
অন্তর্বর্তী সরকারের এজেন্ডার তালিকাটা এরকম: বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন। এর মধ্যে সরকারের অন্যতম প্রধান ‘স্টেকহোল্ডার’ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অবস্থান আরও স্পষ্ট। তারা বলছে, জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যার দায়ে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের অভিযুক্ত নেতাকর্মী এবং দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার ও মৌলিক সংস্কারের আগে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। তাদের কথার অন্তর্নিহিত অর্থ হচ্ছে: বিচার ও সংস্কারের আগে নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।
প্রশ্ন উঠতে পারে, এনসিপি যা চাইবে, তা-ই হবে? এই প্রশ্নের উত্তর আপনিও কমবেশি জানেন। প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের পরে মুহাম্মদ ইউনূস একাধিকবার বলেছেন যে, ছাত্ররা তাদের প্রাথমিক নিয়োগকর্তা। স্বাভাবিক হিসাব বা কাণ্ডজ্ঞান অনুযায়ী, যিনি নিয়োগ করেন তিনি বহিষ্কারও করতে পারেন। যেমন আপনি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন, সেই প্রতিষ্ঠানের মালিক বা আপনার নিয়োগকর্তা চাইলে আপনার চাকরিটা চলে যাবে। আর প্রধান উপদেষ্টা যে ছাত্রদের কথা বলছেন, তারা জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এনসিপি তাদেরই দল। অতএব তারা যদি চান, তাহলে সরকারের পক্ষে তার বাইরে যাওয়া কঠিন।
প্রধান উপদেষ্টা কথাটি যদি প্রতীকী অর্থে বা ছাত্রদের গুরুত্ব বোঝাতে গিয়েও বলে থাকেন, তারপরেও এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর এই দল এবং দলের নেতাদের প্রভাব অনেক। এমনকি তাদের দলের নামের সঙ্গেও মুহাম্মদ ইউনূসের সম্ভাব্য রাজনৈতিক দলের নামের মিল রয়েছে। বিগত এক-এগারোর সরকারের সময়ে তিনি যে দলটি গঠন করতে চেয়েছিলেন, তার নাম ছিল ‘নাগরিক শক্তি’।
যখন থেকে এটি জানা গেলো যে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা রাজনৈতিক দল গঠন করতে যাচ্ছেন, তখন এ বিষয়ে কারো কারো ধারণা ছিল যে, এই দলটি সরকার সমর্থিত বা সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট হবে। এমনকি তাদের দলের নামের সঙ্গে ‘নাগরিক’ বা ‘শক্তি’ শব্দটিও হয়তো থাকবে। পরে সত্যি সত্যিই দলের নাম দেওয়া হলো ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’। সবশেষ ১৬ মে এই দলের যে যুব সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে, তার নাম দেয়া হয়েছে ‘জাতীয় যুবশক্তি’। অর্থাৎ মূল দলে ‘নাগরিক’ এবং দলের যুব সংগঠনে ‘শক্তি’ শব্দটিকে তারা রেখেছে।
এনসিপি যা চাইবে, সরকারের পক্ষে তার বাইরে গিয়ে খুব বেশি কিছু করা কঠিন হবে। যেমন আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে কি না সেই সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগকেই নিতে হবে—প্রধান উপদেষ্টার এমন মন্তব্যের পরেও এনসিপির আন্দোলনের মুখে ঠিকই সরকার ট্রাইব্যুনালে বিচার সম্পন্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও তার সকল অঙ্গ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে।
