State Watch
    Facebook Twitter Instagram
    সর্বশেষ প্রকাশিত
    • নভেম্বরে রাজনৈতিক মামলা ১১৫, গ্রেপ্তার ২৬৬৩
    • যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক প্রতিবেদন: বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে
    • বাংলাদেশের রাজনৈতিক সঙ্কট দীর্ঘায়িত হবে: দ্য রিও টাইমস
    • আমেরিকার ভবিষ্যৎ: পতন না পুনরুত্থান?
    • সমুদ্রের মধ্যে হঠাৎ আবিষ্কার হল উঁচু পর্বতের
    • আবারও কেন গুঞ্জন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার?
    • হেলমেট ও মুখোশ পরে বিএনপি নেতাদের বাড়িতে হামলা, ত্রাস সৃষ্টি
    • মাত্র আধা কিলোমিটার বাঁধ যেভাবে পদ্মাকে বানিয়েছে আগ্রাসী
    State Watch
    • প্রধান পাতা
    • আইনপ্রয়োগ
      1. গুম-অপহরণ
      2. গ্রেপ্তার-নিপীড়ন
      3. নিপীড়নমূলক আইন
      4. প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি
      5. বিচার বহির্ভূত হত্যা
      6. রাষ্ট্রীয় বাহিনী
      Featured
      জুলাই ২, ২০২৩

      আবারো বেড়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যু: এমএসএফ

      Recent
      নভেম্বর ২৯, ২০২৩

      ৫৮১ কোটি টাকার সার আত্মসাৎ, অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে টালবাহানা দুদকের

      নভেম্বর ১৩, ২০২৩

      দুর্নীতির স্বর্গে কাজ শুরুর আগেই নির্মাণ ব্যয় বেড়ে ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা

      অক্টোবর ৩০, ২০২৩

      পুলিশের নির্মমতা: গুলিতে আহত শিশু, পিটুনির শিকার সাংবাদিক

    • আক্রান্ত জনগোষ্ঠী
      1. আদিবাসী
      2. গণমাধ্যম
      3. ধর্মীয় সংখ্যালঘু
      4. নারী ও শিশু
      5. প্রাণ-প্রকৃতি-কৃষি
      6. ভিন্ন মতাবলম্বী
      7. রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ
      8. শ্রমজীবী
      Featured
      ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৩

      বাংলাদেশে গণমাধ্যম কতটা স্বাধীন মনিটর করবে যুক্তরাষ্ট্রসহ ৯ রাষ্ট্র

      Recent
      ডিসেম্বর ২, ২০২৩

      নভেম্বরে রাজনৈতিক মামলা ১১৫, গ্রেপ্তার ২৬৬৩

      নভেম্বর ৩০, ২০২৩

      সঙ্গী মারা গেলে কাক আর জোড়া বাঁধে না?

      নভেম্বর ২৪, ২০২৩

      মামলা আর গ্রেপ্তারের ভয়ে আত্মগোপনে বিএনপির শীর্ষ নেতারা

    • বিশেষায়িত
      1. করোনাভাইরাস
      2. ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট
      3. নির্বাচন
      4. বিশ্ব
      5. মানবাধিকার
      6. রোহিঙ্গা জাতি
      7. সীমান্ত ইস্যু
      Featured
      আগস্ট ২৮, ২০২৩

      ডিজিটাল থেকে সাইবার: নতুন জালে পুরনো কায়দায় শিকার

      Recent
      ডিসেম্বর ২, ২০২৩

      বাংলাদেশের রাজনৈতিক সঙ্কট দীর্ঘায়িত হবে: দ্য রিও টাইমস

      ডিসেম্বর ২, ২০২৩

      আমেরিকার ভবিষ্যৎ: পতন না পুনরুত্থান?

