টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এক বিপ্লবী কোয়ান্টাম পরীক্ষায় ‘নেগেটিভ টাইম’ এর প্রমাণ দিয়েছেন। এতে দেখা গেছে, আলো একটি পদার্থে প্রবেশ করার আগেই বের হয়ে আসতে পারে।
এই পর্যবেক্ষণ প্রচলিত সময়ের ধারণাকে বদলে দিয়েছে। যদিও এটি এখনও পর্যালোচনা সম্পন্ন হয়নি, বিজ্ঞানী অ্যাফ্রেইম স্টেইনবার্গ আশা করছেন এই আবিষ্কার কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞান ও সময়ের রহস্য নিয়ে নতুন আলোচনার সূচনা করবে।
গবেষণাটি ২০১৭ সালে শুরু হয়েছিল। ওই সময় গবেষকরা আলো ও পদার্থের মিথস্ক্রিয়ার উপর কাজ করছিলেন। বিশেষ করে ফোটনগুলোর মধ্য দিয়ে পরমাণু উত্তেজিত হয়ে যে সময়ক্ষেপণ ঘটায়, তা নিয়ে তাদের পরীক্ষা আরও বিস্ময়কর তথ্য সামনে এসেছে।
এর আগেও নেগেটিভ টাইমের অস্তিত্ব ছিল। আলোর কণা অর্থাৎ ফোটনের আচরণ নিয়ে সাত বছর গবেষণা করার পর এ রোমাঞ্চকর বিষয়টি উদ্ঘাটন করেছেন কানাডার ইউনিভার্সিটি অফ টরন্টো’র একদল কোয়ান্টাম পদার্থবিদ, যেখানে তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল, ‘অ্যাটমিক এক্সাইটেশন’ নামে পরিচিত ঘটনাটি আরও ভালোভাবে বোঝা।
এটি এমন এক পরিস্থিতি, যেখানে কোনো উপাদান দ্বারা শোষিত ফোটন ‘টাইম ডিলে’ বা সময় বিলম্বের মতো অভিজ্ঞতার মুখে পড়ে, যা ‘গ্রুপ ডিলে’ নামেও পরিচিত। আর উপাদানটি থেকে কণাগুলো বেরিয়ে যাওয়ার আগে পরমাণুর সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ার কারণে এমনটি ঘটে থাকে।
প্রক্রিয়াটি আরও ভালোভাবে বুঝতে গবেষকরা এমন এক পরীক্ষা করেছেন, যেখানে অতি শীতল পরমাণুর মেঘের মধ্য দিয়ে ফোটন কণা নিক্ষেপ করা হয়। এর লক্ষ্য ছিল, অ্যাটমিক এক্সাইটেশনের ঘটনাটি খতিয়ে দেখা।
আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, পরমাণুর মধ্য দিয়ে যাওয়া কিছু কিছু ফোটন কণার প্রবাহ অ্যাটমিক এক্সাইটেশন শেষ হওয়ার আগেই সম্পন্ন হয়ে গিয়েছিল, যার ফলে সময়ের একটি ঋণাত্মক মান উঠে এসেছে।
“এর ফলাফলে ইঙ্গিত মেলে, গ্রুপ ডিলে’র মতো ঘটনার ক্ষেত্রে সময়ের বিভিন্ন ঋণাত্মক মানের গুরুত্ব অনেক বেশি,” গবেষণাপত্রে উল্লেখ করেন গবেষকরা।
গবেষণাটির বিস্তারিত উঠে এসেছে ‘এক্সপেরিমেন্টাল এভিডেন্স দ্যাট এ ফোটন ক্যান স্পেন্ড এ নেগেটিভ অ্যামাউন্ট অফ টাইম ইন অ্যান অ্যাটম ক্লাউড’ শীর্ষক গবেষণাপত্রে, যা এখন পিয়ার রিভিউয়ের অপেক্ষায় আছে।
“এটি ধনাত্মক সময় নিলেও আমাদের পরীক্ষায় দেখা গেছে, উত্তেজিত অবস্থায় থাকার সময় বিভিন্ন ফোটন পরমাণুর মধ্যে ‘ঋণাত্মক’ সময়ও কাটাতে পারে,” সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ লেখেন ইউনিভার্সিটি অফ টরন্টো’র কোয়ান্টাম পদার্থবিদ এফ্রাইম স্টাইনবার্গ।
আপনার মতামত জানানঃ