বাংলাদেশে ১১ টন অস্ত্র নিয়ে আসার সময় গ্রীসের উত্তরাঞ্চলে একটি কার্গো বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। আন্তোনভ-১২ মডেলের বিমানটিতে যেসব অস্ত্র ও গোলা-বারুদ ছিল তার মধ্যে রয়েছে ল্যান্ড মাইনও।
ফলে ওই এলাকার ২ কিলোমিটারের মধ্যে থাকা সকল বাসিন্দাদের বাড়ির মধ্যে অবস্থানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এর আগে স্থানীয় সময় শনিবার সার্বিয়া থেকে জর্ডান যাওয়ার পথে কার্গো বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
সূত্র মতে, বিশাল কার্গো বিমানে ক্রুসহ আটজন আরোহী ছিলেন এবং তারা সকলেই নিহত হয়েছেন। বিমানটি ইউক্রেনীয় কার্গো এয়ারলাইন মেরিডিয়ানের হলেও এখন পর্যন্ত এই দূর্ঘটনার সঙ্গে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
গ্রিসের ইআরটি রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম জানিয়েছে, প্লেনটি ১২ টন ওজনের মালামাল বহন করছিল। ইঞ্জিনের সমস্যার কারণে পাইলট কাভালা বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণের অনুরোধ করেছিলেন কিন্তু রানওয়েতে পৌঁছানোর আগেই সেটি বিধ্বস্ত হয়। এই দূর্ঘটনায় বিমানটির ৮জন ইউক্রেনীয় ক্রু নিহত হয়েছেন।
সার্বিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয় বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছে যে গ্রীসে বিধ্বস্ত পরিবহন বিমানটি বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের ক্রয় করা ১১.৫ টন সামরিক সরঞ্জাম পরিবহন করছিলো যার মধ্যে রয়েছে আর্টিলারী শেল সহ বিভিন্ন রকমের বিস্ফোরক।
সার্বিয়ার সামরিক অস্ত্র রপ্তানিকারী প্রতিষ্ঠান ভ্যালির ট্রেডের মাধ্যমে এ সকল অস্ত্র ও গোলোবারুদ বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছিলো।
ঘটনাস্থলে আগুনের তীব্রতা ও বিষাক্ত গ্যাসের কারনে গ্রীসের ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এলাকাটিকে ঘিরে রেখেছেন, দেশটির দূর্যোগ মন্ত্রনালয়ের কর্মীরা বিশেষ ব্যবস্থায় বিধ্বস্ত কার্গোর বিস্তারিত যাচাই করে দেখছেন।
বিমানটির যাত্রা পথে জর্দানের রিফুয়েলিং এর পরিকল্পনা থাকায় ধারনা করা হয়েছিলো এতে জর্দানেরও সামরিক সরঞ্জাম ছিলো, কিন্তু সার্বিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয় নিশ্চিত করেছে ১১.৫ টন রসদই ছিলো বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর জন্যে।
এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর আজ আইএসপিআরের পরিচালক আবদুল্লাহ ইবনে জায়েদ প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিরক্ষা ক্রয় মহাপরিদপ্তর (ডিজিডিপি) ক্রয় চুক্তির আওতায়, কার্যাদেশপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সার্বিয়া থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জন্য ক্রয়কৃত প্রশিক্ষণ মর্টার শেল বহনকারী একটি বিমান গ্রিসে বিধ্বস্ত হয়েছে। আইএসপিআর জানায়, ‘ওই চালানে কোনো অস্ত্র ছিল না এবং চালানটি বিমার আওতাভুক্ত।’
এক প্রত্যক্ষদর্শী ইআরটিকে জানান, বিকট শব্দ শোনার পর তিনি বাইরে গিয়ে দেখেন প্লেনটির ইঞ্জিনে আগুন ধরে গেছে।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে সাতটি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছে কিন্তু ক্রমাগত বিস্ফোরণের কারণে তারা দুর্ঘটনাস্থলের কাছে যেতে পারেনি। ফায়ার ব্রিগেডের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, ‘আমরা কার্গোটিকে বিপজ্জনক বলে বিবেচনা করছি’।
