাম্মদ(সাঃ)-র কার্টুন দেখিয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ব্যাখ্যা করেছিলেন প্যারিসের স্কুল শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটি। সে জন্য তাকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। ক্লাসে মত প্রকাশের স্বাধীনতা শেখাতে ইসলামের নবীর কার্টুন দেখানোর পর থেকে হুমকির ভেতরে ছিলেন প্যারিসের উপকণ্ঠে এক স্কুলের ইতিহাস ও ভূগোলের শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটি।
তারও আগে ফ্রান্সের শার্লি এবদো ম্যাগাজিন বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ(সা.)কে নিয়ে কার্টুন প্রকাশ করায় বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছিল।
২০০৫ সালে ডেনমার্কের একটি সাময়িকী প্রথমবার উস্কানিমূলকভাবে নবীকে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করে। সাময়িকীটির বিরুদ্ধে সে সময় বিশ্বজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ হয়েছিল।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৩২১
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগীতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগীতার অনুরোধ জানাচ্ছি।
[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