আগামী বছর চীনের অর্থনীতিতে ধীরগতি থাকলেও অপেক্ষাকৃত ভালো অবস্থানে থাকবে দেশটির প্রতিবেশী ভারতের অর্থনীতি। বছরটিতে চীনে প্রবৃদ্ধি মাঝারি পর্যায়ে থাকবে। অন্যদিকে বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সমর্থ হবে ভারত। এমনটাই মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিটের বিশেষজ্ঞরা। খবর নিক্কেই এশিয়া।
কভিড মহামারীর পর থেকেই নিজ নিজ দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলো। নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এ দৌড় থেকে পিছিয়ে নেই এশিয়ার দেশগুলোও। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের মতে, চীনের কঠোর শূন্য কভিড বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার পর গত বছর দেশটিতে ৩ শতাংশ মাঝারি আকারের প্রবৃদ্ধি হয়। ২০২৩ সালে ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। তবে এ বছর দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধীর ছিল। মহামারীর আগের দশকে চীনের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) গড়ে ৭ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছিল।
ইউবিএস (ইউনিয়ন ব্যাংক অব সুইজারল্যান্ড) জানিয়েছে, ‘চীনের পুরনো প্রবৃদ্ধি মডেলের সীমাবদ্ধতার কারণে সম্ভবত গত দুই দশকের স্ট্যান্ডার্ডের তুলনায় ধীর প্রবৃদ্ধি দেখতে পাবে দেশটি।’
২০০০-১০ সাল পর্যন্ত চীনের গড় প্রবৃদ্ধি ছিল দুই ডিজিটের ঘরে। তবে এ দশকে তুলনামূলক কম বা গড়ে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির অনুমান করছে ইউবিএস। এর মূল কারণ রফতানি, সম্পদে বিনিয়োগ ও কম খরচে উৎপাদনসহ দেশটির অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তিগুলো ধীর হয়ে গেছে। তবে ইউবিএস বলছে, উচ্চমূল্যের সামগ্রী উৎপাদন ও বৈদ্যুতিক গাড়ির (ইভি) মতো সবুজ প্রযুক্তির কারণে প্রবৃদ্ধি টেকসই হবে।
চীনে বিস্তৃত কাঠামোগত সমস্যা রয়ে গেছে। কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। সরবরাহ শৃঙ্খলে বৈচিত্র্য আনার চাপ বাড়ছে। স্বল্পমেয়াদে দেশটির অর্থনীতির গতি এরই মধ্যে তলানিতে ঠেকেছে। ওয়াল স্ট্রিটের বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রবৃদ্ধির টানাপড়েন মোকাবেলা করার জন্য প্রয়োজনীয় কাঠামোগত সংস্কার ত্বরান্বিত করতে দেশটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।
অন্যদিকে ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া নতুন সাপ্লাই চেইন থেকে উপকার পাবে। ২০২৪ সালে দ্রুততম ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির দেশগুলোর একটিতে পরিণত হবে ভারত। এ প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করবে কৃষি থেকে শুরু করে নানা পরিষেবা পর্যন্ত বিস্তৃত শিল্পের প্রসার। এছাড়া পুঁজিপ্রবাহের জন্য বিনিয়োগকারীরা চীনের বিকল্প হিসেবে ভারতকে বেছে নিতে পারেন।
চীন থেকে সরবরাহ শৃঙ্খল সরে যাওয়ায় ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ায়ও উপকৃত হবে। ব্যাংক অব আমেরিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১০ সাল থেকে ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সংস্থায় বিদেশী প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ দ্বিগুণ হয়েছে।
আপনার মতামত জানানঃ