পাকিস্তানে সাংবাদিকদের ঘরে ঘরে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে বলে জানা গেছে। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর কথিত অভিযোগে একটি নিউজ চ্যানেলের কর্মীদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালিয়েছে ইসলামাবাদ পুলিশ।
করাচির দক্ষিণাঞ্চল সহ বিভিন্ন এলাকায় এই অভিযান চালানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ইসলামাবাদ পুলিশের মুখপাত্র। এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় অনলাইন সংবাদ মাধ্যম দ্য প্রিন্ট।
পাকিস্তানের সংবাদ মাধ্যম দ্য ডনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করাচিতে একটি নিউজ চ্যানেলের ছয় কর্মীকে গ্রেপ্তারের জন্য পরিচালিত এই অভিযান নিরর্থক প্রমাণিত হয়েছে। তারা সবাই পালিয়ে গিয়েছে বলে জানা গেছে।
ইসলামাবাদ পুলিশের মুখপাত্র বলেন, নিউজ চ্যানেলের ছয়জন স্টাফ সদস্যকে গ্রেপ্তার করতে করাচিতে অভিযান চালানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে রাজি হননি।
যে বাড়িগুলোতে অভিযান চালানো হয়েছে তার বেশিরভাগ দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে কয়েকটি নির্জন জায়গায় অবস্থিত ছিল।
ইসলামাবাদ পুলিশ বলেছেন, অভিযানের পরে তারা করাচি থেকে ইসলামাবাদের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে।
করাচিতে একটি নিউজ চ্যানেলের ছয় কর্মীকে গ্রেপ্তারের জন্য পরিচালিত এই অভিযান নিরর্থক প্রমাণিত হয়েছে।
ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) বিভিন্ন নেতা ও নিউজ চ্যানেলের কিছু কর্মীকে পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে জড়িত বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এর আগে পাকিস্তান সরকার সমালোচক টিভি চ্যানেল ‘এআরওয়াই’ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ তথ্য প্রচারের অভিযোগ এনে চ্যানেলটি বন্ধ করে দেয় ‘পাকিস্তান ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া রেগুলেটরি অথরিটি’।
এদিকে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে, জাতীয় রাজনীতিতে সামরিক বাহিনীর কথিত ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলার জন্য বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ভীতি প্রদর্শনের মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তানে ভিন্নমতের জায়গা সংকুচিত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নজরদারি এবং ঐতিহ্যবাহী গণমাধ্যমগুলোর স্বাধীনতা হরণের অভিযোগ রয়েছে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে। গণমাধ্যমগুলো বলছে, ওপর মহল থেকে চাপ থাকায় তারা সেল্ফ–সেন্সরশিপ আরোপ করে কাজ করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, কোনও রাষ্ট্র যদি নিজেকে গণতান্ত্রিক দাবি করে, তবে সেখানে গণমাধ্যমের একশভাগ স্বাধীনতা থাকতেই হবে। যে গণমাধ্যম সরকারের সমালোচনা করবে, সেই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আবার সেই সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে। জনসাধারণের কথাই উঠে আসে গণমাধ্যমে। তাই এই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত না করতে পারলে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৭১২
আপনার মতামত জানানঃ