ভূমধ্যসাগরীয় দেশ তুরস্কের বুরসার আকাশে বৃহস্পতিবার অদ্ভুত এক বস্তু দেখো গেছে। যেটিকে অনেকে ইউএফও মনে করেছিলেন। তবে এটি কোনো অদ্ভুত বস্তু বা ইউএফও নয়। এটি আসলে মেঘ।
যা লেন্টিকুলার মেঘ হিসেবে পরিচিত। অদ্ভুত বস্তুটি দেখে দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়।
লেন্টিকুলার মেঘ নামে পরিচিত প্রায় বৃত্তকার মেঘের ঢেউয়ের মতো এ গঠনটি সূর্যোদয়ের সময় দেখা যেতে থাকে. আর প্রায় এক ঘণ্টার মতো আকাশে ছিল, এর মাঝখানে বড় একটি গর্তও ছিল।
লেন্টিকুলার মেঘ দেখতে স্থির মনে হয়। কিন্তু তা নয়, এর ভেরত দিয়ে বাতাস প্রবাহিত হতে থাকে। বাতাস বন্ধ হয়ে গেলে মেঘের ভেতর উষ্ণ ও শুষ্ক হয়ে যায়। ফলে মেঘ আর ঘনীভূত অবস্থায় থাকে না। বিলীন হয়ে যায়।
প্রথম দেখায় মনে হতে পারে এ আবার কি? রং তুলির রঙিন আঁচড়ও মনে হতে পারে। লাল-কমলা-হলুদ রঙ মেশানো অদ্ভূত এ দৃশ্য ভাবনায় ফেলবে যে কাউকে। পরাবাস্তবও মনে হতে পারে অনেকের কাছে। এই অদ্ভূত দৃশ্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে সূর্যোদয়ের সময় গোলাপী রঙের মেঘটি প্রথম দেখা যায়। যার মাঝে বড় আকারের গর্ত ছিল। এক ঘণ্টারও বেশি সময় এটি দেখা যায়। ওই সময় অনেকে এটির ছবি তোলেন। এরপর মেঘটি মিলিয়ে যায়।
অদ্ভুত এ মেঘের ছবি প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপর এটি পুরো বিশ্বে ছড়ায়। তুরস্কের আবহাওয়া দপ্তর পরবর্তীতে নিশ্চিত করে এটি একটি লেন্টিকুলার মেঘ।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, লেন্টিকুলার মেঘের আকৃতি বাঁকা হয়। এটি দেখতে উড়ন্ত সস পেনের মতো লাগে। আর এ মেঘ পাওয়া যায় বায়ুমণ্ডলের ২ হাজার থেকে ৫ হাজার মিটার উচ্চতার মধ্যে।
এ ধরনের মেঘ সাধারণত ২০০০ থেকে ৫০০০ মিটারের মধ্যে উচ্চতায় পাওয়া যায়। লেন্টিকুলার মেঘ তৈরি হয় যখন বায়ুমণ্ডলের স্তরটি স্যাচুরেশনের ঠিক ওপরে থাকে, যার অর্থ তারা পাহাড় এবং পর্বতের ওপর প্রবল বাতাসের ওঠানামার ফলে তৈরি হয় যখন বাতাস স্থিতিশীল এবং আর্দ্র থাকে। তারা প্রায়শই শীতকালে গঠন করে, তবে বছরের অন্য সময়ে তাদের দেখা সম্ভব।
সাধারণত পার্বত্য এলাকাগুলোয় বিরল এ প্রাকৃতিক দৃশ্যের দেখা মেলে। তুরস্কের শহর বুরসা মারমারা সাগরের নিকটবর্তী। সাগরের প্রায় আড়াই হাজার মিটার উচ্চতার পর্বত উলুদাগের পাদদেশে শহরটি অবস্থিত। ফলে এমন মেঘ জমার সম্ভাবনা সবসময়ই থাকে এখানে।
দেশটির আবহাওয়া দফতর স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, ঘন মেঘের ওপর সূর্যরশ্মি পড়ায় এমন লাল-কমলা-হলুদ রঙ ধারণ করে মেঘ। এটি লেন্স মেঘের একটি উদাহরণ যা সাধারণত পাহাড়ের ওপর প্রবল বাতাসের ওঠানামার কারণে তৈরি হয় বলেও জানানো হয়। রঙিন মেঘের এ বলয়ের স্থায়িত্ব ছিল অন্তত একঘণ্টা।
সাধারণত শীতকালে এগুলো বেশি গঠিত হয়। তবে বছরের অন্য সময়গুলোতেও এর দেখা মিলতে পারে।
এসডব্লিউএসএস/১৩০০
আপনার মতামত জানানঃ