মহাশূন্যে ভাসমান প্রাচীন ছায়াপথগুলো দেখতে ফাঁপা ফুটবলের মতো। কিন্তু আমাদের পরিচিত সৌরমণ্ডলের একমাত্র ছায়াপথ, যা মিল্কিওয়ে (বাংলা নাম আকাশগঙ্গা বা অজবীথি) নামে পরিচিত, সেটি কেন চাকতির মতো, এই প্রশ্নটি বেশ কয়েক দশক ধরে বিজ্ঞানীদের বেশ বিব্রত করে আসছে। তবে জ্যোতিঃপদার্থবিদরা এখন দাবি করেছেন, তারা ছায়াপথগুলো কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে, সেটি তারা অচিরেই জানতে পারবেন। কারণ তারা বেশকটি উপবৃত্তাকার বিশাল ছায়াপথ জন্ম নেওয়ার ছবি ধারণ করতে পেরেছেন।
তারা মনে করছেন, এই ছবি বিশ্লেষণ করেই তারা বুঝতে পারবেন ছায়াপথের জন্মরহস্য। যুক্তরাজ্যের সাউদাম্পটন ইউনিভার্সিটির একদল গবেষকের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন বিশ্বের নানা প্রান্তের মেধাবী জ্যোতিঃপদার্থবিদরা।
তারা বলছেন, কয়েক দশক ধরে চলা মহাকাশের এই অমীমাংসিত রহস্যের (ছায়াপথের জন্ম) সমাধানের পথেই রয়েছেন তারা। তাদের গবেষণাপত্রের সহরচয়িতা সাউদাম্পটনের নারী বিজ্ঞানী আনংরাজিয়া পুগলিসি মনে করেন, বিপুল মাত্রার শীতল গ্যাস আর ছায়াপথগুলোর সংঘর্ষের মাধ্যমেই এই বিশাল মহাশূন্যের সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘দুটি চাকতি আকৃতির ছায়াপথ একে অন্যের সঙ্গে ধাক্কা খাওয়ায় সেখানে প্রচণ্ড গ্যাস তৈরি হয়। আর এই বিস্ফোরণের উত্তাপ থেকেই তৈরি হয় কোটি কোটি তারকা।’ তার মতে, ‘এই মহাজাগতিক সংঘর্ষটি হয়েছিল এক হাজার ২০০ বছর আগে, যখন এই মহাবিশ্বটি তার বিবর্তনের সক্রিয় পর্বে ছিল। আমরা আমাদের গবেষণার ফল থেকে জ্যোতির্বিজ্ঞানের অমীমাংসিত একটি বিষয়ের সমাধান নির্ণয় করতে পারব।
কারণ আমরা ছায়াপথ সৃষ্টির পন্থা পুনঃসংজ্ঞায়িত করার সূত্র পেয়ে গেছি।’ গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে ব্রিটেনের সাউদাম্পটন ইউনিভার্সিটি এবং চীনের পার্পল মাউন্টেন মানমন্দির ও চীনের বিজ্ঞান একাডেমির গবেষকদের মাধ্যমে। আর গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞান সাময়িকী নেচারে। দক্ষিণ আমেরিকার চিলির আটাকামা মরুভূমিতে অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ রেডিও টেলিস্কোপের সাহায্যে গবেষকদল দূর মহাশূন্যের ১০০টি ছায়াপথ সৃষ্টির ছবি বিশ্লেষণ করে ছায়াপথ সৃষ্টির বৃত্তান্ত সম্পর্কে নতুন ধারণা উপস্থাপন করেছেন। সূত্র : নেচার
আপনার মতামত জানানঃ