পাকিস্তানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যে করাচি বন্দরে বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালিয়েছে ভারত। একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৮ মে) গভীর রাতে পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর করাচির বন্দর এলাকায় বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর এই প্রথমবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরাসরি সামরিক অভিযানে নামল ভারতীয় নৌবাহিনী। প্রাথমিক খবরে জানা যায়, ভারতের নৌবাহিনী পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ নৌঘাঁটিগুলোর ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং করাচি উপকূলজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
জানা গেছে, মুম্বাই ঘাঁটি থেকে পরিচালিত ভারতীয় নৌবাহিনীর ওয়েস্টার্ন ফ্লিট সম্পূর্ণ প্রস্তুত অবস্থায় রয়েছে। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হলে তাৎক্ষণিক পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে পাকিস্তানও। ভারতের এই হামলার ঘটনায় ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা আরও তীব্র আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে, ৮ মে রাত থেকে ৯ মে সকাল পর্যন্ত পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী ভারতের পশ্চিম সীমান্তজুড়ে একাধিক হামলা চালায়, তবে ভারতীয় সেনাবাহিনী এসব আক্রমণ “কার্যকরভাবে প্রতিহত করেছে এবং উপযুক্ত জবাব দিয়েছে” বলে শুক্রবার সকালে জানায় ভারতীয় সেনাবাহিনী।
এই সময় পাকিস্তান ড্রোন ও অন্যান্য অস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালায় এবং জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর একাধিকবার সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন (CFVs) করে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, “ড্রোন হামলাগুলো প্রতিহত করা হয়েছে এবং সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের যথাযথ জবাব দেওয়া হয়েছে। দেশের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষায় আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কোনো ষড়যন্ত্র বরদাস্ত করা হবে না।”
৮ মে রাতের দিকে পাকিস্তান হামলার মাত্রা বাড়িয়ে দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনা বাড়ানোর ইঙ্গিত দেয়। হামলাগুলো চলতে থাকে ৯ মে ভোর পর্যন্ত। পাকিস্তান উত্তর ও পশ্চিম ভারতের একাধিক স্থানে হামলার চেষ্টা চালায়, যা ব্যর্থ করে দেওয়া হয় বলে ভারতীয় সেনাবাহিনী জানায়।
ভারতের প্রতিরক্ষা সূত্র জানায়, পাকিস্তান থেকে ছোড়া আটটি ক্ষেপণাস্ত্র—যেগুলো জম্মুর সত্বরি, সাম্বা, আরএস পুরা ও আরনিয়া এলাকায় লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করা হয়েছিল—তা ভারতের একীভূত আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিটের মাধ্যমে প্রতিহত করা হয়।
প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখ্য কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, “জম্মু, পাঠানকোট ও উদমপুরের সামরিক ঘাঁটিগুলো পাকিস্তানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্যবস্তু ছিল। তবে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী কৌশলগত ও প্রযুক্তিগত উপায়ে হুমকি নিরসন করেছে।”
এছাড়াও, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সরকারকে জানিয়েছে, সম্প্রতি হামাসের প্রতিনিধিদের সঙ্গে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর বৈঠক হয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে উত্তেজনা কমাতে বৃহস্পতিবার রাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করকে ফোন করে অবিলম্বে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানান। একইভাবে রুবিও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গেও কথা বলেন এবং দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনা প্রশমন ও যোগাযোগ বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
আপনার মতামত জানানঃ