মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি জনসন অ্যান্ড জনসনের তৈরি করোনা টিকার জরুরি ব্যবহার অনুমোদন করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, শুক্রবার (১২ মার্চ) ডব্লিউএইচও এই অনুমোদন দেওয়ার পর ‘কোভ্যাক্স’ প্রকল্পের আওতায় জনসনের টিকা নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে পৌঁছে যাবে। জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার এক ডোজই করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
গত বছরের শেষ এবং চলতি বছরের গোড়া থেকে বিশ্বের উন্নত দেশগুলো গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে। তবে পর্যাপ্ত টিকার ডোজের অভাবে অধিকাংশ উন্নয়নশীল দেশ এখনও এই কর্মসূচি শুরু করতে পারেনি। কয়েকটি কারণে এই দেশগুলোর জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে জনসন অ্যান্ড জনসনের করোনা টিকা। প্রথমত, এই টিকা এক ডোজের। দ্বিতীয়ত, বাজারে অন্যান্য টিকার তুলনায় এই টিকার করোনা প্রতিরোধী ক্ষমতা কোনও অংশেই কম নয় এবং তৃতীয়ত, সাধারণ রেফিজারেটরে তিন মাস পর্যন্ত জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার ডোজ সংরক্ষণ সম্ভব।
ডব্লিউএইচও প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার অনুমোদন নিয়ে শুক্রবার বলেন, একটি নতুন টিকা সহজলভ্য হচ্ছে। পর্যাপ্ত টিকার ডোজের অভাবে যেসব দেশ এখনও গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করতে পারেনি তাদের জন্য এটি একটি সুখবর। আমাদের প্রত্যাশা, এই টিকার মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টিকার ডোজ বিষয়ক যে অসাম্য তৈরি হয়েছে, তার সমাধান হবে। তিন জানান, এই টিকার ব্যবহার নির্দেশিকা তৈরি করতে আগামী সপ্তাহে একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করবে ডব্লিউএইচও।
ইতোমধ্যে এই ভ্যাকসিনের ৫০ কোটি ডোজ চেয়েছে কোভ্যাক্স। তবে এই মুহূর্তে জনসনের উৎপাদনজনিত সমস্যা রয়েছে এবং ২০ কোটি ডোজ সরবরাহের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে তাদের চুক্তি রয়েছে। তবে আশা করা হচ্ছে, প্রতিদ্বন্দ্বী ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান মের্কের সঙ্গে চুক্তি করে উৎপাদনে গতি আনবে জনসন।
এর আগে, ইউরোপীয় ওষুধ সংস্থার (ইএমএ) সুপারিশের পর বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) অনুষ্ঠানিকভাবে জনসনের ভ্যাকসিন অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। জনসন অ্যান্ড জনসনের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে ফ্রান্স। ফ্রান্সের স্বাস্থ্য খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা এইচএএস গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানায়, ফরাসি টিকাদান কর্মসূচির অধীনে ১৮ বছর বয়স থেকে তার বেশি বয়সীদের জনসনের টিকা দেওয়া যাবে। ৬৫ বছর বয়সী ব্যক্তি, এর চেয়েও বয়স্ক এবং অসুস্থ ব্যক্তিরাও এ টিকা নিতে পারবেন।
এইচএএস জানায়, টিকাটি রোগীদের জন্য কার্যকর ও সহনশীল। করোনা প্রতিরোধে এ নিয়ে চারটি টিকার অনুমোদন দিল ফ্রান্সের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এর আগে ফাইজার-বায়োএনটেক, মডার্না এবং অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার অনুমোদন দেয় এইচএএস। এ টিকাগুলো দুই ডোজ করে দিতে হলেও জনসনের টিকাটি এক ডোজের। ওয়ার্ল্ডোমিটারস ডট ইনফোর তথ্য অনুসারে, ফ্রান্সে এখন পর্যন্ত ৪০ লাখ ১৫ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মৃত মানুষের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৯০ হাজার।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৩৫১
আপনার মতামত জানানঃ