জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ব্লগার নাজিমুদ্দিন সামাদ হত্যা মামলায় পলাতক আসামি চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়াসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য আগামী ২০ অক্টোবর নতুন দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এ শুনানির দিন ধার্য ছিল। এদিন রাষ্ট্রপক্ষ শুনানি পেছানোর জন্য সময়ের আবেদন করলে ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান তা মঞ্জুর করে এ দিন ধার্য করেন।
অভিযোগপত্রভুক্ত ছাড়া আসামি হলেন রশিদ উন নবী, মোজাম্মেল হোসাইন সায়মন, আরাফাত রহমান ও মো. শেখ আবদুল্লাহ, সৈয়দ জিয়াউল হক, মো. ওয়ালি উল্লাহ ওরফে ওলি, সাব্বিরুল হক চৌধুরী ওরফে কনিক, মাওলানা জুনেদ আহম্মেদ ওরফে জুনায়েদ ও আকরাম হোসেন। তাদের মধ্যে রশিদ, মোজাম্মেল, আরাফাত ও আবদুল্লাহ কারাগারে আছেন।
ট্রাইব্যুনালের, বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) গোলাম ছারোয়ার খান জাকির সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আজ এ মামলার অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য ছিল। তবে কারাগারে থাকা চার আসামি আদালতের কাছে আবেদন করেন, তাদের মামলা পরিচালনার জন্য আইনজীবী নিয়োগ করবেন। এ জন্য সময় চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করেন। এরপর আদালত নতুন দিন ঠিক করেন।
নথি থেকে জানা গেছে, গত ১৭ জানুয়ারি মেজর জিয়াসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্র আমলে নেন আদালত। একইসঙ্গে পলাতক পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি পলাতক ৫ জনের সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দেন আদালত।
২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র নাজিমউদ্দিন ক্লাস শেষে গেন্ডারিয়ার মেসে ফেরার পথে লক্ষ্মীবাজারের একরামপুর মোড়ে হামলার শিকার হন। দুর্বৃত্তরা চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে তাকে হত্যা করেন। হত্যার পর দুর্বৃত্তরা দুটি মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যান। ওই ঘটনায় সূত্রাপুর থানায় মামলা হয়। ওই মামলায় ২০২০ সালের ২০ আগস্ট সৈয়দ জিয়াউল হকসহ নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এ মামলায় গ্রেপ্তার চার আসামির সবাই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গ্রেপ্তার আসামিরা জানিয়েছেন, অনলাইনে লেখালেখির কারণে নাজিমউদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
২০১৬ সালের অক্টোবরে রশিদ উন নবী গ্রেপ্তারের পর ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) তৎকালীন প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেছিলেন, নাজিমউদ্দিনকে হত্যার আগে তিন মাস ধরে পরিকল্পনা করে আনসার আল ইসলাম। নাজিমউদ্দিন মেসে থাকতেন। তাই তাকে সেখানে গিয়ে খুন করা সম্ভব নয় বলে যাওয়া-আসার পথে খুন করার সিদ্ধান্ত নেয় জঙ্গিগোষ্ঠীটি। ওই বছরের ৬ এপ্রিল রাতে পাঁচজন মিলে নাজিমউদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যা করেন।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/২০৩০
আপনার মতামত জানানঃ