পাকিস্তানের রাজধানী করাচিতে দক্ষিণ কোরিয়ার মোবাইল ফোন নির্মাতা স্যামসাং দ্বারা স্থাপন করা একটি বিলবোর্ডের বিরুদ্ধে মুহাম্মদকে ‘অপমান’ করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পর বিক্ষোভে মুখর হয়ে উঠেছে রাজধানী।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে’র খবরে জানা যায়, করাচির এক শপিং মলের বাইরে স্যামসাংয়ের স্থাপিত একটি ডিভাইস থেকে নবী মুহাম্মদকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য ভেসে ওঠার অভিযোগ ওঠে। তাতেই ক্ষোভের আগুনে জ্বলে ওঠে শহরটির বাসিন্দারা।
প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করেন বহু মানুষ। ভেঙে ফেলা হয় মুঠোফোন নির্মাতা সংস্থাটির বিলবোর্ড। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
বিক্ষোভের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শপিং মল থেকে ওয়াই-ফাই ডিভাইসটি সরিয়ে ফেলে পুলিশ।
হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পুলিশ করাচি থেকে স্যামসাং পাকিস্তানের ২৭ জনকে আটক করেছে।
ওই ঘটনার পর এক বিবৃতিতে স্যামসাং পাকিস্তান বলছে, তারা ‘ধর্মীয় অনুভূতির ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা’ বজায় রেখে চলে এবং এ ঘটনায় তদন্ত শুরুর কথাও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
আসলে কোন ঘটনা প্রেক্ষিতে করাচি এমন সহিংস বিক্ষোভ হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। জানা গেছে, সেখানকার স্টার সিটি মলে শুক্রবার একটি ওয়াইফাই ডিভাইস বসানো হয়। সেটি থেকেই নাকি ধর্ম অবমাননাকর মন্তব্য করা হয়। দ্রুতই তা আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সহিংস বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে।
তবে আরেক বর্ণনায় বলা হয়েছে, মোবাইল কোম্পানিটির একটি কিউআর কোডকে কেন্দ্র করে এই সহিংস বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে। ওই কিউআর কোডের মাধ্যমে মহানবীকে অপমান করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকারকর্মীরা বলেন, ব্লাসফেমির অভিযোগ খুবই উদ্বেগজনক৷ কেননা, অভিযুক্ত ব্যক্তি সহিংসতার ঝুঁকিতে পড়ছেন৷ ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলে ব্লাসফেমি আইনের প্রয়োগ বাড়ছে উল্লেখ করে উস্কানিমূলক ঘটনা বন্ধে দেশটির নেতৃত্বের প্রতি আহবান জানিয়েছেন তারা৷
তারা বলেন, পাকিস্তানের ইসলাম ধর্মাবলম্বী সংখ্যাগরিষ্ঠদের ধর্মীয় সংবেদনশীলতা রক্ষার লক্ষ্যে অস্পষ্টভাবে প্রণীত ব্লাসফেমি আইনগুলোর পুলিশ এবং বিচার বিভাগ নির্বিচারে প্রয়োগ করছে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অনেক দেশেই ‘ব্লাসফেমি’, ‘ধর্মীয় অবমাননা’ এবং ‘ধর্মত্যাগ’ শাস্তিযোগ্য অপরাধ৷ বাস্তবে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক শত্রুতা, জমি নিয়ে বিরোধের ক্ষেত্রেও হাতিয়ার করা হয় এসব আইনকে৷
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৭৩৯
আপনার মতামত জানানঃ