ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনার দেশ থেকে পালানোর পর রেমিট্যান্সের গতি বেড়েই চলেছে। আগস্ট মাসের প্রথম ২৮ দিনে দেশে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স দুই বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্য অনুযায়ী, চলতি আগস্টের ২৮ দিনে বৈধ পথে ২০৭ কোটি ১০ লাখ (২.০৭ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ২৪ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। রেমিট্যান্সের এ অঙ্ক আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৪৫ শতাংশ বেশি এসেছে। গত বছরের (২০২৩) আগস্টে ২৮ দিনে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৪৩ কোটি ১০ লাখ ডলার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে ১৯১ কোটি ৩৫ লাখ ৮০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স আসে, যা আগের ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৩৩ কোটি ডলার।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাইয়ে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ, আগস্টে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ, সেপ্টেম্বরে ১৩৩ কোটি ৪৩ লাখ, অক্টোবরে ১৯৭ কোটি ১৪ লাখ, নভেম্বরে ১৯৩ কোটি, ডিসেম্বরে ১৯৯ কোটি ১২ লাখ, জানুয়ারিতে ২১১ কোটি ৩১ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ, মার্চে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ, এপ্রিলে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ, মে মাসে ২২৫ কোটি ৩৮ লাখ এবং জুন মাসে এসেছিল ২৫৪ কোটি ১৬ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
এদিকে রেমিট্যান্স বাড়ায় ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভে। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস বা মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৬৫ কোটি ডলার (২৫.৬৫ বিলিয়ন)। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এখন ২ হাজার ৬০ কোটি ডলার (২০.৬০ বিলিয়ন)।
পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার কাজ শুরু
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার শাসনামলে দেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ পুনরুদ্ধারে কাজ শুরু করেছে নোবেল জয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনতে সরকার ইতিমধ্যে বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার সহায়তা চেয়ে যোগাযোগ শুরু করেছে। গতকাল বুধবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
অন্যদিকে, শেখ হাসিনা সরকারের রেখে যাওয়া দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার বাস্তবচিত্র তুলে ধরার লক্ষ্যে একটি শ্বেতপত্র প্রণয়নে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে প্রধান করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকির স্বাক্ষরে এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। গঠিত কমিটির নাম ‘বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি’। কমিটি ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে প্রধান উপদেষ্টাকে।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, শ্বেতপত্র প্রণয়নে ড. দেবপ্রিয়কে প্রধান করে সরকার একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনক্রমে তিনি কমিটির অন্য সদস্যদের মনোনীত করবেন। পরে গণমাধ্যমকে কমিটির অন্য সদস্যদের নামের তালিকা জানানো হয় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে।
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্যের নাম
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্যরা হলেন—ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিকসের ডিন প্রফেসর এ কে এনামুল হক, বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিইউআইএলডি-বিল্ড)-এর প্রধান নির্বাহী ফেরদৌস আরা বেগম, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি)-এর নির্বাহী পরিচালক ইমরান মতিন, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (বিডস)-এর জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো ড. কাজল ইকবাল, বুয়েটের অধ্যাপক ম. তামিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, সিপিডির ফেলো প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শারমিন নিলর্মী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. তাসনিম আরেফা সিদ্দিকী এবং বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন।
কে কত টাকা ঋণ আত্মসাৎ করেছে হিসাব হচ্ছে
পাচারকৃত অর্থ পুনরুদ্ধার এবং ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আত্মসাতের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা নামে-বেনামে কত টাকা ঋণ আত্মসাৎ করেছে, সেটির হিসাব করা হচ্ছে।
কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী ব্যক্তি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাংকিং খাতে ব্যাপক দুর্নীতি ও প্রতারণার মাধ্যমে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন এবং তা বিদেশে পাচার করেছেন, যার সঠিক
পরিমাণ নির্ণয়ের কাজ চলমান রয়েছে। এই আত্মসাত্কৃত অর্থের পরিমাণ লক্ষাধিক কোটি টাকার ওপরে মর্মে ধারণা করা যায় বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ না করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ ধরনের দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহে ইতিমধ্যে সংস্কার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। অবশিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহে সংস্কার কার্যক্রম শুরু হবে। নতুন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আত্মসাৎকৃত এসব অর্থের প্রকৃত তথ্য সংগ্রহ করা হবে এবং তাদের মাধ্যমে আত্মসাৎকৃত অর্থের প্রকৃত পরিমাণ নির্ণয়ের লক্ষ্যে অডিট কার্যক্রম শুরু করা হবে।
বিএফআইইউ, সিআইডি ও দুদকের সহায়তায় সম্পদ অধিগ্রহণ হবে
