নানা জল্পনা কাটিয়ে অবশেষে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে দেশে ভারতের কম্পানি সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে করোনার টিকা আসছে বলে জানালেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ডের করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন ২১ থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যেই দেশে আসবে বলে জানান। একইসাথে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাজমুল হাসান পাপনও জানিয়েছেন আগামী ২৫ তারিখের মধ্যেই দেশ করোনা টিকা পাচ্ছে।
আজ সোমবার(১১জানু) বিকেলে করোনার ভ্যাকসিন ইস্যুতে এক সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম জানান, প্রথম চালানেই ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেশে আনা হবে। দুই দিন ওয়্যার হাউসে রাখার পর প্রতি জেলায় পাঠানো হবে।
ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত টিকা ‘কোভিশিল্ড’ দেশে আসবে দেশিয় প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মাধ্যমে। গত নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ভারতের টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়। সেরামের কাছ থেকে টিকা এনে বাংলাদেশ সরকারের হাতে তুলে দেবে বেক্সিমকো। প্রথম পর্যায়ে ৬০ লাখ ডোজ টিকা আসার কথা রয়েছে। এর মধ্যে ৫০ লাখ সরকারিভাবে এবং ১০ লাখ ডোজ বেক্সিমকোর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রাইভেট মার্কেটিংয়ের জন্য।
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাজমুল হাসান পাপন জানান, প্রথম চালানে ৫০ লাখ টিকা দেশে আসতে পারে। এরপর প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে টিকা দেশে আসবে।
এর আগে নাজমুল হাসান জানিয়েছিলেন, ইতিমধ্যে করোনার টিকা পরিবহনের জন্য সাতটি গাড়ি আমদানি করা হয়েছে। এ ছাড়া বিশেষায়িত কুল বাক্স আনা হবে। ঢাকায় একটি কেন্দ্রীয় গুদাম তৈরি করা হয়েছে।
এর আগে সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আদার পুনেওয়ালা নতুন বছরের শুরুতেই ঘোষণা করে যে, তারা এই মুহূর্তে টিকা রপ্তানি করতে পারছে না। তাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পর মাস দুই তিন পর রপ্তানি করা হবে বলে জানানো হয়। এতে চলতি মাসে এবং প্রতিমাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা পাবার কথা থাকলেও সে-ব্যাপারে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।। যদিও সরকারের বিভিন্ন তরফ থেকে জানানো হয়ে আসছিল যে, সেরামের নিষেধাজ্ঞার কবলে বাংলাদেশ পড়বে না। যেহেতু বাংলাদেশের সাথে চুক্তি হয়েছে জি-টু-জি অর্থাৎ সরকার টু সরকারের সাথে।
২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কোভ্যাক্সের ২০ কোটি থেকে ৩০ কোটি ডোজ টিকা বাংলাদেশকে দেয়ার পরিকল্পনাও করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। চুক্তি অনুযায়ী ইতোমধ্যে সরকার ১২০ মিলিয়ন ডলারও তাদের প্রদান করেছে। গতকাল থেকে জল্পনা চলছিল আজ কোথায় কীভাবে ভ্যাকসিন আসবে এব্যাপারে জানাবেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। জল্পনা কাটিয়ে অবশেষে এই ঘোষণা দিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
তবে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, ভারত থেকে বাংলাদেশের চাহিদা অনুসারে ভ্যাকসিন পাওয়া সম্ভব নয়। কেননা ভারত ঘোষণা দিয়েছিল নিজ দেশের চাহিদা মেটানোর ওপর তারা আগে গুরুত্ব দেবে এবং এটা স্বাভাবিক। বাংলাদেশ যেহেতু ভ্যাকসিন আমদানি নির্ভর তাই দেশের উচিত হবে অন্যান্য সূত্রগুলোতেও আলোচনা জারি রাখা। ইতোমধ্যে দেশে করোনার ছড়াছড়ি যে হারে বাড়ছে এতে নির্দিষ্ট সময়ে ভ্যাকসিন না পাওয়া গেলে দেশ আরো বিপর্যয়ের দিকে চলে যেতে পারে আশঙ্কা করেন তারা। তাই দ্রুত ভ্যাকসিন পাবার ক্ষেত্রে সরকারকে বিভিন্ন সূত্রে আলোচনা ধরে রাখার জন্য মত প্রকাশ করেন তারা।
এসডাব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৭৫২
আপনার মতামত জানানঃ