কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সমগ্র ইউরোপ। করোনা মহামারির কবলে পড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ইতালিও বাড়াবাড়ি সংক্রমণ এড়াতে বড়দিনের আগে ও পরে লকডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এছাড়া ইউরোপের আরও কিছু দেশ লকডাউনের দিকে এগোচ্ছে।
ইতালিতে বড়দিনেও সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী অগুরুত্বপূর্ণ দোকানপাট, রেস্তোরা বন্ধ থাকবে। নাগরিকরা শুধুমাত্র কাজ, চিকিৎসা এবং জরুরি প্রয়োজনে বাইরে যেতে পারবেন। বাড়িতে অতিথি যাতায়াত রাখতে হবে সীমিত।
কোভিড ১৯ এর সংক্রমনে ইউরোপে সবচেয়ে বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে ইতালিতে, মারা গেছে ৬৮ হাজার মানুষ। ইতালির প্রধানমন্ত্রী জোসেফ কন্তে লকডাউনের সিদ্ধান্তকে “মোটেও সহজ সিদ্ধান্ত নয়” বলে অভিহিত করেন । তিনি আরও বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য খাতের বিশেষজ্ঞরা খুবই উদ্বেগের সাথে জানাচ্ছেন, বড়দিনের সময় সংক্রমন খুব বেশি বাড়তে পারে; কাজেই আমাদের পদক্ষেপ নিতেই হচ্ছে। এ মাসের শেষের দিকেই শুরু হচ্ছে টিকা দেয়ার প্রক্রিয়া। প্রধানমন্ত্রী তাই নতুন করে আসার আলো দেখছেন। কন্তে মনে করছেন যে এর মধ্য দিয়ে ‘এ দুঃসময়ের সমাপ্তির সুচনা ঘটবে’।
ইতালিতে পুরো দেশেই কার্যকর থাকবে রেডজোনের বিধিনিষেধ। ২৪ থেকে ২৭ ডিসেম্বর, ৩১ ডিসেম্বর থেকে ৩ জানুয়ারী এবং ৫ থেকে ৬ জানুয়ারী পর্যন্ত দেশজুড়ে লকডাউনের বিধিনিষেধ বহাল থাকবে। এ সময় মানুষজন শুধুমাত্র কাজ, জরুরি প্রয়োজন ও চিকিৎসাসংক্রান্ত কারনে বাইরে যেতে পারবে। একটি বাসায় সর্বোচ্চ অতিথি সংখ্যা দুইজন এবং বয়স ১৪ এর কম হতে পারবে না । এছাড়াও রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত কারফিউ জারি থাকবে।
তবে ২৮ থেকে ৩০ ডিসেম্বর এবং ৪ জানুয়ারী বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল থাকবে । মানুষজন বাইরে বের হতে পারলেও বন্ধই থাকছে রেস্তোরা, বার।
লকডাউনের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে জোট সরকারের নেতাদের মধ্যে মতবিরোধ জন্ম নেয়। কেউ চেয়েছিলেন পরিপূর্ণ লকডাউন, কেউ আবার মত দিয়েছেন আংশিক লকডাউনের পক্ষে যাতে ব্যবসায়িক কার্যক্রম অব্যাহত রাখা যায়।
বড়দিনকে সামনে রেখে ইউরোপের আরও কিছু দেশে লকডাউন আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নেদারল্যান্ডস ও জার্মানি জানুয়ারী পর্যন্ত লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে । তবে বড়দিনের সময় বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করা হবে জার্মানিতে। এসময় অতিথি আগমনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সংখ্যা চারজন নির্ধারিত করা হয়েছে। বড়দিনের পর থেকে তৃতীয় বারের মত লকডাউনে যাচ্ছে অস্ট্রিয়া, ২৬ ডিসেম্বর থেকে অগুরুত্বপূর্ণ দোকানপাট বন্ধ থাকবে এবং মানুষজনের চলাচল সীমিত থাকবে।
সুইডেনে আগের নিয়মে পরিবর্তন এনে নতুন নির্দেশে বলা হয়েছে, ব্যস্ত সময়ে যানবাহনে চলাচলের সময় মাস্ক পরিধান করতে হবে । এছাড়া রেস্তোরায় একটি টেবিলে ৮ জনের পরিবর্তে বসতে পারবে ৪ জন এবং রাত ৮টার পরে এলকোহল বিক্রি বন্ধ থাকবে।
যুক্তরাজ্য দেশব্যাপী আরেকটি লকডাউন এড়ানোর আশা করলেও সেখানে বেড়েছে করোনা সংক্রমন।
এসডব্লিউ/কেএফএইচ/২১২০
আপনার মতামত জানানঃ