মিশরের সাক্কারা নামক স্থানে ৪ হাজার ১০০ বছরের পুরনো এক চিকিৎসকের সমাধি আবিষ্কৃত হয়েছে।
মিশরের সাক্কারা নামক স্থানে ৪ হাজার ১০০ বছরের পুরনো এক চিকিৎসকের সমাধি আবিষ্কৃত হয়েছে। এই চিকিৎসক ফারাওকে চিকিৎসা করতেন বলে মনে করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
প্রত্নতাত্ত্বিকরা প্রাচীর চিত্র এবং হায়ারোগ্লিফিক শিলালিপিগুলো অধ্যয়ন করতে সক্ষম হন। একদল সুইস ও ফরাসি গবেষক অধ্যয়ন করে দেখেছেন, সমাধিস্থ করা চিকিৎসকের নাম ছিল ‘তেতেনেবেফু’। সমাধির নিদর্শনগুলো লুট করা হয়েছিল। দেয়ালে বিভিন্ন ধরণের বস্তু চিত্রিত করা হয়েছে, যা চিকিৎসায় ব্যবহৃত হতে পারে।
গবেষক দলের প্রধান ও জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ের মিশরবিদ ফিলিপ কলমবার্ট লাইভ সায়েন্সকে বলেন, এই চিকিৎসক প্রাচীন দেবী ‘সেলকেট’-এর উপাধি ধারণ করেছিলেন।
প্রাচীন মিশরীয় ধর্ম বলে, ‘সেলকেট’ ছিলেন মানুষের মাথাওয়ালা বিচ্ছু আকৃতির একজন দেবী। অন্যতম প্রাচীনতম দেবতা হোরাসের রক্ষাকর্তা ছিলেন তিনি। তার মা দেবী আইসিসের (আসেট) একনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। খোঁদাই করা চিত্রে তার বাহুগুলো ডানাযুক্ত এবং প্রায়শই সুরক্ষার অঙ্গভঙ্গিতে প্রসারিত দেখা যায়।
সমাধির শিলালিপি অধ্যায়ন করে আরও দেখা গেছে, ওই চিকিৎসক ‘ঔষধি উদ্ভিদের পরিচালক’ উপাধিও পান। এছাড়া তিনি ‘প্রধান দাঁতের চিকিৎসক’ও ছিলেন। খোঁদাই করা চিত্রে অন্য উপাধিগুলো খুব কম স্পষ্ট ছিল।
ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেএনএইচ সেন্টার ফর বায়োমেডিক্যাল ইজিপ্টোলজির অনারারি লেকচারার রজার ফরশো লাইভ সায়েন্সকে বলেন, প্রাচীন মিশরীয় ‘দন্ত চিকিৎসকদের’ প্রমাণ পাওয়াটা অত্যন্ত দুর্লভ বিষয়।
গবেষক দলের প্রধান ফিলিপ কলমবার্ট বলছিলেন, এসব বিষয় দেখে বোঝা যায়, তেতিনিবেফু তার পেশার শীর্ষে অবস্থান করছিলেন। তিনি অবশ্যই রাজদরবারের প্রধান চিকিৎসক ছিলেন, তাই তিনি নিজেই ফারাওয়ের চিকিৎসা করতেন।
তেতেনেবেফুর সমাধি সম্পূর্ণরূপে রঙিন প্রাচীরচিত্র দিয়ে সজ্জিত। জার এবং ফুলদানির মতো চিত্রও দেখা যায়। রঙিন বিমূর্ত চিত্র এবং জ্যামিতিক আকারও দেখা যায়।
গবেষক দল তাদের ব্লগ পোস্টে জানিয়েছেন, দেয়ালগুলো সম্পূর্ণরূপে উজ্জ্বল, তাজা রঙের পেইন্টিং দিয়ে সজ্জিত! তারা ৪ হাজার বছর পুরানো, এটি মনেই হয় না।
তেতিনিবেফু ঠিক কোন ফারাওদের সেবা করতেন, তা স্পষ্ট নয়। মিশরবিদ কলমবার্ট বলেন, দ্বিতীয় পেপি (যিনি ২২৪৬ থেকে ২১৫২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রাজত্ব করেছিলেন) বা এক বা একাধিক ফারাওয়ের চিকিৎসা তিনি করাতে পারেন। তবে সমাধিতে কোনো মানুষের দেহাবশেষ পাওয়া যায়নি। দেয়ালে চিত্রকর্ম এবং শিলালিপি ছাড়া এটি প্রায় সম্পূর্ণরূপে লুণ্ঠন করা হয়েছিল।
আপনার মতামত জানানঃ