      ডিসেম্বর ১, ২০২৩

      ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি বন্দীদের ওপর যেভাবে নির্মম নির্যাতন করা হচ্ছে

    • রাজনীতি-প্রশাসন
      1. অর্থনীতি ও বাণিজ্য
      2. আইন-আদালত
      3. ক্ষমতাসীন দল
      4. জাতীয় সংসদ
      5. রাজনীতি
      6. রাষ্ট্র-সরকার
      Featured
      অক্টোবর ২৯, ২০২৩

      বিএনপির ভুল নাকি সরকারের ফাঁদ: গুলিবিদ্ধ শিশু, নিহত পুলিশ, আহত অজস্র

      Recent
      ডিসেম্বর ২, ২০২৩

      যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক প্রতিবেদন: বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে

      ডিসেম্বর ১, ২০২৩

      আবারও কেন গুঞ্জন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার?

      নভেম্বর ২৯, ২০২৩

      প্রতি মাসে কমছে রিজার্ভ, কী করবে বাংলাদেশ?

    • মতামত
      • বিশ্লেষণ
      • সম্পাদকীয়
      • সাক্ষাৎকার
    • গবেষণা ও প্রতিবেদন
      1. বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদন
      2. চলতি প্রবণতা
      3. নীতি নির্দেশনা
      Featured
      জানুয়ারি ৩১, ২০২৩

      আবারো অবনমন: সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১২

      Recent
      নভেম্বর ২২, ২০২৩

      ৮২ শতাংশ কার্যকারিতা হারিয়েছে অ্যান্টিবায়োটিক: গবেষণা

      অক্টোবর ৭, ২০২৩

      সেপ্টেম্বরে সড়কে ৪১৭ মৃত্যু, আহত ৬৫১

      অক্টোবর ৩, ২০২৩

      সেপ্টেম্বরে দেশে ১৫৭৭ অগ্নিকাণ্ড: কেন বাড়ছে এই সংখ্যা?

    • আর্কাইভ
    State Watch
    ইতিহাস

    আল খাওয়ারিজমি: বীজগণিতের জনক!

    ডেস্ক রিপোর্টBy ডেস্ক রিপোর্টনভেম্বর ৩, ২০২৩Updated:নভেম্বর ৪, ২০২৩No Comments7 Mins Read

    আল খাওয়ারিজমির অনেক আগে ভারতীয় ও গ্রিক গণিতবিদরা এমন অনেক গাণিতিক সমস্যার সমাধান করেছিলেন, যা আধুনিক বীজগণিতের অনুরূপ। এমনকি এরও আগে প্রাচীন মিশরীয় পুস্তকেও বীজগাণিতিক সমীকরণের মতো গাণিতিক সমস্যার সন্ধান পাওয়া যায়। খ্রিস্টপূর্ব ১৭০০ সালের দিকে রচিত আহমোসের প্যাপিরাসে ax=b আকারের গাণিতিক সমীকরণের অনুরূপ গাণিতিক সমস্যার নমুনা লক্ষ করা যায়।

    মিশরীয় সভ্যতার সমসাময়িক ব্যাবিলনীয় সভ্যতায়ও এমন কিছু গাণিতিক সমস্যার সন্ধান পাওয়া যায়, যাতে গাণিতিক সমীকরণ প্রচ্ছন্নভাবে বিদ্যমান। প্রাচীন গ্রিক ও ভারতীয় গণিতবিদের রচনায় রৈখিক, দ্বিঘাতী, ত্রিঘাতী কিংবা তারও বেশি মাত্রার সমীকরণের সন্ধান পাওয়া যায়। কাজেই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে আল খাওয়ারিজমি কি সত্যিই বীজগণিতের জনক?

    বীজগণিতের জনক হিসেবে আল খাওয়ারিজমির সবচেয়ে প্রবল প্রতিপক্ষ হলেন ডায়োফ্যান্টাস। ডায়োফ্যান্টাসের বিখ্যাত গ্রন্থটির নাম ‘অ্যারিথম্যাটিকা’, যা রচিত হয়েছে খ্রিস্টীয় তৃতীয় শতকে। ‘অ্যারিথম্যাটিকা’ গ্রন্থটি তেরো খণ্ডে রচিত হলেও এখন এর মাত্র ছয় খণ্ড পাওয়া যায়। এ গ্রন্থে কিছু গাণিতিক সমীকরণের উল্লেখ আছে, যা আধুনিক বীজগণিতের অনুরূপ। ‘অ্যারিথম্যাটিকা’য় দ্বিঘাত, ত্রিঘাত এমনকি চতুর্ঘাত সমীকরণেরও উল্লেখ রয়েছে। ধারণা করা হয়, ডায়োফ্যান্টাস এসব সমস্যার উদ্ভাবন করেননি, বরং তিনি এগুলো সংকলন করেছেন। ডায়োফ্যান্টাসের ‘অ্যারিথম্যাটিকা’য় একটি সমস্যা আছে এমন:

