প্রোপাগান্ডামূলক এই ছবিগুলো উত্তর কোরিয়া আমেরিকা এবং পশ্চিমাদের কীভাবে দেখে তার সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। তারা ১৯৫০ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর এর মধ্যে সিনচন বেসামরিকদের গণহত্যার চিত্র চিত্রায়ণ করে।
সরকার দাবি করে যে, প্রায় ৩৫,০০০ বেসামরিক লোক সেই সময়ে মার্কিন বাহিনীর দ্বারা নির্মমভাবে নির্যাতন ও খুন হয়েছিল। দুঃস্বপ্নের মতো এসব ছবিগুলোতে দেখা যায় সৈন্যরা দাঁত বের করছে, মাথার খুলি খোদাই করছে এবং মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে দিচ্ছে।
১৯৫০ সালে কোরিয়ান যুদ্ধের সময় উত্তর কোরিয়া যখন তার প্রতিপক্ষ দক্ষিণ কোরিয়া আক্রমণ করে, তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার ওপর প্রায় ৬,৩৫,০০০ টন বিস্ফোরক ফেলেছিল, যার মধ্যে ৩২,০০০ টন ছিল নেপালম।
যদিও এই আক্রমণ উত্তর কোরিয়ার আগ্রাসনকে আরও উস্কে দিয়েছিল। দেশটির তৎকালীন নেতা কিম ইল-সুং দ্রুত বুঝতে পেরেছিলেন যে আমেরিকা প্রদত্ত এই ভয় দ্রুত তার নাগরিকদের জীবনে একটি প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে।
এই ভয় তার জনগণকে পঙ্গু করে দেওয়ার পরিবর্তে, কিম এটিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার এবং তার শাসনকে সমর্থন করার হাতিয়ার বানানোর সিদ্ধান্ত নেন। তার সরকার গণহত্যার জন্য আমেরিকাকে রক্তপিপাসু খুনিদের নরক হিসাবে উত্তর কোরিয়ার জনগণের মাঝে একটি দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে চেয়েছিল।
১৯৫৩ সালে যখন উত্তর কোরিয়ার বাহিনী নিজ দেশে ফিরে আসে এবং আমেরিকাও তাদের বাহিনী প্রত্যাহার করে নেয়, তখন কিম তার জনগণের মধ্যে ভীতি তৈরি করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই চিত্রগুলো ব্যবহার করতে থাকেন, যাতে তিনি সুবিধা নিতে পারেন। যুদ্ধের পরে, উত্তর কোরিয়া শাসন ক্ষমতা বজায় রাখার জন্য, আমেরিকাকে বীভৎস হিসাবে উপস্থাপন করে ছবিগুলো ব্যবহারের ফলে মূলত আরেকটি সংঘাতে জড়ানোর জন্য উস্কানি বলা চলে।
এই ভয়কে প্রসারিত করতে এবং আরও বাড়িয়ে তুলতে, উত্তর কোরিয়ার সরকার সিনচনে গণহত্যার স্মরণে আমেরিকার নৃশংসতার নিদর্শনস্বরূপ ‘সিনচন মিউজিয়াম’ও তৈরি করে।
ছবি ও লেখা: https://rarehistoricalphotos.com/
এসডব্লিউ/কেএইচ/১৮৩৫
আপনার মতামত জানানঃ