ভয়াবহতা কাটিয়ে বেরিয়ে এলেও মহামারী হাত থেকে পুরোপুরি মুক্তি মেলেনি চীনের। যে কারণে এ বার বিমানকর্মীদের উপরও কড়া বিধিনিষেধ চীনের। বিমানের কেবিন কর্মীদের ডিসপোজেবল অর্থাৎ ব্যবহারের পর ফেলে দেওয়া যায় এমন ডায়পার পরার নির্দেশ দিয়েছে সে দেশের বেসামরিক বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সংক্রমণ ঠেকাতে বিমানে শৌচালয়ের ব্যবহার এড়িয়ে যাওয়ার জন্যই এই নির্দেশ।
করোনা কালে সংক্রমণের হাত থেকে নিস্তার পেতে বিমানবন্দর এবং বিমান সংস্থাগুলির জন্য ৩৮ পাতার নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। তাতে পিপিই কিট-সহ ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য যে যে সতর্কতা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে, তাতেই কেবিন কর্মীদের ডায়পার পরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, সংক্রমণ এড়াতে হলে বিমানে শৌচালয়ে যাওয়া এড়াতে হবে। খুব প্রয়োজন না পড়লে বিমানের শৌচালয় থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, বিমানকর্মী, কেবিন কর্মী, বিমানবন্দরের কর্মীদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও নজর রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একেবারে সামনের সারিতে রয়েছেন বিমানকর্মীরা। তাঁদের মানসিক অবস্থা কী, বাড়ির কোনও সমস্যা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন কি না, তা জানার চেষ্টা করতে হবে। আন্তর্জাতিক বিমানে দায়িত্ব দেওয়ার আগে কর্মীদের মানসিক অবস্থা, পরিবারের অবস্থা এবং সামাজিক নিরাপত্তার মতো দিকগুলি খতিয়ে দেখতে হবে।
কোভিডের হাত থেকে রেহাই পেতে বিমানের কেবিনকে ক্লিন এরিয়া, বাফার জোন, যাত্রীদের বসার জায়গা এবং কোয়রান্টাইন এলাকা, এই চার ভাগে ভাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ডিসপোজেবল পর্দা লাগিয়ে প্রত্যেকটি এলাকাকে অন্যটির চেয়ে আলাদা রাখতে হবে। বিমানের শেষের দিকের তিনটি সারি ইমার্জেন্সি কোয়রান্টিন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
ডায়পার ছাড়াও কর্মীদের জন্য মাস্ক, চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত রবার দিয়ে তৈরি দ্বি-স্তরীয় গ্লাভস, চোখ ঢাকা রাখার চশমা, ডিজপোজবল টুপি, জামাও বরাদ্দ করতে বলা হয়েছে বিমানসংস্থাগুলিকে। জুতো মুড়ে রাখার ব্যবস্থাও করতে বলা হয়েছে। তবে এই সব বিধিনিষেধ আপাতত শুধুমাত্র চার্টার বিমানের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কেবিন কর্মীদের ডায়পার পরার নির্দেশ দেওয়া হলেও, তাদের কাজকর্মের তদারকিতে থাকা বিমান কর্মীদের শুধুমাত্র মাস্ক এবং চশমা পরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
করোনার প্রকোপ কাটিয়ে চীনে বিমান পরিষেবা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। অধিকাংশ আন্তর্জাতিক বিমান বন্ধ থাকলেও অন্তর্দেশীয় বিমান চলাচল স্বাভাবিক সেখানে। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই তাই এমন বিধিনিষেধ।
আপনার মতামত জানানঃ