    ‘ধরা যাক দুটি সংখ্যা রয়েছে। তৃতীয় একটি সংখ্যা নির্ণয় করতে হবে যখন তা প্রদত্ত সংখ্যা দুটির সঙ্গে গুণ করা হলে একটির বর্গ অন্যটির গুণফলের সমান হবে।’

    কিংবা আরেকটি সমস্যার দিকে নজর দেয়া যাক। সমস্যাটি হলো এমন: ‘একই সংখ্যা থেকে দুটি প্রদত্ত সংখ্যা বিয়োগ করলে বিয়োগফলের অনুপাত প্রদত্ত অনুপাতের সমান।’

    ডায়োফ্যান্টাসের ‘অ্যারিথম্যাটিকা’ গ্রন্থে এ ধরনের অনেক বীজগাণিতিক সমস্যার সন্ধান পাওয়া যায়। ডায়োফ্যান্টাসের সময়ে অজ্ঞাত রাশিকে প্রতীকের সাহায্যে প্রকাশ করা হতো না, বরং এর পরিবর্তে একে বলা হতো ‘অ্যারিথমোস’ (arithmos)। ‘অ্যারিথমোস’ শব্দটির অর্থ ‘অংক’। এটি একটি শব্দসংকেত। যা আধুনিক বীজগণিতের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। এ কারণে কেউ কেউ তাকে বীজগণিতের জনক হিসেবে মনে করেন।

    ডায়োফ্যান্টাসের ‘অ্যারিথম্যাটিকা’ গ্রন্থে যে ধরনের গাণিতিক সমস্যা দেয়া ছিল অনুরূপ গাণিতিক সমস্যার উপস্থিতি পাওয়া যায় ডায়োফ্যান্টাসের জন্মের অনেক আগেই রচিত অনেক প্রাচীন পুস্তকেও। এবং অনেক ক্ষেত্রে এসব পুস্তকে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সমস্যার সমাধানও করে দেয়া আছে। কিন্তু ডায়োফ্যান্টাস বা তার আগেকার কোনো গ্রন্থেই ঠিক কোন প্রক্রিয়ায় এ ধরনের আরো সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে সে নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। অর্থাৎ একই প্রক্রিয়ার অনেক সমস্যার সমাধানের কোনো সাধারণ রূপরেখা নেই। ডায়োফ্যান্টাসের গ্রন্থের প্রায় প্রতিটি সমস্যাই বিচ্ছিন্নভাবে সমাধান করা হয়েছে। অর্থাৎ একটি সমস্যার সমাধান যেভাবে করা হয়েছে অন্যটির সমাধান অন্যভাবে করা হয়েছে। কাজেই সমস্যা সমাধানের কোনো ধাপভিত্তিক প্রক্রিয়া লক্ষ করা যায় না।

    বীজগণিতকে বলা হয় পাটিগণিতের সাধারণীকৃত রূপ। অর্থাৎ বীজগণিতের সাহায্যে একই রকমের সব সমস্যার সমাধানের জন্য একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। কিন্তু ডায়োফ্যান্টাসের গ্রন্থে তেমন কিছু লক্ষ করা যায় না। অর্থাৎ, সমস্যাগুলোর সমাধানের মধ্যে কোনো পদ্ধতিগত ঐক্য পাওয়া যায় না। এসব বিবেচনায় ডায়োফ্যান্টাসকে বীজগণিতের জনক হিসেবে মেনে নেয়া যায় না।

