প্রায় ২০০ জন শিক্ষার্থীর মৃতদেহের উপর দাঁড়িয়ে আদালত যখন ঘোষণা করল কোটা নয় মেধার ভিত্তিতে হবে চাকরি, ঘোষণা করলো মেধার ভিত্তিতে চাকরি হবে ৯৩ পার্সেন্ট আর কোটা ৫%, তখন সবাই ভাবল থামতে চলেছে এই রক্তাক্ত নতুন ইতিহাস। কিন্তু না, সরকারের রাতে হানা দিয়ে শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করা নতুন ভাবে ইন্ধন যোগাচ্ছে এই আন্দোলনে। আর বিক্ষোভ রূপ নিচ্ছে বিপ্লবে। পরিস্থিতি ১৯৭১ সালে থেকেও ভয়াবহ। রাজপথ আরো বেশি রক্তাক্ত। নির সেনাবাহিনীর কাছেই খুন হতে হচ্ছে দেশের মানুষকে।
শিক্ষার্থীদের যুক্তিযুক্ত দাবি যখন সরকার সেনাবাহিনী পুলিশ এবং র্যাব দিয়ে দমন করতে চাইল, তখনই বিক্ষোভ রূপ নিল ইতিহাসের সব থেকে রক্তাক্ত এক বিপ্লবে। আমার স্টুডেন্ট আবু সাঈদ, মাত্র ২৫ বছর বয়স, সে তাদের বুলেটের সামনে দাঁড়িয়েছিল। তবে এখন পরিস্থিতি আরও বেশি হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। আর এর পেছনের কারণ সরকারের ব্লক রেইড। রাতের অন্ধকারে কারফিউ দিয়ে বিভিন্ন এলাকাতে অভিযান চালিয়ে আন্দোলনে যুক্ত শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করছে সরকার। গ্রেফতার করছে। নির্যাতন করছে। যা আবারও পরিস্থিতিকে বিক্ষোভের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আজ পরিস্থিতি আবারও উত্তপ্ত। শিক্ষার্থীরা আবারও রাস্তায়, বলেন অধ্যাপক নাজমুল হাসান কলিমুল্লাহ, বাংলাদেশের একজন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ।
রিপোর্ট অনুসারে সশস্ত্রবাহিনী বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষার্থীদের খোঁজ নিচ্ছে। গ্রেফতার করছে৷ পরিসংখ্যান অনুসারে, এই বিক্ষোভ চলাকালে ২৬৬ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে। এই সরকারকে আমরা বৈধ হিসাবে মানি না। তারা বল প্রয়োগের মাধ্যমে ক্ষমতা টিকিয়ে আছে। যা প্রতিনিয়ত লঙ্ঘন করছে মানবাধিকার। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষও নিশ্চুপ। একটি সাধারণ ছাত্র আন্দোলন থেকে এই বিক্ষোভ রূপ নিচ্ছে সরবার বিরোধী বিপ্লবী আন্দোলনে, বলছিলেন পিণাকী ভাট্টাচার্য।
গণভবনে আছে পাঁচস্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা। যেন এক দূর্গ। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম বারের মতো, বিক্ষোভ দমনে হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়েছে। আন্দোলনে থাকা পাঁচ সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষার্থী এখন জেলে। এমনকি নিয়ম করা হয়েছে যে কেউ যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ঘোরাফেরা করে, তবে যে কাউকে গ্রেফতার করা যাবে। অর্থাৎ রাস্তায় থাকা যে কেউ গ্রেফতার হতে পারে, বলছিলেন, মি. কলিমুল্লাহ।
আন্দোলন থামানোর বেশ কয়েকটি প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছে। এখন যদি আন্দোলনের সাথে জড়িত পক্ষ ও বিপক্ষের দলগুলো সঠিকভাবে পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্যর্থ হয়, তাহলে দেশ অনেক বড় বিপদে পড়তে চলেছে বলে জানান অধ্যাপক কলিমুল্লাহ।
ইতিমধ্যে প্রায় ৭ হাজার ভারতীয় যারা বাংলাদেশে ছিল তারা ভারতে চলে গেছে বিক্ষোভ সংঘর্ষে রূপ নেওয়ায়। যদিও ভারত বলছে যে, বাংলাদেশে যা ঘটছে তা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ঘটনা।
আপনার মতামত জানানঃ