সুমিত রায়
ইসলামে রোযা ও ঈদ-উল-ফিতরের উৎস্য
উইলিয়াম সেইন্ট ক্লেয়ার টিসডালের গ্রন্থ “দ্য অরিজিনাল সোর্সেস অফ দ্য কুরান”-এ মুসলিমদের রোযা ও ঈদের উৎস সম্পর্কে তথ্য পেলাম। বইটির ৩১-৩২ পৃষ্ঠায় উল্লিখিত দুটো অনুচ্ছেদের অনুবাদ করে দিলাম এখানে…
“সাবিয়ানদের সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান সামান্য, কিন্তু আমাদের উদ্দেশ্যের জন্য যথেষ্ট। একজন প্রারম্ভিক আরবি লেখক, আবু ইসা’ল মাগরিবি (Abu ‘Isa’l Maghribi) (আবু’ল ফিদা কর্তৃক উদ্ধৃত) এদের সম্পর্কে নিম্নলিখিত বিবরণ দিয়েছেন, “এরা সিরীয়রা জাতিসমূহের মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন এবং আদম ও তার পুত্ররা তাদের ভাষায় কথা বলত। তারা বলে যে তারা সেথ (Seth) ও ইদ্রিস (ইনোক) (Idris (Enoch)) এর কাছ থেকে তাদের ধর্মটি পেয়েছিল। তাদের কাছে একটি কিতাব রয়েছে যা তারা সেথের দান বলে উল্লেখ করে এবং তারা এটিকে ‘সেঠের কিতাব’ বলে অভিহিত করে। এতে ভাল নৈতিক বিধানগুলি লিপিবদ্ধ করা হয়েছে, যেমন সত্য-কথা বলা এবং সাহসের নির্দেশ দেওয়া এবং অপরিচিতকে সুরক্ষা দেওয়া এবং সেই সাথে মন্দ অনুশীলনগুলি উল্লেখ করা হয়েছে এবং সেগুলো থেকে বিরত থাকার আদেশ দেওয়া হয়েছে। সাবিয়ানদের কিছু ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ছিল, যার মধ্যে সাতটি নির্দিষ্ট প্রার্থনার সময় ছিল, যার মধ্যে পাঁচটি মুসলমানদের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ষষ্ঠটি হচ্ছে ভোরের দিকে নামায এবং সপ্তমটি হচ্ছে রাতের ষষ্ঠ ঘন্টার শেষের নামায। মুসলমানদের মতো তাদের প্রার্থনাতেও সত্যিকারের আন্তরিকতার প্রয়োজন এবং উপাসক উপাসনার সময় অন্য কোন কিছুর প্রতি তার মনোযোগ বিচ্যুত করতে পারে না। তারা মৃতদের উপর সিজদা না করে প্রার্থনা করত এবং ত্রিশ দিন রোযা রাখত। আর যদি নতুন চাঁদের মাস সংক্ষিপ্ত হতো, তবে তারা ঊনত্রিশ দিন পর্যন্ত রোযা রাখতো। উপবাসের মাসের শেষে তার ফিতর (মাসের শেষে উপবাস ভঙ্গ) ও হিলালের (নতুন চাঁদ) উৎসব পালন করত। এই উৎসবের দিনটি তখন হতো যখন সূর্য মেষ রাশিতে প্রবেশ করে। তারা রাতের চতুর্থ চতুর্থাংশ থেকে সূর্যের অস্ত যাওয়া পর্যন্ত উপবাস করত। এবং পাঁচটি গ্রহের অবতরণের সময়ও তারা উৎসব পালন করত। এই পাঁচটি গ্রহ হল শনি, বৃহস্পতি, মঙ্গল, শুক্র এবং বুধ। এবং তারা কাবা বা মক্কার বংশকে সম্মান করত।” (আবু’ল ফিদা, আত তাওয়ারিকহু’ল কাদিমাহ (Abu’l Fida, At Tawarikhu’l Qadimah) (প্রাক ইসলামী ইতিহাস), পৃ. ১৪৮)।