    সলোমন গ্যান্ডজ (Solomon Gandz) নামের এক অস্ট্রিয়ান-আমেরিকান গণিতবিদ দাবি করেন, খাওয়ারিজমির বীজগণিত গ্রন্থটি প্রাচীন একটি হিব্রু গ্রন্থের অনুবাদ। গ্রন্থটির নাম ‘মিশনাত হা-মিদ্দত’ (Mishnat ha Middot)। ধারণা করা হয়, রাব্বি নেহেমিয়াহ নামের একজন গণিতবিদ গ্রন্থটি রচনা করেন। গ্রন্থটি ১৫০ খ্রিস্টাব্দের দিকে রচিত বলে অনুমান করা হয়। এর ছয়টি অধ্যায় মূলত জ্যামিতি এবং এর ব্যবহারিক দিক নিয়ে রচিত।

    এই বইয়ে বিভিন্ন ধরনের সমতলীয় কাঠামো, যেমন ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, বৃত্ত, বৃত্তচাপ ইত্যাদি সম্পর্কিত আলোচনা রয়েছে। পরবর্তী পর্বে বিভিন্ন ধরনের সমতলীয় কাঠামোর ক্ষেত্রফল এবং আয়তন নির্ণয়ের বিভিন্ন পরিমাপ সম্পর্কিত নিয়ম ও সূত্র নিয়ে আলোচনা রয়েছে। গ্রন্থের শেষের দিকে অনুপাত-সমানুপাত নিয়েও কিছু আলোচনা আছে। মিউনিখ লাইব্রেরিতে ‘মিশনাত হা-মিদ্দত’ গ্রন্থের যে কপি আছে তাতে গ্রন্থটিকে বীজগণিতের পুস্তক না বলে বরং জ্যামিতির পুস্তক বলাই শ্রেয়। কারণ এতে জ্যামিতিক উপপাদ্য এবং এর প্রয়োগ সম্পর্কিত ব্যাখ্যা দেয়া আছে।

    অর্থাৎ বর্তমানে যাকে বীজগণিত বলা হয়, এ গ্রন্থের অধিকাংশ অংশই তার অন্তর্ভুক্ত নয়। কাজেই রাব্বি নেহেমিয়াহকেও বীজগণিতের জনক হিসেবে মেনে নেয়া যায় না। অবশ্য গণিতের ইতিহাসবিদদের অনেকে সলোমন গ্যান্ডজের এমন দাবির সারবত্তা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন। তারা মনে করেন ‘মিশান্ত হা মিদ্দত’ রচনা হয় খাওয়ারিজমির জন্মের অনেক পরে। এবং সেক্ষেত্রে অনেকে মনে করেন ‘মিশনাত হা-মিদ্দত’-ই বায়তুল হিকমার আল খাওয়ারিজমির প্রভাবে রচিত একটি গ্রন্থ। অবশ্য ‘মিশনাত হা-মিদ্দত’-এ আলেকজান্দ্রিয়ার হিরোন গণিতের প্রভাবও লক্ষণীয়।

    আল খাওয়ারিজমির গণিত প্রতিভা ভারতীয় গণিত দ্বারা ভীষণভাবে প্রভাবিত। ‘কিতাব আল হিসাব’ গ্রন্থে তিনি নিজেও স্বীকার করেছেন সে কথা। কাজেই তার বিখ্যাত ‘কিতাব আল জাবর ওয়াল মুকাবালা’ গ্রন্থটিও ভারতীয় গণিতের প্রভাবমুক্ত থাকার কথা নয়। ভারতীয় গণিতবিদদের সঙ্গে আরব গণিতবিদদের সম্পর্ক ও সখ্য ছিল ভীষণ গভীর। এ সম্পর্ক তৈরি হয় আল মনসুরের সময় থেকেই। জানা যায়, আল মনসুরের সময়ে ভারতবর্ষ থেকে ব্রহ্মগুপ্তের বিখ্যাত ‘সিদ্ধান্ত’ গ্রন্থটি বাগদাদে নিয়ে আসা হয়। খলিফা হিসেবে আল মনসুরের রাজত্ব ছিল ৭৫৪ থেকে ৭৭৫ পর্যন্ত। এই দীর্ঘ সময়ে ব্রহ্মগুপ্তের গ্রন্থটি বায়তুল হিকমাহে পঠিত ও অনূদিত হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দেয়া যায় না। জানা যায়, মুহাম্মদ বিন ইব্রাহিম আল ফাজারি (মৃত্যু আনু. ৭৯৬) ব্রহ্মগুপ্তের ‘সিন্দ-হিন্দ’ গ্রন্থটি অনুবাদ করেন। আল খাওয়ারিজমি এ গ্রন্থ দ্বারা ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত ও প্রভাবিত ছিলেন।

