দৈনিক আমাদের নতুন সময় পত্রিকার কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি হাসিবুর রহমান রুবেলের হত্যার ঘটনার তদন্ত করতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে)।
বুধবার(১৩ জুলাই) নিজেদের ওয়েবসাইটে এক প্রতিবেদনে এ দাবি জানিয়েছে সিপিজে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রুবেলের নিখোঁজ ও মৃত্যুর বিষয়ে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে এবং দ্রুত তদন্ত করতে হবে, তাকে তার কাজের জন্য হত্যা করা হয়েছে কি না তা নির্ধারণ করতে হবে এবং অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের হত্যার ঘটনাগুলো বিচার না হওয়ার যে রেকর্ড, সেখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
রুবেল কুষ্টিয়া জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, স্থানীয় দৈনিক কুষ্টিয়ার খবর পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এবং দৈনিক আমাদের নতুন সময় পত্রিকার কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি ছিলেন। তিনি থাকতেন কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং-এর এ ব্লক এলাকায়।
সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রুবেলের নিখোঁজ ও মৃত্যুর বিষয়ে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে এবং দ্রুত তদন্ত করতে হবে, তাকে তার কাজের জন্য হত্যা করা হয়েছে কি না তা নির্ধারণ করতে হবে এবং অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৩ জুলাই রাত নয়টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের সিঙ্গার মোড়ে ‘কুষ্টিয়ার খবর’ নামের পত্রিকা অফিসে ছিলেন হাসিবুর। সেখানে তিনি ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তখন ফোনে একটি কল পেয়ে অফিস থেকে বের হয়ে যান। অফিস সহকারীকে বলে জানান দ্রুতই ফিরবেন। কিন্তু এর পর থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তার মফোনটিও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। এ ঘটনায় কুষ্টিয়া মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করে তার পরিবার।
এর চার দিন পর ৭ জুলাই দুপুরে কুমারখালী পৌরসভার তেবাড়িয়া এলাকায় নির্মাণাধীন গোলাম কিবরিয়া সেতুর নিচে গড়াই নদ থেকে হাসিবুরের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ৮ জুলাই রাতে হাসিবুর রহমানের চাচা মিজানুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে কুমারখালী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
সিপিজের ‘গ্লোবাল ইমপিউনিটি ইনডেক্স-২০২১’ অনুসারে বিশ্বে সাংবাদিক হত্যার বিচার না হওয়া দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১১তম।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে-ই সুযোগ পাচ্ছে সে-ই সাংবাদিকদের উপর নির্যাতন করছে৷ সেটা যে শুধু সরকারি দলের লোক তা নয়, ব্যবসায়ীরা করছে, অর্থশালীরা করছে৷ আসলে সাংবাদিকদের খবরটি যাদের বিরুদ্ধে যাচ্ছে, তারাই এটা করছে৷
তারা মনে করেন নির্যাতনকারীদের কঠোর শাস্তি হলে বারবার নির্যাতনের ঘটনা ঘটতো না৷
তারা বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি এই জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী৷ বিচারের জন্য বছরের পর বছর ঘুরতে হচ্ছে৷ এই যে সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের ১২ বছরে পুলিশ ৮৯ বার আদালত থেকে সময় নিয়েছে, অথচ খুনিদের ধরতে পারেনি৷ বিচারহীনতার এই সংস্কৃতিটাই সাংবাদিকতা পেশাকে আরো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে৷
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৫০৮
আপনার মতামত জানানঃ