এই বিবরণ থেকে আমরা স্পষ্টভাবে দেখতে পাই যে মুসলমানরা এই অস্পষ্ট সম্প্রদায় সাবিয়ানদের কাছ থেকে অনেক ধর্মীয় অনুশীলনই ধার নিয়েছে, যেগুলো ইসলামী ইতিহাস অনুসারে মুহম্মদ গ্যাব্রিয়েল বা জিব্রাইল ফেরেশতার কাছ থেকে শিখেছেন। উদাহরণস্বরূপ, মুসলমানদের রমজানের রোজা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত এক মাসে স্থায়ী হবার ব্যাপারটি, যদিও রোজার সময়ের শুরু ও শেষের সঠিক মুহুর্তটি সম্পর্কিত নিয়মটি নেয়া হয়েছিল ইহুদিদের থেকে। পারস্য এবং অন্যান্য কিছু দেশে, পবিত্র মাসে প্রতিটি দিনের উপবাসের শুরু এবং শেষ ঘোষণা করার জন্য ভোর ও সূর্যাস্তের সময় গান ফায়ার করা হতো। মাস শেষে ফিতরের উৎসব এখনও মুসলিমদের দ্বারা উদযাপিত হয়। তারা প্রতিদিন পাঁচবার নামায পড়ে, কিন্তু তারা প্রতিদিন আরও দুবার ঐচ্ছিক নামাযও পড়তে পারে। এভাবে সাবিয়ানদের মতো তারা সাতবার নামায পড়তে পারে। মুসলিমরা ইবাদতের সময় রুকু ও সিজদা করা হয়, ইসলামী নিয়ম মতেই, কিন্তু দাফনের সময় নামাযের সময় মুসলিমরা সিজদা দেয়না, এটাও সাবিয়ান প্রভাবিত। পরিশেষে আমরা দেখেছি যে মুসলমানরা এখনও কাবাকে সবচেয়ে বেশি সম্মান করে। অবশ্যই এটা সম্ভব যে এই সমস্ত অনুশীলন কুরাইশ উপজাতির পাশাপাশি সাবিয়ানদের ক্ষেত্রেও সাধারণ ছিল। এগুলো থেকে এটাই ধরতে হয় যে ইসলামের অনেক ধর্মীয় রীতিই সাবিয়ানদের থেকে ধার করা, এবং সাবিয়ান ধর্ম ইসলাম ও তার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছিল। এখানে আরেকটি ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হলো, যখন তাইফ ও মক্কার বনি জাধিমাহ্ খালিদের কাছে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হলো, তখন তারা দুঃখে চিৎকার করে বলেছিল, “আমরা সাবিয়ান হয়ে গেলাম”। সাবিয়ান ধর্মের সাথে ইসলামের সাদৃশ্যের জন্যই তারা এমনটা বলে থাকবে।”
সাবিয়ান
এক্ষেত্রে সাবিয়ানদের (Sabians) সম্পর্কে কিছু আলোচনা করে নিতে হয়। সাবিয়ানরা একটি ধর্মীয় গোষ্ঠী ছিল কুরআনে যাদের উল্লেখ ইহুদী ও খ্রীষ্টানদের সাথে গ্রন্থের লোক বা পিপল অফ দ্য বুক হিসাবে তিনবার উল্লেখ করা হয়েছে। কিছু সুন্নি হাদিসে তাদেরকে ইসলামে ধর্মান্তরিত হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। তাদের পরিচয়কে একটি “অমীমাংসিত কুরআনের সমস্যা” বলা হয়। সময়ের সাথে সাথে গোষ্ঠীর পরিচয় এবং ইতিহাসের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। সাবিয়ানদের নিয়ে আলোচনা ও তদন্ত পরবর্তী ইসলামী সাহিত্যে প্রকাশিত হতে শুরু করে। প্রারম্ভিক ঐতিহাসিকরা সাবিয়ানদের ম্যান্দিয়ান বা এলসেসাইটস বলে মনে করতেন, এবং ড্যানিয়েল চুলসন, চার্লস জি. হ্যাবার্ল, সিনাসি গুন্ডুজ এবং অন্যরা ম্যান্ডিয়ানদের সাথে সাবিয়ানদের এক করে দেখতেন। অন্যরা সাবিয়ানদেরকে নোয়াহ্ এর অনুসারী হিসেবে চিহ্নিত করে। একইভাবে ম্যান্ডিয়ানরাও নিজেদেরকে নোয়াহ্ এর সরাসরি বংশধর বলে দাবি করে। বর্তমান ইরাক ও ইরানে, সাবিয়ানরা তাদের নবী জন দ্য ব্যাপটিস্ট (ইয়াহিয়া ইবনে জাকারিয়া) এর শিক্ষা অনুসরণ করে। তাদের প্রায়শই সাবিয়ান-মান্দাইয়ান হিসাবে উল্লেখ করা হয় এবং বাপ্তিজম বা অভিসিঞ্চন এই ধর্মের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান। তারা একেশ্বরবাদী ও তাদের পবিত্র গ্রন্থ হলো গিঞ্জা রাব্বা। সাবিয়ান নবীদের মধ্যে আছেন অ্যাডাম, সেথ, নোয়াহ্, শেম এবং জন ব্যাপটিস্ট। আদম ধর্মটির প্রতিষ্ঠাতা এবং জন সর্বশ্রেষ্ঠ এবং চূড়ান্ত নবী।
চার্লস জি. হ্যাবারলের বলেন, “নিও-ম্যান্ডাইক শব্দ “Ṣabi” এর অর্থ হলো “বাপ্টিজম” বা অভিসিঞ্চন, আর সাবিয়ান শব্দের ব্যুৎপত্তিও সেখান থেকেই।” ইরাক ও ইরানে মান্ডিয়ানরা তাদের অ-মান্দিয়ান প্রতিবেশীদের কাছে সাধারণত ‘সাবিয়ান’ নামে পরিচিত, কথ্যভাষায় অবশ্য তারা সুব্বা হিসাবে পরিচিত, যার অর্থ ‘বাপ্তিস্মকারীরা’, এই শব্দটিও সাবি শব্দের সাথে সম্পর্কিত। অ্যান্ড্রু ফিলিপ স্মিথ উল্লেখ করেছেন যে ‘s-b’ রুটটি একটি ম্যান্ডেইক ক্রিয়া থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ ‘ডুব দেওয়া’, আর এটাও সেই বাপ্টিজম সম্পর্কিত। অবশ্য বাপ্টিজমের প্রচলিত ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করে ও সিরিয়াক উৎপত্তির ধারণাটি বজায় রেখে জুডিহ সিগাল (১৯৬৩) দাবি করেন, Ṣābi’ūn শব্দটি হিন্দু দেবতা “শিব” থেকে উদ্ভূত। অবশ্য এই দাবির পেছনে তেমন সমর্থন নেই। এগুলো ছাড়াও “সাবিয়ান” দ্বারা ধর্মত্যাগকারীও বোঝায় বলে দাবি করা হয়, এবং মুহাম্মদকেও “সাবিয়ান” বলা হতো, কেননা তিনি তার ট্রাইবের বিশ্বাসকে পরিত্যাগ করেছিলেন। এর দ্বারা নিজেদের বিশ্বাস পরিত্যাগ করেছেন কিন্তু ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়নি এমন লোকদেরও বোঝানো হতো বলে দাবি করা হয়। সেক্ষেত্রে শব্দটি “হানিফ” এর সাথে সম্পর্কিত, যেখানে হানিফ বলতে জাহেলিয়াতের যুগে ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়নি, কিন্তু একেশ্বরবাদী ও ইব্রাহীমের নীতিতে বিশ্বাসী এমন লোকদের বোঝানো হয়, মুহম্মদ নিজেও মুসলিম হবার আগে হানিফ ছিলেন বলা হয়।
কুরআনে তিনটি স্থানে সাবিয়ানদের সম্পর্কে সংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে, আর হাদিসে তারা কারা ছিল সে সম্পর্কে আরও বিশদ বিবরণ প্রদান করা হয়েছে। কোরানে তাদের সম্পর্কে উল্লেখগুলো হলো –
- নিঃসন্দেহে মুসলিম, ইহুদি, খ্রিস্টান ও সাবিয়ানরা, অর্থাৎ যারাই আল্লাহ ও শেষ দিবসে বিশ্বাস করে ও সৎকার্য করে, তাদের জন্য প্রভুর কাছে পুরস্কার আছে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিত হবে না। [কুরআন ২:৬২]