অর্থ আত্মসাৎকারীদের বিচারের প্রতি সরকারের কঠোর মনোভাবের কথা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের দপ্তর থেকে বলা হয়, ব্যাংকসমূহের নতুন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)’, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহায়তা নিয়ে আত্মসাৎকারীদের স্থানীয় সম্পদ অধিগ্রহণ ও বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার মাধ্যমে আত্মসাৎকৃত অর্থ পুনরুদ্ধারে কাজ শুরু হয়েছে।
ব্যাংক কমিশন শিগগিরই
শিগগিরই একটি ব্যাংক কমিশন গঠনের কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে বলা হয়, কমিশন-সংশ্লিষ্ট প্রতিটি ব্যাংকে তদন্তসাপেক্ষে প্রকৃত চিত্র প্রকাশ এবং ব্যাংকগুলোর পুনর্গঠনের জন্য ছয় মাসের মধ্যে একটি বাস্তবায়নযোগ্য রোডম্যাপ প্রণয়ন করবে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের লক্ষ্য হলো, সব আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পরিপালনে সক্ষম একটি শক্তিশালী ব্যাংকিং খাত গড়ে তোলা। তবে এই উদ্দেশ্য সফল করতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সময়, আন্তর্জাতিক কারিগরি সহায়তা ও অর্থের প্রয়োজন হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার অর্থ আত্মসাৎকারীদের দেশি-বিদেশি সম্পদ অধিগ্রহণ এবং বিদেশ থেকে ফেরত এনে ব্যাংকগুলোকে পুনর্গঠনের লক্ষ্যে কার্যক্রম হাতে নিচ্ছে। ব্যাংকগুলোর এই পুনর্গঠন এবং আর্থিক খাতের কাঠামোগত সংস্কার সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তবে, সরকার বাংলাদেশের আর্থিক খাতকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করার ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির কার্যপরিধি
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির ছয়টি কার্যপরিধি ও অন্যান্য বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো হলো— বর্ণিত শ্বেতপত্রে দেশের বিদ্যমান অর্থনীতির সামগ্রিক চিত্র থাকার পাশাপাশি অর্থনৈতিক বিষয়ে সরকারের কৌশলগত পদক্ষেপ গ্রহণ, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়ন এবং এলডিসি থেকে উত্তরণে করণীয় বিষয়ে প্রতিফলন থাকবে; কমিটির সদস্যরা অবৈতনিকভাবে দায়িত্ব পালন করবেন; কমিটির দপ্তর পরিকল্পনা কমিশন কমপ্লেক্সে স্থাপিত হবে; পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে; সরকারের সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থা কমিটির চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সরবরাহসহ সব ধরনের সহযোগিতা করবে এবং কমিটি ৯০ দিনের মধ্যে সুপারিশসংবলিত প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করবে।
শ্বেতপত্রের ধারণাপত্রে যা বলা হয়েছে
গত ২১ আগস্ট এই শ্বেতপত্র প্রণয়নের ধারণাপত্র তৈরির কথা জানানো হয় প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে। ধারণাপত্র সম্পর্কে জানানো হয়, গত প্রায় দেড় দশক ধরে বাংলাদেশের অর্থনীতি বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জে নিপতিত। বিগত সরকারের চরম অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, অর্থ পাচার এবং অপরিণামদর্শী প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি ঋণ গ্রহণ ইত্যাদি কার্যক্রমের কারণে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজকু হয়ে পড়ে। অর্থ বিভাগের সূত্রে পত্রিকান্তরে প্রকাশ যে, পতনকালে শেখ হাসিনা সরকার ১৮ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ রেখে গেছে। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের যে স্থিতি ছিল, তা বাংলাদেশের তিনটি বাজেটের মোট বরাদ্দের সমান। অন্যদিকে, বাজেট ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে কর আদায়ের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির চেষ্টা না করে দেশি ও বিদেশি দুই ধরনের ঋণের প্রতি বিগত সরকার ঝুঁকেছিল।
ধারণাপত্র-সম্পর্কিত বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় জিডিপির তুলনায় কর সংগ্রহকে ১৪ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও গত ছয়-সাত বছরে এ অনুপাত ১১ শতাংশ থেকে উলটো ৮ শতাংশে নেমে এসেছে। অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার এটি একটি দিক মাত্র। সামগ্রিকভাবে দুর্নীতি, অর্থ পাচারের অবাধ সুযোগ, বাজার সিন্ডিকেট ইত্যাদির ফলে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা অসহনীয় হয়ে পড়ে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, গত জুলাইয়ে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল প্রায় ১২ শতাংশ। খাদ্যের মূল্যস্ফীতি আরও বেশি, তা ১৪ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। বলা যেতে পারে, বিগত সরকারের শেষ সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেকটাই মুখ থুবড়ে পড়েছিল।
এতে বলা হয়, বিগত সরকারের সার্বিক অব্যবস্থাপনার ফলে সৃষ্ট বাংলাদেশের অর্থনীতির নজিরবিহীন নাজুক পরিস্থিতিতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়েছে। দেশের অর্থনীতিকে সুসংহতকরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সামনে যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে; এর মধ্যে প্রধানত হলো— অর্থনীতি পুনরায় সচল করার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে যেসব সমস্যা রয়েছে, সেগুলো নিরসনে কাঠামোগত সংস্কার সাধন, নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, দুর্নীতি দূরীকরণ, ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, কর ও শুল্ক নীতির সংস্কার এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণকালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থার একটি সামগ্রিক চিত্র এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রারম্ভেই সরকারের হাতে থাকা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে শ্বেতপত্র প্রণয়নকালে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে প্রয়োজনীয় পরামর্শ করা হবে।
শ্বেতপত্রে ছয় অগ্রাধিকার
শ্বেতপত্রে প্রধানত ছয়টি বিষয়ে আলোকপাতের প্রস্তাব করা হয়। এগুলো হলো—পাবলিক ফাইন্যান্স ম্যানেজমেন্ট, মূল্যস্ফীতি ও খাদ্যব্যবস্থাপনা এক্সটারনাল ব্যালেন্স, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, বেসরকারি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান।
আপনার মতামত জানানঃ