অনেকের ধারণা ছিল বা বিএনপিরও দাবি ছিল যে, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম বা দল হিসেবে তাকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তটি হয়ত ট্রাইব্যুনালের কোনো রায় বা পর্যবেক্ষণের আলোকে গৃহীত হবে। কিন্তু দেখা গেল, প্রধানত এনসিপির চাপেই সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নির্বাহী আদেশে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হলো। সুতরাং ভবিষ্যতে আরও বিভিন্ন ইস্যুতে যেমন রাষ্ট্রপতির অপসারণ বা পদত্যাগ, এনসিপি যেভাবে চায় সেভাবে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র তৈরি এবং সংবিধান বাতিল, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন, একইসঙ্গে গণপরিষদ ও আইনসভার নির্বাচন ইত্যাদি ইস্যুতে যদি এনসিপি আন্দোলন গড়ে তোলে, তখন সরকারের প্রতিক্রিয়া কী হবে, তা ধারণা করা যায়।
এরকম বাস্তবতায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সত্যিই প্রধান উপদেষ্টার প্রতিশ্রুত ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে হবে কি না— তা নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তো বটেই, সাধারণ মানুষের মনেও সংশয় রয়েছে। যদিও গত বৃহস্পতিবার (১৫ মে) লন্ডনের প্রভাবশালী পত্রিকা ‘দ্য ইকোনমিস্টে’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সব ঠিকঠাক চললে ডিসেম্বরেই নির্বাচন হতে পারে। ইউনূস আশ্বাস দিয়েছেন, ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে অবশ্যই নির্বাচন হবে—তবে তিনি নিজে তাতে অংশ নেবেন না।
অবশ্য এর কয়েক দিন আগে গত ১১ মে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক আলোচনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম স্পষ্ট করেই বলেছেন যে, ‘নির্বাচনে যাওয়ার আগে মৌলিক সংস্কারের যে রূপরেখা সেটি আমাদের সামনে স্পষ্ট করতে হবে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের মাধ্যমে বিচার কার্যক্রমে আমরা একটা অংশ এগিয়ে গিয়েছি। বিচারের রোডম্যাপটা যদি আমাদের সামনে সুস্পষ্ট হয় যে এটা কতদিনের মধ্যে সম্পন্ন হবে, সেটা জনগণের মধ্যে আস্থা তৈরি করবে। আর একই সাথে সংস্কারে ঐকমত্যে আসলে নির্বাচনের জন্য আর কারো কোনো আপত্তি থাকার কথা না।’
স্মরণ করা যেতে পারে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ‘উন্নয়ন’ শব্দটিকে গণতন্ত্রের বিকল্প বা উন্নয়ন ও গণতন্ত্রকে মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়েছিল। বিশেষ করে যখন নির্বাচনি ব্যবস্থাটি ধ্বংস করে দিয়ে বিতর্কিত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকল এবং জনগণ যখন তার ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার সমালোচনা শুরু করলো, তখন তাদেরকে বলা হলো যে, আগে উন্নয়ন তারপরে গণতন্ত্র।
অন্তর্বর্তী সরকারের গত ৯ মাসে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত শব্দ হচ্ছে ‘সংস্কার’। রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে সংস্কারের জন্য যে ১১টি কমিশন গঠন করা হয়েছিল, তারা এরইমধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। কিন্তু বিএনপিসহ আরও কিছু দল যখন দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে, তখন বিগত সরকারের মতোই সংস্কারকে নির্বাচনের বিকল্প বা সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
আর এই বিষয়টি নিয়ে সবচেয়ে বেশি চিন্তিত বোধ হয় বিএনপি। কেননা আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে এ মুহূর্তে তারাই সর্ববৃহৎ দল এবং তারা বিশ্বাস করে নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়ী হবে। কিন্তু যত বিলম্ব হবে, নির্বাচনের মাঠ তাদের জন্য তত আঁকাবাঁকা হবে। তৃণমূলে স্বার্থের সংঘাত বাড়বে। দলের নেতাকর্মীদের চাঁদাবাজি ও দখলবাজির কারণে তাদের জনপ্রিয়তা কমবে। সেই শূন্যস্থান পূরণ করবে হয় এনসিপি না হয় জামায়াত অথবা অন্য কোনো ইসলামিক দল, যেমন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ—এরকম একটা শঙ্কা হয়তো বিএনপির ভেতরে আছে। যে কারণে বিচার ও সংস্কারের কথা বলে নির্বাচন বিলম্বিত করার বিষয়টি নিয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বও চিন্তিত।