খবরে জানানো হয়, বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর সেখানে বিশাল আগুনের গোলক দেখেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। রোববার সকালে ড্রোনের মাধ্যমে ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করা হয়। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জানানো হয়েছে, ঘটনাস্থলে অভিযান চালানো নিরাপদ কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছে সেনাবাহিনী, বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ এবং গ্রীক পরমাণু শক্তি কমিশনের কর্মকর্তারা।
সার্বিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নেবোজা স্টেফানোভিচ বলেছেন, কার্গো বিমানটি ল্যান্ড মাইনসহ ১১ টন সার্বিয়ার তৈরি অস্ত্র বাংলাদেশে নিয়ে যাচ্ছিল।
ঢাকার চূড়ান্ত গন্তব্যে পৌঁছানোর আগে এটি জর্ডান, সৌদি আরব ও ভারতে যাত্রাবিরতি করার কথা ছিল। দেশটির কর্মকর্তারাও জানিয়েছেন যে, কার্গো বিমানটিতে ল্যান্ড মাইনসহ ১১ টন অস্ত্র ছিল।
গ্রীসের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইউক্রেন ভিত্তিক এয়ারলাইন দ্বারা পরিচালিত আন্তোনভ অ্যান-১২ কার্গো বিমানটি সার্বিয়া থেকে জর্ডান যাচ্ছিল। ইঞ্জিনে সমস্যার কারণে পাইলট জরুরি অবতরণের অনুরোধ করেছিলেন কিন্তু বিমানের সিগন্যাল হারিয়ে ফেলে।
ইঞ্জিনের ত্রুটি দেখা দেয়ায় পাইলট কাভালা বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণের অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু রানওয়েতে আর পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
গ্রিসের ইআরটি রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম জানিয়েছে, প্লেনটি ১২ টন ওজনের মালামাল বহন করছিল। ইঞ্জিনের সমস্যার কারণে পাইলট কাভালা বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণের অনুরোধ করেছিলেন কিন্তু রানওয়েতে পৌঁছানোর আগেই সেটি বিধ্বস্ত হয়। এয়ারক্রাফটের বোর্ডে অন্তত ৮ জন ছিলেন ধারণা করা হচ্ছে।
এক প্রত্যক্ষদর্শী ইআরটিকে জানান, বিকট শব্দ শোনার পর তিনি বাইরে গিয়ে দেখেন প্লেনটির ইঞ্জিনে আগুন ধরে গেছে।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে সাতটি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছে কিন্তু ক্রমাগত বিস্ফোরণের কারণে তারা দুর্ঘটনাস্থলের কাছে যেতে পারেনি। ফায়ার ব্রিগেডের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, ‘আমরা কার্গোটিকে বিপজ্জনক বলে বিবেচনা করছি’।
ইআরটি সম্প্রচারমাধ্যমকে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “২২:৪৫ (১৯: ৪৫ জিএমটি) এর দিকে বিমানের ইঞ্জিনের শব্দে আমি হতভম্ব হয়ে যাই। বাইরে গিয়ে দেখি ইঞ্জিন জ্বলছে।” প্রত্যক্ষদর্শীরাও বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন বলে জানানো হয়েছে কয়েকটি গণমাধ্যমের খবরে।
বিমানটির আছড়ে পড়া সরাসরি দেখেছেন সেখানকার বাসিন্দা আমিলিয়া সাপতানোভা। তিনি বলেন, তখন রাত ১১ টা বাজে প্রায়। তিনি বলেন, বিস্ফোরণের পর ওই এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। প্রথমে আমি ভেবেছিলাম আমাদের বাড়ির উপরে এটি আছড়ে পড়তে যাচ্ছে। বিস্ফোরণের পর বিকট শব্দে চারদিক কেঁপে ওঠে।
এটি পাহাড়ের উপর দিয়ে উড়ে এসে মাঠের মধ্যে বিধ্বস্ত হয়। অল্প সময়ের মধ্যেই অনেকগুলো গাড়ি এসে পৌছায় ঘটনাস্থলে। তবে সেখানে অব্যাহতভাবে বিস্ফোরণ চলতে থাকায় কেউ কাছাকাছি যেতে পারেনি।
এসডব্লিউ/এসএস/১৮৪৫
আপনার মতামত জানানঃ