    প্রাচীন ভারতীয় প্রায় সব পুস্তকই কাব্যের পঙক্তির আকারে রচিত হতো। এমনকি গণিতের পুস্তকও পদ্যের ছন্দে রচিত হতো। আর্যভট্ট এবং ব্রহ্মগুপ্তের গ্রন্থও পদ্যের ছন্দে রচিত ছিল। তাছাড়া ভারতীয় গণিতবিদদের গাণিতিক প্রক্রিয়া ছিল অনেকটাই দুর্বোধ্য। গাণিতিক প্রক্রিয়া সম্পাদনের জন্য যে ধারাবাহিক যৌক্তিক পর্যায়ক্রম মেনে চলতে হয় প্রাচীন ভারতীয় গণিতবিদদের গণিতে তা প্রায়ই অনুপস্থিত ছিল। এ কারণে ভারতীয় গণিতবিদ আর্যভট্ট কিংবা ব্রহ্মগুপ্তকে বীজগণিতের জনক বলা যায় না।

    ভারতীয় গণিতবিদদের বিপরীতে আল খাওয়ারিজমির গাণিতিক প্রক্রিয়া ছিল অনেক সরল, সুশৃঙ্খল এবং যৌক্তিক ক্রমানুবর্তী। ভারতীয় গণিতবিদদের মনোযোগ ছিল ফলাফলের প্রতি, অন্যদিকে আল খাওয়ারিজমির মনোযোগ ছিল গাণিতিক প্রক্রিয়ার প্রতি। ভারতীয় গণিতবিদরা খুব কমসংখ্যক উদাহরণ দিতেন, অন্যদিকে আল খাওয়ারিজমি পর্যাপ্তসংখ্যক উদাহরণ প্রদান করতেন। আল খাওয়ারিজমিই সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়াকে সর্বজনীন করেন। অর্থাৎ একই রকমের সব সমস্যা সমাধানের জন্য একটি উপায় নির্দিষ্ট করেন। আল খাওয়ারিজমি অজ্ঞাত রাশি প্রকাশে কোনো নোটেশন বা প্রতীক ব্যবহার না করলেও তিনি তার গ্রন্থে ‘শব্দ প্রতীক’ ব্যবহার করেছেন। অজ্ঞাত রাশি বোঝাতে তিনি ‘আল শে’ (al shay) অথবা ‘কোসা’ (cosa) শব্দটি ব্যবহার করেছেন।

    আল খাওয়ারিজমি তার বিখ্যাত গ্রন্থ ‘কিতাব আল জাবর ওয়াল মুকাবালা’-এ আগেকার গণিতবিদদের গাণিতিক সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়াকে আরো সহজতর করেন। দৈনন্দিন ও প্রাত্যহিক জীবনের প্রয়োজনীয় গাণিতিক সমস্যা সমাধানের দুর্বোধ্যতা ও অসংগতি দূর করেন। গাণিতিক সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে তিনি একটি পদ্ধতিগত ঐক্য ও সামঞ্জস্য বিধান করতে সক্ষম হন, যার ফলে গাণিতিক সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়ার মধ্যে এক ধরনের সর্বজনীনতা সৃষ্টি করা যায়। গণিতের এ সর্বজনীন রূপটিই পরবর্তী সময়ে গণিতের একটি স্বতন্ত্র শাখা ‘বীজগণিত’ হিসেবে জন্মলাভ করেছে।