- নিঃসন্দেহে মুসলিম, ইহুদী, সাবিয়ান ও খ্রীষ্টানরা- যারা আল্লাহ্ তে ও আখেরাতের দিনে ঈমান আনে এবং সৎকাজ করে, তাদের জন্য কোনো ভয় নেই, আর তারা অনুতাপও করবে না। [কুরআন ৫:৬৯]
- নিঃসন্দেহ মুসলিম, ইহুদী, সাবিয়ান, খ্রীষ্টান, মাগী এবং মুশরিকরা (যারা আল্লাহ্ এর সাথে (কোন দেবতার) শরীক করেছিল) — আল্লাহ্ কিয়ামতের দিন তাদের সকলের মধ্যে ফয়সালা করে দেবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব কিছুর উপর সাক্ষী। [কুরআন ২২:১৭]
কোরান ছাড়া ইসলামিক সূত্রগুলো থেকে আমরা সাবিয়ানদের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য পাই –
- মেসোপটেমিয়ার মুসলিম বিজয়ের শুরুতে, মান্দিয়ানদের নেতা, আনুশ বার ডানকা, মুসলিম কর্তৃপক্ষের সামনে উপস্থিত হন, তাদের মান্ডিয়ান পবিত্র গ্রন্থ গিনজা রাব্বার একটি অনুলিপি দেখান এবং প্রধান মান্দিয়ান নবীকে জন দ্য ব্যাপটিস্ট হিসাবে ঘোষণা করেন, যাকে ইয়াহিয়া ইবনে জাকারিয়া নামেও কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে। ফলস্বরূপ, মুসলিম খিলাফত তাদের কুরআনের সাবিয়ান এবং আহলে কিতাবের লোক হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে।
- অন্যান্য ধ্রুপদী আরবি উৎসগুলির মধ্যে ইবনে আল-নাদিমের ফিহরিস্ত (৯৮৭ খ্রিস্টাব্দ) রয়েছে, যেখানে মোগতাসিলাহ (“মুগতসিলা”, বা “self-ablutionists”) সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে। এরা হলো দক্ষিণ মেসোপটেমিয়ার একটি সাবিয়ান সম্প্রদায় যারা মান্ডিয়ান হিসেবে চিহ্নিত। আল-বিরুনি (খ্রিস্টীয় একাদশ শতাব্দীর শুরুতে লেখা) বলেছিলেন যে “প্রকৃত সাবিয়ানরা” ছিল “ইহুদি উপজাতিদের অবশিষ্টাংশ”, যারা বাবিলনিয়াতে রয়ে গিয়েছিল যখন অন্যান্য উপজাতিরা সাইরাস এবং আর্টাক্সসের আমলে জেরুজালেমে চলে গিয়েছিল। ই. এস. ড্রোয়ার (১৯৩৭) এর মতে, এই অবশিষ্ট উপজাতিগুলি … ম্যাগিজম এবং ইহুদিধর্মের মিশ্রণে মিশ্রিত একটি ধর্মীয় রীতি গ্রহণ করেছিল।
- আবু ইউসুফ আবশা আল-কাদির মতে, ৮৩০ খ্রিষ্টাব্দে বাগদাদের খলিফা আল-মামুন তার সেনাবাহিনীর সাথে হাররানের দরজায় দাঁড়িয়ে ছিলেন এবং হাররানীয় হার্মেটিসিস্টদের জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে তারা কোন জিম্মি ধর্মের অন্তর্গত। যেহেতু তারা মুসলিম, খ্রিস্টান, ইহুদি বা মাগিয়ান ছিল না, তাই খলিফা তাদের বলেছিলেন যে তারা অবিশ্বাসী। তিনি বলেছিলেন যে বাইজেন্টাইনদের বিরুদ্ধে তার সমরাভিযান থেকে ফিরে আসার সময় তাদের মুসলিম হতে হবে, অথবা কুরআন দ্বারা