আমেরিকান জিওফিজিক্যাল ইউনিয়ন কনফারেন্সে উপস্থাপিত এবং অনলাইনে শেয়ার করা এই যুগান্তকারী পর্যবৈক্ষণটি হিমালয় গঠন সম্পর্কে আমাদের বোঝার ক্ষমতা বাড়াতে পারে।
আজও নিত্যদিন বিজ্ঞানীদের অবাক করে চলেছে হিমালয়। তাদের রাজকীয় শিখরের নীচে, ভারতীয় এবং ইউরেশিয়ান টেকটোনিক প্লেটগুলি গত ৬ কোটি বছর ধরে ধীর গতিতে সংঘর্ষ চালিয়ে যাচ্ছে। এই ভূতাত্ত্বিক-সংঘর্ষ শুধু পাহাড়ই তৈরি করেনি, বরং ভূপৃষ্ঠের গভীরে রহস্যময় প্রক্রিয়াকে আশ্রয় দিয়েছে। ঘন মহাসাগরীয় প্লেটগুলির বিপরীতে, মহাদেশীয় টেকটোনিক প্লেটগুলি পুরু এবং উচ্ছ্বল।
সংঘর্ষের সময় পৃথিবীর আবরণে সাবডাকশন (একটি ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়া যেখানে একটি টেকটোনিক প্লেট একটি দ্বিতীয় প্লেটের সঙ্গে একত্রিত হয়, সেখানে ভারী প্লেটটি অন্যটির নীচে চলে যায়। একটি অঞ্চল যেখানে এই প্রক্রিয়াটি ঘটে তাকে সাবডাকশন জোন বলা হয়) প্রতিরোধ করে। ব্যতিক্রমী এই বৈশিষ্ট্য ইউরেশিয়ান প্লেটের সঙ্গে চলতে থাকা ভারতীয় প্লেটের আচরণ নিয়ে পারস্পরিক আলোচনায় উদ্বুদ্ধ করেছে বিজ্ঞানীদের।
সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গেছে, তিব্বতের তলদেশে হওয়া ভূমিকম্পের তরঙ্গের নতুন বিশ্লেষণ এবং ভূপৃষ্ঠে উঠে আসা নির্দিষ্ট গ্যাসের উপস্থিতি পূর্বে যা আবিষ্কৃত হয়নি সেই সম্ভাবনার উপর আলোকপাত করেছে। এই তত্ত্বটি বোঝাচ্ছে যে, ইউরেশিয়ান প্লেটের নীচে গিয়ে ভারতীয় প্লেটের একটি অংশের স্তরবিন্যাস হচ্ছে এবং ঘন নীচের অংশটি উপরের অংশ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। Utrecht University-এর জিওডায়নামিস্ট ডৌই ভ্যান হিনসেনবার্গ বলছেন, আমরা জানতাম না যে, মহাদেশ এভাবে আচরণ করতে পারে। যা পৃথিবীর বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বেশ মৌলিক।”
আমেরিকান জিওফিজিক্যাল ইউনিয়ন কনফারেন্সে উপস্থাপিত এবং অনলাইনে শেয়ার করা এই যুগান্তকারী পর্যবৈক্ষণটি হিমালয় গঠন সম্পর্কে আমাদের বোঝার ক্ষমতা বাড়াতে পারে। এমনকী এই অঞ্চলে ভূমিকম্পের ঝুঁকি মূল্যায়নেও অবদান রাখতে পারে।
গবেষকরা এখন অন্বেষণ করছেন কীভাবে প্লেটের ছিন্নভিন্ন হওয়া এই অঞ্চলের ভূমিকম্পকে প্রভাবিত করতে পারে। ছিঁড়ে যাওয়ার কারণ হল কোনা-সাংরি ফাটল, তিব্বত মালভূমিতে একটি বড় ফাটল। অনুসন্ধানগুলি মহাদেশীয় সংঘর্ষের বিষয়ে আমাদের জ্ঞান বাড়ায়, এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যা পৃথিবীর বেশিরভাগ ভূখণ্ডকে আকার দিয়েছে। সাইমন ক্লেম্পেরারের মতো বিজ্ঞানীরা তাঁদের অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন।
দিনকয়েক আগেই নেপালের মাটি তীব্রভাবে কেঁপে ওঠে। ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭.১। সাতসকালে কেঁপে উঠল কলকাতা। আতঙ্কে ঘুম ভাঙে কলকাতা ও বাংলার বিভিন্ন জেলার। ভূমিকম্পের উৎসস্থল সেই নেপাল , যে দেশকে অতীতে বারবার ধ্বংসের মুখ দেখিয়েছে ভূকম্পন। তছনছ করেছে শহর থেকে গ্রাম। প্রাণ কেড়ে নিয়েছে হাজার হাজারের। এবার ভূমিকম্পের ফলে তিব্বতে বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায় ।
আপনার মতামত জানানঃ