গত ১৯ মার্চ রাজধানীর লেডিস ক্লাবে এক ইফতার মাহফিলে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, বিএনপিসহ প্রতিটি রাজনৈতিক দল মনে করে, সংস্কার ও নির্বাচন উভয়টি প্রয়োজন। সুতরাং সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করার কোনোই প্রয়োজন নেই।
এর দুদিন পরে ২২ মার্চ রাজধানীর মালিবাগে একটি রেস্তোরাঁয় ১২ দলীয় জোটের ইফতার মাহফিলে তারেক রহমান বলেন, সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করানো হচ্ছে। অথচ বিএনপি দুই থেকে আড়াই বছর আগেই সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে। তখনই এ ব্যবস্থার পরিবর্তনের কথা বলেছে।
এভাবে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, মির্জা আব্বাসসহ আরও অনেক নেতাই সংস্কারকে নির্বাচনের বিকল্প বা সংস্কারের আগে নির্বাচন হবে না—এই ধরনের কথার সমালোচনা করেছেন।
বিচার একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে যেসব মামলা হয়েছে তার তদন্ত, প্রসিকিউশনে প্রতিবেদন জমা, বিচার শুরু, সাক্ষ্য গ্রহণ ইত্যাদি বিষয়ে তাড়াহুড়ার সুযোগ নেই। তাছাড়া এই বিচার কার্যক্রমে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক বিশ্বের নজর থাকবে। সুতরাং খুব সাবধানে এই বিচারকার্য সম্পন্ন করতে হবে। কিন্তু এনসিপি বা অন্য কোনো দল যদি মনে করে বা দাবি তোলে যে, বিচারকার্য শেষ হওয়ার পরে নির্বাচন হতে হবে, তাহলে নির্বাচন দীর্ঘ সময়ের জন্য ঝুলে যাবে। এখানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটা ঐক্য থাকতে হবে যে, সরকারে যেই আসুক, তারা বিচারিক প্রক্রিয়াটি অব্যাহত রাখবে। কিন্তু এনসিপি হয়তো অন্য কোনো দল, বিশেষ করে বিএনপির ওপর এই আস্থা রাখতে পারছে না বা তারা বিশ্বাস করতে পারছে না যে, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আদৌ এই বিচারিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখবে কি না বা রাখতে পারবে কি না। ফলে এই ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে আনতে হবে এবং জুলাই অভ্যুত্থানের যে সনদ তৈরি হওয়ার কথা, সেখানে বিষয়গুলো খুব স্পষ্ট থাকতে হবে।
দ্বিতীয়ত সংস্কার। সংস্কার বলতে এনসিপি যা বোঝে বা বুঝাতে চায়, বিএনপির অবস্থান সেরকম নয়। বিএনপি সংস্কার বলতে তার ৩১ দফাকে বোঝে। আবার জামায়াত ও অন্যান্য দলও সংস্কার বলতে যা বোঝে, সাধারণ মানুষের ভাবনাটি হয়তো সেরকম নয়। সাধারণ মানুষ যদি দেখতো যে, গত ৯ মাসে অন্তত তাদের জীবনের নিরাপত্তাহীনতার বোধ কমেছে; রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রিত হয়েছে; সরকারি অফিসগুলোয় সেবা নিতে গিয়ে এখন আর আগের মতো ঘুষ দিতে হয় না বা হয়রানির শিকার হতে হয় না; বাজারে গিয়ে তার মন খারাপ হয় না; তার জীবন-জীবিকার অনিশ্চয়তা আগের চেয়ে কম; শিল্প-কারখানায় উৎপাদন বেড়েছে এবং কর্মসংস্থান বেড়েছে—তাহলে মানুষ খুশি হতো এবং তার কাছে এটিই হতো সবচেয়ে বড় সংস্কার। ক্ষমতার চেয়ারে কে বসে আছেন, সেটি একজন সাধারণ মানুষের জন্য খুব জরুরি প্রশ্ন নয়। সুতরাং ‘মৌলিক সংস্কার’ বলতে এনসিপি কী বুঝাচ্ছে, তারা যদি সেটি স্পষ্ট করে এবং তাতে যদি বিএনপি, জামায়াত ও অন্যান্য দল একমত হয়, তাহলে বোঝা যাবে এসব সংস্কার শেষ হতে আসলে কতদিন লাগবে এবং তখনই ধারণা করা যাবে যে, নির্বাচনটি কবে হবে?