    বীজগণিতকে বলা হয় পাটিগণিতের সাধারণীকৃত রূপ। পাটিগণিতে প্রতিটি গাণিতিক সমস্যা আলাদাভাবে সমাধান করা হয়। কিন্তু বীজগণিতে একই রকম সব সমস্যা একই নিয়মে সমাধান করা যায়। বীজগণিতের এটাই হলো বিশেষত্ব। আল খাওয়ারিজমির আগে কাজটি আর কেউ করেননি। একই রকমের একাধিক সমস্যার সমাধানের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট ধাপ বা প্রক্রিয়ার কথা কেউ বলেননি।

    সর্বোপরি আল খাওয়ারিজমির মাধ্যমেই বীজগণিতের ধারণা বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়েছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। এমনকি বীজগণিতের ইংরেজি নাম ‘অ্যালজেব্রা’ শব্দটিও এসেছে তার ‘আল জাবর’ শব্দ থেকেই। গ্রন্থটির শিরোনামের ‘আল জাবর’ এবং ‘আল মুকাবালা’ শব্দ দুটিও খুব গুরুত্বপূর্ণ। ‘আল জাবর’ শব্দটির অর্থ ‘সমীকরণের উভয় পার্শ্ব থেকে সমান পদগুলো বিলোপের লক্ষ্যে যোগ করা’ অথবা ‘ভগ্নাংশ দূরীকরণের লক্ষ্যে সমীকরণের উভয় পার্শ্বের একই সংখ্যা দিয়ে গুণ করা’। এবং ‘আল মুকাবালা’ শব্দটির অর্থ ‘সমীকরণের উভয় পার্শ্ব থেকে সমান পদ বিয়োগ করে সরলীকরণ করা’।

    আল কারাজি (Al Karaji) মনে করেন, আল খাওয়ারিজমি ‘আল মুকাবালা’ শব্দটি দিয়ে ‘সমীকৃত’ করাকে বোঝাতেন। এই দুটি শব্দকে একত্রে নিয়ে বলা যায় ‘সমীকরণের উভয় পার্শ্বের পদের সমন্বয় ও সহগের সরলীকরণ’। অন্যদিকে কাজী মোতাহার হোসেনের মতে ‘আল জাবর ওয়াল মুকাবালা’-এর অর্থ ‘সংযোজন ও বিয়োজন এবং পক্ষান্তরকরণ’। ‘আল জাবর’ মানে ‘একত্র করা’ আর ‘আল মুকাবালা’ মানে ‘সামনাসামনি করা’। সমীকরণ সমাধানের শেষ স্তরে একদিকে সব অজ্ঞাত বা নির্ণেয় সংখ্যা আর অন্যদিকে জ্ঞাত বা প্রদত্ত সংখ্যা থাকে। এরা যেন পরস্পর ‘মুকাবালা’ করে ‘সামনাসামনি দাঁড়ায়’। সহজ কথায় এটাই হলো বীজগণিতের মূলনীতি। এবং আল খাওয়ারিজমির আগে সমীকরণ সমাধানের এত সহজ ও সরল রূপ আর কারো রচনায় পাওয়া যায় না।

    আল খাওয়ারিজমিই প্রথম বীজগণিতের জ্যামিতিক ব্যাখ্যা দেন। আল খাওয়ারিজমির আগে জ্যামিতি এবং এর প্রয়োগ সম্পর্কে মানুষ জেনেছিল। সবাই জানে যে প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতায় জ্যামিতির গোড়াপত্তন ঘটে। মিশরীয় পিরামিডগুলো এখনো মিশরীয়দের গভীর জ্যামিতিক জ্ঞানের সাক্ষ্য বহন করে। ইউক্লিডের ‘এলিমেন্টস’ গ্রন্থটি প্রকাশের পর জ্যামিতি অনন্য উচ্চতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু আল খাওয়ারিজমি জ্যামিতিকে বীজগাণিতিক সমস্যা সমাধানের সত্যতা নিরূপণের উপায় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। ‘কিতাব আল জাবর ওয়াল মুকাবালা’য় তিনি দ্বিঘাত সমীকরণের সমাধান পুনঃপ্রমাণের জন্য জ্যামিতির প্রয়োগ করেন। কাজেই বীজগণিত আবিষ্কারে আল খাওয়ারিজমির গুরুত্ব অস্বীকার করার উপায় নেই। আর এসব বিবেচনায় আল খাওয়ারিজমিকেই বীজগণিতের জনক হিসেবে মেনে নেয়া হয়। সূত্র, সিল্করুট, সফিক ইসলাম।

