স্যাটেলাইট ডেটা ও রাডারবাহী বিমানের সাহায্যে পূর্ব অ্যান্টার্কটিক মহাদেশের বরফের নীচে অন্তত ১৪ মিলিয়ন বছর ধরে লুকানো একটি প্রাচীন অঞ্চলের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীরা রিমোট সেন্সিং কৌশল ব্যবহার করে ৩২,০০০ বর্গ কিলোমিটার স্থলভাগ জায়গা খুঁজে দেখেন। নেচার কমিউনিকেশনস জার্নালে মঙ্গলবার প্রকাশিত এক সমীক্ষা অনুসারে, তারা অ্যান্টার্কটিক বরফের নিচে মহাদেশটি গঠনের আগে নদীর পলিমাটি দিয়ে সৃষ্ট একটি অঞ্চল খুঁজে পান। ওই অঞ্চম একসময় সবুজ পাহাড় এবং উপত্যকা ঘেরা ছিল।
পূর্ব অ্যান্টার্কটিকার বরফের নিচে ১৪ মিলিয়ন বছরেরও বেশি প্রাচীন এক ভূখণ্ড আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। স্যাটেলাইট ডেটা ও রিমোট সেন্সিং কৌশল ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা সফলভাবে ৩২ হাজার বর্গ কিলোমিটারের (১২ হাজার ৩০০ বর্গ মাইলের সমতুল্য) বিস্তৃত একটি ভূমি ম্যাপ করেছেন। যা বেলজিয়ামের সমান আয়তনের একটি ভূখণ্ড।
মঙ্গলবার বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল নেচার কমিউনিকেশনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ খবর পাওয়া যায়। সিএএন। আবিষ্কৃত ভূখণ্ডটির যুক্তরাজ্যের বর্তমান নর্থ ওয়েলসের পাহাড়ি ভূখণ্ড ও উপত্যকাগুলোর সঙ্গে অনেকটা মিল আছে।
ইংল্যান্ডের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যপক ও প্রধান গবেষণা লেখক স্টুয়ার্ট জেমিসন বলেছেন, এর ইতিহাস, হিমায়িত বরফের নিচে আগে দেখতে কেমন ছিল ও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি কীভাবে বিবর্তিত হয়েছে তা বোঝার জন্য গবেষণাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সিসিএনএনএ’র সাক্ষাৎকারে জেমিসন বলেন, ‘পূর্ব অ্যান্টার্কটিকার বরফের নিচের ভূমিটি মঙ্গলগ্রহের পৃষ্ঠের তুলনায় কম পরিচিত।’
আরও বলেন, ভূখণ্ডটি অ্যান্টার্কটিকার বরফের প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করে। অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়ার উপায় নিয়ন্ত্রণ করে।
জানা যায়, এটি প্রাথমিকভাবে প্রায় ৩৪ মিলিয়ন বছর আগে আকার ধারণ করা শুরু করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি আকারে বিভিন্ন আকৃতি ধারণ করে একটি ভূখণ্ডে রূপ নিয়েছে। গবেষণা অনুসারে, ১৪ মিলিয়ন বছর আগে যখন ভূখণ্ডটির উদ্ভব হয়েছিল তখন পৃথিবীর জলবায়ু আজকের তুলনায় ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেশি ছিল।
জেমিসনের মতে, এই প্রাচীন ভূখণ্ডটির টিকে থাকা দেখে বোঝা যায়, জলবায়ু উষ্ণায়ন সত্ত্বেও মাঝে মাঝে বরফের শিটের গোড়ায় তাপমাত্রা ব্যতিক্রমীভাবে ঠান্ডা ও স্থিতিশীল ছিল।
গবেষণা দল জানে না যে কোনো গাছপালা এবং বন্যপ্রাণীরা একসময় এই অঞ্চলে বাস করত। তবে প্রবাহিত জলের উপস্থিতির মাধ্যমে গবেষকরা জানতে পারেন, এখানে বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ ছিল।
আপনার মতামত জানানঃ