করোনার ৩০০ কোটি টিকা তৈরির সক্ষমতা আগামী বছর অর্জন করতে পারে জার্মান প্রতিষ্ঠান বায়োনটেক৷ নতুন ধরনের ভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য তৃতীয় ডোজ নিয়েও পরীক্ষা চালাচ্ছে বায়োনটেক৷ এবিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী উগুর শাহিন ব্লুমবার্গ বলেন, চাহিদা এবং অন্যান্য বিষয় বিবেচনায় টিকা উৎপাদনের ক্ষমতা বাড়াতে পারে প্রতিষ্ঠান৷ এক্ষেত্রে টিকার আরেও একটি ডোজের প্রয়োজন আছে কিনা তাও যাচাই করছে বায়োনটেক৷
বায়োনটেক ও ফাইজার গতমাস থেকেই করোনা টিকার তৃতীয় একটি ডোজের পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাচ্ছে। যা ভাইরাসটির নতুন রূপ গুলির প্রতিরোধে দরকার হতে পারে৷ প্রচলিত দুই ডোজ এক্ষেত্রে কার্যকর না হলে তৃতীয় ডোজ দেওয়া হতে পারে৷
করোনা প্রতিরোধে ভূমিকায় বায়োনটেকের প্রধান নির্বাহী উগুর জাহিন জানিয়েছেন, এই টিকার প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্তত এক বছর স্থায়ী হবে৷ যৌথ বিবৃতিতে ফাইজারের চেয়ারম্যান বলেছেন, “টিকার তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার প্রাথমিক ফলে আমরা প্রমাণ পেয়েছি যে এটি কোভিড-১৯ প্রতিরোধ করতে পারে৷”
প্রসঙ্গত, জুলাইয়ের শেষ থেকে শুরু হওয়া তৃতীয় পর্যায়ের এ ট্রায়ালে ৪৩ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ অংশ নিয়েছেন৷ মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা এফডিএর অনুমতির জন্য আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠান দু’টি৷
জার্মানিতে করোনা ভাইরাসের টিকা আবিষ্কারে মুসলিম দম্পতি ১৬ হাজার কোটি টাকার চুক্তি ফাইজার ও বায়োনটেক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে টিকা সরবরাহে এরই মধ্যে ১৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থের চুক্তি সই করেছে৷ চুক্তি সই হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, ক্যানাডা, জাপানের সঙ্গেও৷
জানা গিয়েছে, ২০২০ সালেই প্রতিষ্ঠান দু’টি পাঁচ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদন করবে। ২০২১ সালে আরও ১৩০ কোটি ভ্যাকসিন উৎপাদনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ফিজার৷
এবিষয়ে শাহিন বললেন, “আমরা এখন বুঝতে পারছি যে, বিবর্তনের কারণে ভাইরাসটির নতুন যেসব রূপ তৈরি হচ্ছে। সে গুলির জৈবিক ও চিকিৎসা সংক্রান্ত বৈশিষ্ট্য আলাদা৷” উল্লেখ্য, গত জানুয়ারি মাসে ফাইজার জানিয়েছিল চলতি বছরের শেষ নাগাদ ২০০ কোটি করোনা টিকা তৈরি করবে প্রতিষ্ঠানটি৷
এদিকে, জার্মানিতে করোনার বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে শনিবার (১৩মার্চ) বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করেছেন কয়েক হাজার মানুষ৷ ড্রেসডেনে পুলিশের উপর হামলা হয়েছে৷ আরেকটি শহরে সাংবাদিকদের উপরও আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে৷
জার্মানির পূর্ব অঞ্চলের শহর ড্রেসডেনে ১২ পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে৷ বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ডানপন্থি ক্যোয়ারডেনকেন এর সদস্যরাও ছিলেন, যারা করোনা আছে এমনটাই অস্বীকার করেন৷ সেই সঙ্গে টিকা বিরোধী হিসেবেও পরিচিত তারা৷
জার্মানির সরকার অন্তত ২৮ মার্চ পর্যন্ত করোনা বিধিনিষেধের সময়সীমা বর্ধিত করেছে৷ রেস্টুরেন্ট, বার, খেলাধুলা ও বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকবে নভেম্বরের শুরু পর্যন্ত৷ তবে স্থানীয় সংক্রমণ হারের উপর নির্ভর করে দোকান খোলা যাবে৷
জার্মানিতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত আবারো বাড়তে শুরু করেছে৷ শনিবার প্রতি লাখ জনগোষ্ঠীর মধ্যে সাপ্তাহিক আক্রান্তের হার ছিল ৭৬ দশমিক এক জন, যা একদিন আগে ছিল ৭২ দশমিক চার৷ জার্মানির সরকারের স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থা রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট এর আশঙ্কা এই হার আরো দ্রুত বাড়বে৷ মধ্য এপ্রিল নাগাদ যা ৩৫০ জনে পৌঁছাতে পারে৷
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/২০৫৯
আপনার মতামত জানানঃ