বিজ্ঞানীরা ধারণা করেছেন, সব দিক থেকে সম্প্রসারিত হচ্ছে মহাবিশ্ব। এই অনুমানকে কাজে লাগাতে ‘ডার্ক এনার্জি’র ধারণাটি ব্যবহার করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
ডার্ক এনার্জির আসলে কোনো অস্তিত্ব নেই বলে সম্প্রতি দাবি করেছেন কিছু বিজ্ঞানী। মহাবিশ্বের অন্যতম বড় রহস্যের সমাধানে সহায়তা করতে পারে তাদের এই দাবি।
এক শতাব্দী ধরে বিজ্ঞানীরা ধারণা করেছেন, সব দিক থেকে সম্প্রসারিত হচ্ছে মহাবিশ্ব। এই অনুমানকে কাজে লাগাতে ‘ডার্ক এনার্জি’র ধারণাটি ব্যবহার করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
ডার্ক এনার্জি হচ্ছে এমন এক অদৃশ্য শক্তি, যা মহাবিশ্বের বিস্তার বা সম্প্রসারণকে বাড়িয়ে চলেছে।
ডার্ক এনার্জি সরাসরি দেখা যায় না, এমনকি এর কখনও প্রমাণও মেলেনি। তবে বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল, ডার্ক এনার্জি অবশ্যই রয়েছে। কারণ মহাবিশ্বের উপর আপাতদৃষ্টিতে এর প্রভাব রয়েছে ও মহাবিশ্ব সম্পর্কে আমাদের বোঝার ক্ষেত্রে কিছু মৌলিক সমস্যা সমাধানে সহায়তা করার জন্যও এটির প্রয়োজন।
এখন ‘ইউনিভার্সিটি অফ ক্যান্টারবেরি’র গবেষকরা বলছেন, মহাবিশ্ব আসলে সব দিক থেকে সমানভাবে সম্প্রসারণ হচ্ছে না। এর বদলে আরও বিভিন্ন দিক থেকে মহাবিশ্ব ‘লুম্পিয়ার’ উপায়ে বাড়ছে।
ডার্ক এনার্জিকে অস্বীকার করে মহাজাগতিক সম্প্রসারণের একটি ভিন্ন মডেলকে সমর্থন করে এই ধারণা, যা আলোর প্রসারণের পদ্ধতিতে দেখা অস্বাভাবিক বিভিন্ন ফলাফলের মাধ্যমে মহাবিশ্বের প্রসারণের ফল নয় বরং সময় ও দূরত্ব সম্পর্কে আমরা যেভাবে চিন্তা করি তার ফল।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, মাধ্যাকর্ষণ শক্তি সময়কে ধীর করে দেয়। আর এর ফলে এই বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে। যেমন– ব্যস্ত ছায়াপথের চেয়ে ফাঁকা জায়গায় দ্রুত টিক টিক করবে ঘড়ি।
“আমাদের গবেষণায় ইঙ্গিত মিলেছে, মহাবিশ্ব কেন দ্রুত গতিতে সম্প্রসারণ হচ্ছে তা ব্যাখ্যার জন্য ডার্ক এনার্জির প্রয়োজন নেই,” বলেছেন এ গবেষণার প্রধান লেখক ও নিউজিল্যান্ডের ‘ইউনিভার্সিটি অফ ক্যান্টারবেরি’র অধ্যাপক ডেভিড উইল্টশায়ার। এ গবেষণায় নেতৃত্বও দিয়েছেন তিনি।
“মহাবিশ্ব সম্প্রসারণের গতিশক্তির তারতম্যের একটি ভুল শনাক্তকরণ হচ্ছে ডার্ক এনার্জি, যা আমরা আসলে যে মহাবিশ্বে বাস করি তার মতো অপরিবর্তনশীল নয়।”
“গবেষণাটিতে জোরালো প্রমাণ মিলেছে যে, আমাদের সম্প্রসারণশীল মহাবিশ্বের আশপাশে থাকা কিছু মূল প্রশ্নের সমাধান করতে পারে এই নতুন ধারণা।”
“আরও নতুন তথ্য-উপাত্তের মাধ্যমে মহাবিশ্বের সবচেয়ে বড় রহস্য অর্থাৎ ডার্ক এনার্জির সমাধান হতে পারে এ দশকের শেষ দিকে।”
‘সুপারনোভা এভিডেন্স ফর ফাউন্ডেশনাল চেঞ্জ টু কসমোলজিকাল মডেলস’ শীর্ষক শিরোনামে গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘মান্থলি নোটিসেস অফ দ্য রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি লেটার্স’-এ।
আপনার মতামত জানানঃ