স্বীকৃত অন্য ধর্মের অনুসারী হতে হবে বা তিনি তাদের হত্যা করবেন। হ্যারানীয়রা একজন আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করেছিল, যিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন তারা ‘সাবিয়ান’ পরিচয় গ্রহণ করলে তাদের সহ্য করা হবে। “সাবিয়ান” বলতে কী বোঝায় তারা তা জানতো না, তবে তারা কেবল এই পরিচয়টি গ্রহণ করেছিল। হাররানের পৌত্তলিক (হার্মেটিক) লোকেরা ইসলামের জিম্মিদের দলভূক্ত হবার জন্য নিজেদের সাবিয়ান হিসেবে পরিচয় দিয়েছিল। কুরআনে সাবিয়ানদের উল্লেখ করা হয়েছিল, কিন্তু তারা ছিল সেই দল যারা নোয়াহ্ বা নূহের উত্তরসুরি ছিল এবং জন দ্য বাপ্টিস্টকে অনুস্মরণ করে ম্যান্ডিয়ান (একটি নস্টিক ধর্ম) নামে পরিচিত ছিল। তারা হয়তো নিজেদের ধর্মীয় বিশ্বাস ধরে রাখার জন্য নিজেদেরকে সাবিয়ান হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। এই নতুন উদ্ভুত হারানিয়ান সাবিয়ানরা তাদের গ্রিক দেবতা হার্মিস ট্রাইসমেগিস্টাসকে তাদের নবী এবং হার্মেটিকাকে তাদের পবিত্র পাঠ্য হিসাবে স্বীকৃতি দেয়, এবং হার্মেটিসিস্টদের একটি নতুন গ্রুপ হয়ে ওঠে। একজন নবী হিসাবে দেবতা হার্মিসের বৈধতা আসে কুরআনে (১৯.৫৭ এবং ২১.৮৫) ইদ্রিস (অর্থাৎ ইনোক) হিসাবে তার নতুন পরিচয় প্রদানের মাধ্যমে। যাইহোক, হ্যারানিয়ান সাবিয়ানদের এই বিবরণটি হাররানের সাবিয়ানদের নিয়ে উল্লেখ করা পূর্ববর্তী রেকর্ডগুলির অস্তিত্বের সাথে মেলে না। উসামাহ ইবনে আইদ, ৭৭০ খ্রিস্টাব্দের আগেই (তার মৃত্যুর বছর) হাররান যে অঞ্চলে অবস্থিত সেখানে সাবিয়ানদের একটি শহরের কথা উল্লেখ করেছেন। আইনজ্ঞ আবু হানিফা (যিনি ৭৬৭ খ্রিষ্টাব্দে মারা যান) তার দুই শিষ্যর সাথে হররানীয় সাবিয়ানদের আইনী অবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন বলে রেকর্ড করা হয়েছে।
- আব্বাসীয় খিলাফতের সময় সাবিয়ান-মান্দাইয়ানরা বাগদাদ এবং বাকি আরব বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল; মহান পণ্ডিত এবং বিজ্ঞানের প্রধান উৎস হিসাবে কাজ করার পাশাপাশি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবন গঠনে তাদের অবদান ছিল। সাবিয়ান-মান্দিয়ানদের মধ্যে সবচেয়ে বিশিষ্ট ছিলেন থাবিট ইবনে কুররা, কিন্তু সেই সাথে আবু ইসা’হক আল-সাবির মতো আরও অনেকে বিশিষ্ট লোকও সাবিয়ান-মান্ডিয়ান ছিলেন।