কিন্তু বিচার ও সংস্কারের কথা বলে যদি নির্বাচনকে বিলম্বিত করা হয় এবং অন্তর্বর্তী সরকার যদি কয়েক বছর ক্ষমতায় থাকতে চায় বা এনসিপি যতদিন না নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হয়, ততদিন পর্যন্ত নানা অজুহাতে নির্বাচনের প্রক্রিয়াটি ঝুলিয়ে রাখা হয়, তাহলে সেটি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের দূরত্ব বাড়াবে এবং দলগুলোর মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল বাড়বে—যা দেশকে আরও অনিশ্চয়তার দিকে নিয়ে যাবে।
বাস্তবতা হলো, যে তরুণরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জুলাই আন্দোলনে সামনের সারিতে ছিলেন; আওয়ামী লীগ সরকার টিকে গেলে যাদের অনেকেরই এখন হয় কবরে না হয় জেলখানায় থাকতে হতো—তারা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আরেকটি দল সরকার গঠন করলে রাজনীতি ও রাষ্ট্রপরিচালনায় তাদের অবস্থান কী হবে—সেটি একটি বড় প্রশ্ন। তরুণরা হয়তো এই বিষয়টি নিয়েই বেশি উদ্বিগ্ন। সে কারণে বিএনপিসহ অন্যান্য দলগুলোর উচিত হবে, দেশে দ্রুত একটি শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল পরিবেশ ফিরিয়ে আনা তথা অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও পররাষ্ট্র বিষয়ক বিবিধ জটিলতা দূর করে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরিয়ে দিতে দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি নির্বাচতি সরকারে গঠনের প্রক্রিয়ায় জুলাই অভ্যুত্থানের সামনে সারিতে থাকা তরুণদের গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া।
জাতীয় নাগরিক পার্টিতে ভাঙন হবে কি না; কোনো কোনো শীর্ষ নেতা দল থেকে বেরিয়ে নতুন দল করবেন কি না, এসব আলোচনাও রাজনৈতিক পরিসরে আছে। তারপরও এটা মনে রাখতে হবে যে, জুলাই অভ্যুত্থানের সামনের সারিতে থাকা এবং সঙ্গত কারণেই এই দলের প্রতি সরকারের একটা বিশেষ আগ্রহ থাকার ফলে তাদেরকে উপেক্ষা করে বা তাদের সঙ্গে লড়াই করে নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত করা কারো জন্যই মঙ্গল বয়ে আনবে না। দেশের জন্য নয়; দলগুলোর নিজেদের জন্য তো নয়ই।
সুতরাং বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি—এই তিনটি দলকে এখন সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, দেশের স্বার্থে তারা কত দ্রুত একটি নির্বাচনের দিকে যেতে পারে এবং নির্বাচনের পরে গঠিত সরকারে দলগুলোর অংশীদারত্ব কী হবে?
দেশের এই পরিস্থিতি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যদি একটি ঐকমত্যের জাতীয় সরকার গঠন করা যায় এবং তারা যদি বিনা বাধায় অন্তত পাঁচ বছর দেশ পরিচালনা করতে পারে, তাহলে যেসব মৌলিক সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, সেগুলো ওই সরকারের পক্ষেই করা সম্ভব এবং সেটি সম্মিলিতভাবেই। এই ধরনের একটা সমঝোতায় পৌঁছানো না গেলে বিচার ও সংস্কারের বৃত্তে নির্বাচন ঘুরপাক খেতে থাকবে এবং একটির পর এক ইস্যু সামনে নিয়ে আসা হবে। সচেতনভাবেই বিশৃঙ্খলা জিইয়ে রাখা হবে।
আপনার মতামত জানানঃ