    ছড়িয়ে দিনঃ

    আপনার মতামত জানানঃ

    State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি।
    Donate
    ইতিহাস

    Related Posts

    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নির্মমতা: এক দুপুরে নিশ্চিহ্ন গোটা শহর

    আরতুগ্রুল গাজী: যার হাত ধরে অটোমান সাম্রাজ্যের সূত্রপাত

    ১২ হাজার বছর আগে পুরুষ আধিপত্যের পূর্বে কেমন ছিল সমাজ

    বিজ্ঞাপন

    সর্বশেষ প্রকাশিত
    ডিসেম্বর ২, ২০২৩

    নভেম্বরে রাজনৈতিক মামলা ১১৫, গ্রেপ্তার ২৬৬৩

    ডিসেম্বর ২, ২০২৩

    যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক প্রতিবেদন: বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে

    ডিসেম্বর ২, ২০২৩

    বাংলাদেশের রাজনৈতিক সঙ্কট দীর্ঘায়িত হবে: দ্য রিও টাইমস

    ডিসেম্বর ২, ২০২৩

    আমেরিকার ভবিষ্যৎ: পতন না পুনরুত্থান?

    ডিসেম্বর ২, ২০২৩

    সমুদ্রের মধ্যে হঠাৎ আবিষ্কার হল উঁচু পর্বতের

    বিজ্ঞাপন

    সর্বাধিক পঠিত
    • কেন কাটা হয়েছিল খনার জিহ্বা?
      নভেম্বর ২৮, ২০২৩
      By ডেস্ক রিপোর্ট
      প্রকৃত নাম লীলাবতি। ইতিহাসে অমর হয়েছেন ‘খনা নামে’। অনেক ইতিহাসবিদের মতে, খনা নামটি পরিচিত হয় জিহ্বা কাটার জন্যই। খনা অর্থ...
    • সমুদ্রের নিচে ধাতব বল, এলিয়েনের তৈরি?
      নভেম্বর ৩০, ২০২৩
      By ডেস্ক রিপোর্ট
      প্রশান্ত মহাসাগরের নিচে এক ধরনের ধাতব বল পাওয়া গেছে। অদ্ভুত রাসায়নিক গঠনের মাধ্যমে এই বলগুলো গঠন হয়েছে। অনেকে মনে করেন,...
    • দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নির্মমতা: এক দুপুরে নিশ্চিহ্ন গোটা শহর
      নভেম্বর ২৮, ২০২৩
      By ডেস্ক রিপোর্ট
      ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো ফ্রান্সেরও একটি নিজস্ব ঐতিহ্য আছে। এই দেশ শিল্প এনেছে, সৃষ্টি এনেছে, বিপ্লব এনেছে। সেই প্রাচীন সময়...
    • আবারও কেন গুঞ্জন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার?
      ডিসেম্বর ১, ২০২৩
      By ডেস্ক রিপোর্ট
      অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হলে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথা আগেই স্পষ্ট করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বব্যাপী শ্রমিক অধিকার...
    • সঙ্গী মারা গেলে কাক আর জোড়া বাঁধে না?
      নভেম্বর ৩০, ২০২৩
      By ডেস্ক রিপোর্ট
      কাক মানুষের অতিপরিচিত এক পাখি। প্রকৃতিতে কাক ও মানুষের সহাবস্থান। তাই কাক নিয়ে মানুষের মাঝে প্রচলিত আছে নানা গল্প, বিশ্বাস।...
    আজকের ভিডিও
    https://youtu.be/3Lbz2-70mvM
    আমাদের সম্পর্কে
    আমাদের সম্পর্কে

    স্টেট ওয়াচ, বাংলাদেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ এবং গবেষণামূলক একটি প্রয়াস।
    বিস্তারিত...

    ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

    Donate Us!
    statewatch.net (Karigor Media Network), Hamburg, Germany. Email: [email protected] © ২০২৩ State Watch. Designed by @.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.