- তাফসির ইবনে কাথিরে আছে, “সাবিয়ানদের পরিচয় নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে”। এটির সাথে মুজাহিদ, ইবনে আবি নাজিহ, ‘আতা’ এবং সাঈদ বিন জুবায়েরের মতামত সম্পর্কিত, যারা সাবিয়ানদেরকে “মাজুস, ইহুদি এবং খ্রিস্টানদের অন্তর্ভূক্ত” বলেছনে, কিন্তু এও বলেছেন যে “তাদের কোন নির্দিষ্ট ধর্ম নেই, যা তারা অনুসরণ করে এবং প্রয়োগ করে”, কারণ তারা “তাদের ফিতরা (সহজাত প্রকৃতি) অনুযায়ী বাস করত।” তাফসির অনুসারে, সাবিয়ানরা জাবুর (গীতসংহিতা) পড়ে, ফেরেশতা বা তারাদের উপাসনা করে, এবং তারা কোনও নবীর কাছ থেকে কোনও বার্তা পায়নি।
অনৈস্লামিক সূত্রগুলো থেকেও আমরা সাবিয়ানদের সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য পাই –
- ইহুদি পণ্ডিত মাইমোনাইডস (১১২৫-১২০৪) দ্য নাবাতিয়ান এগ্রিকালচার বইটি অনুবাদ করেছিলেন, যা তিনি সাবিয়ানদের বিশ্বাসের একটি সঠিক রেকর্ড বলে মনে করতেন। তিনি বলেন, সাবিয়ানরা প্রতিমাপূজা অনুশীলনগুলো এবং নাবাতীয় এগ্রিকালচার গ্রন্থে উল্লিখিত অন্যান্য কুসংস্কারে বিশ্বাস করত। তিনি তার গাইড ফর দ্য পারপ্লেক্সড (১১৮৬-১১৯০) গ্রন্থে পৌত্তলিক সাবিয়ানদের সম্পর্কে যথেষ্ট বিশদ বিবরণ দিয়েছিলেন।
- বাহাই বিশ্বাসের সাহিত্যেও সাবিয়ানদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই রেফারেন্সগুলি সাধারণত সংক্ষিপ্ত, এখানে সাবিয়ানদের দুটি গোষ্ঠীর বর্ণনা দেয়া হয় : “যারা তারার নামে প্রতিমার উপাসনা করে ও মনে করে যে তাদের ধর্ম সেথ এবং ইদ্রিসের কাছ থেকে এসেছে” (হাররনিয়ান হার্মেটিসিস্টগণ), এবং অন্যরা “যারা জকারিয় এর পুত্রকে (জন দ্য ব্যাপটিস্ট) বিশ্বাস করত এবং মরিয়মের পুত্রের (যীশু খ্রীষ্ট) আবির্ভাবকে গ্রহণ করেনা” (ম্যান্দিয়ান)। আব্দুল-বাহা সংক্ষেপে সেথকে “আদমের পুত্রদের” একজন হিসেবে বর্ণনা করেছেন। বাহা’উল্লাহ একটি ফলকলিপিতে ইদ্রিসকে হার্মিস ট্রিসমেগিস্টাসের সাথে চিহ্নিত করেছেন। তবে তিনি ইদ্রিসকে সাবিয়ানদের নবী হিসেবে বিশেষভাবে উল্লেখ করেননি। কখনও কখনও সাবিয়ানদেরকে বাহাই ধর্মে পুর্ববর্তী ধর্মগুলোর একটি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বাহা’ই রচনা “সিক্রেটস অফ ডিভাইন সিভিলাইজেশন”-এ আব্দুল-বাহা উল্লেখ করেন, সাবিয়ানরা যুক্তিবিজ্ঞানের ভিত্তিতে অবদান রেখেছিলেন। সম্ভবত তিনি হার্মেটিসিস্টদের সাথে সাবিয়ানদের গুলিয়ে ফেলেছিলেন।
- সিরিয়াক খ্রিস্টান, এবং পরে মসুলে ফরাসি ভাইস-কনসাল, নিকোলাস সিওফি ১৮৮০ সালে তার প্যারিসে প্রকাশিত Études sur la religion des Soubbas ou Sabéens, leurs dogmes, leurs moeurs গ্রন্থে দাবি করেছেন যে, তারা মান্দাইয়ান জনসংখ্যার মধ্যে ৪,০০০ সাবিয়ানকে চিহ্নিত করেছেন। সিওফির কাজটি থিওসোফিস্ট জি আর এস মিড গ্রহণ করেছিলেন, তবে পণ্ডিতরা এই অনুমান এবং স্টাডির সমালোচনা করেছিলেন।
