পাকিস্তানে কুমারীত্ব পরীক্ষায় ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ বন্ধে পাঞ্জাব প্রদেশের এক আদালত রায় দিয়েছে। মানবাধিকার কর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবীর মুখে পাঞ্জাবের আদালত এমন রায় দিল। পাকিস্তানের মানবাধিকার সংগঠনগুলোর আশা দ্রুতই পুরো দেশে এই আইন কার্যকর হবে। এদিকে সম্প্রতি পাকিস্তানে ধর্ষণ আইনে অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে। ধর্ষকদের কঠিন শাস্তির জন্য আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। কিন্তু ভার্জিনিটি (কুমারীত্ব) টেস্ট বা টু ফিঙ্গার টেস্ট নিয়ে এতোদিন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোন উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয় নি।
টু ফিঙ্গার টেস্ট অনেক পুরোনো প্রচলিত পরীক্ষা। যেখানে মেডিকেল অফিসার ধর্ষণের পর নারীর যৌনাঙ্গে দুটি আঙুল ঢুকিয়ে কুমারীত্বের পরীক্ষা করেন।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মত, এই ধরনের পরীক্ষার কোন অর্থ নেই। এই পরীক্ষা থেকে ধর্ষণ সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানাও যায় না। বরং নারীকে অপমানই করা হয়। বেশ কিছু মানবাধিকার সংগঠন দীর্ঘ দিন ধরে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছিল। তারই জেরে পাঞ্জাবে একটি আদালতে মামলা করা হয়েছিল। সেই মামলার রায়েই আদালত টু ফিঙ্গার টেস্ট বন্ধের রায় দিয়েছে।
পাকিস্তানে ধর্ষিত নারীদের বহু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। রক্ষণশীল সমাজ ধর্ষিতা নারীদের নানাভাবে অপমান করে। প্রকাশ্যে তাদের ভার্জিনিটি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। বস্তুত সে কারণেই এতদিন পর্যন্ত টু ফিঙ্গার টেস্টের প্রচলন ছিল বলে মানবাধিকার কর্মীদের বক্তব্য। আদালতের রায় সমাজকে এক নতুন পথ দেখাবে বলে তাদের আশা। উল্লেখ্য, জাতিসংঘ ভার্জিনিটি টেস্টকে নারীর জন্য অপমানজনক বলে বিবৃতি দিয়েছিল। ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নে নারীর মানসিক ও শারীরিক অবস্থা এতোটাই সংকটের মধ্যে থাকে যে তার পরিপূর্ণ মানসিক সহায়তা এবং শারীরিক স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি। টু ফিঙ্গার টেস্ট নারীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে ভয়ানকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
জাতিসংঘের এমন বিবৃতির পরেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ২০টি দেশে ধর্ষণের ঘটনায় টু ফিঙ্গার টেস্ট করা হচ্ছে।
আপনার মতামত জানানঃ