- লেয়ার্ড তার ভ্রমণ ডায়েরিতে একজন “ভ্রমণকারী রৌপ্যকারের” সাথে সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করেছেন, যিনি “সাবিয়ান বা সেন্ট যোহনের খ্রীষ্টান” ছিলেন। তিনি অনুমান করেছিলেন যে সেই সময়ে শুশতার এবং বসরায় প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ টি সাবিয়ান পরিবার বাস করত। তিনি সাবিয়ানদের তুর্কি ও পারস্য কর্তৃপক্ষের নিপীড়নের শিকার হওয়ার কথাও উল্লেখ করেন।
- একবিংশ শতাব্দীর পন্ডিতরা সাবিয়ানদের মান্দাইয়ান বা হারারানিয়ান হার্মেটিকিস্ট হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। জাক্লো হামিন-অ্যান্টিলা (২০০২, ২০০৬) উল্লেখ করেছেন যে দক্ষিণ ইরাকের জলাভূমি অঞ্চলে, মান্দিয়ান ধর্মের একটি ধারাবাহিক ঐতিহ্য ছিল, এবং আরেকটি পৌত্তলিক, বা “সাবিয়ান” ধর্ম ছিল সেখানে যা দশম শতাব্দীতে হাররানকে কেন্দ্র করে বিকশিত হয়। এই পৌত্তলিক “সাবিয়ানদের” (হার্মেটিসিস্ট) সম্পর্কে ইবনে ওয়াহশিয়ায়ার নাবাতাইয়ান কর্পাসে উল্লেখ করা হয়েছে।
বর্তমান ইরাক ও ইরানে সাবিয়ানরা হল তারা যারা ব্যাপটিস্ট জনের শিক্ষা অনুসরণ করে। তারা হল মান্দাইয়ান (বা সাবিয়ান-মান্ডিয়ান)। তারা তাদের বিশ্বাস ও ট্রাইবাল বন্ধনের অভাবের কারণে ২০০৩ সালে ইরাক আক্রমণের পর থেকে সহিংসতার ঝুঁকিতে রয়েছে এবং ২০০৭ সালে তাদের সংখ্যা ৫,০০০ এরও নিচে চলে যায়। আগ্রাসনের আগে, মান্দাইয়ানদের সর্বোচ্চ ঘনত্ব ছিল আমারাহ, নাসিরিয়া এবং বসরায়। এই দক্ষিণাঞ্চল এবং ইরানের আহওয়াজ ছাড়াও, বাগদাদে প্রচুর সংখ্যক ম্যান্দিয়ানদের পাওয়া গেছে, যা তাদের টাইগ্রিস নদীতে সহজেই প্রবেশাধিকারের সুযোগ করে দিয়েছে। আজকে তারা মূলত বাগদাদের আশেপাশে বাস করে, যেখানে তাদের মহাযাজক বাস করেন, যিনি ধর্মীয় সেবাসমূহ ও বাপ্টিজম পরিচালনা করেন। কেউ কেউ বাগদাদ থেকে কুর্দিস্তানে চলে গেছে, যেখানে তারা তুলনামূলক নিরাপদে বাস করে।
ম্যান্দিজম
মান্দিজম (Mandaeism) বা সাবিয়ানিজম হলো একটি নস্টিক, একেশ্বরবাদী ও এথনিক ধর্ম। এর অনুসারীরা, অর্থাৎ ম্যান্দিয়ানরা আদম, আবেল, সেথ, নোয়াহ্ শেম, আরাম, ও বিশেষ করে জন দ্য বাপ্টিস্টকে ভক্তি করেন। মান্দিয়ানরা আদম, সেথ, নোয়াহ্, শেম ও জন দ্য বাপ্তিস্টকে নবী মনে করে, যেখানে আদম হলো ধর্মটির প্রবর্তক এবং জন দ্য বাপ্তিস্ট হচ্ছেন শেষ ও সবচেয়ে মহান নবী। ম্যন্দিয়ানরা মান্ডাইক (Mandaic) নামে ইস্টার্ন আরামায়িক ভাষায় কথা বলে। মান্দিয়ান নামটা আরামাইক manda শব্দ থেকে এসেছে, যার অর্থ “জ্ঞান”। মধ্য প্রাচ্যে তাদের সম্প্রদায়ের বাইরের লোকেদের কাছে তারা আরবি শব্দ সুব্বা (Ṣubba) বা সাবিয়ান নামে পরিচিত, শব্দটি আরামাইক রুট s-b থেকে এসেছে যা বাপ্টিজম এর সাথে সম্পর্কিত। এই সুব্বা শব্দটি যে নিও-ম্যান্ডাইক শব্দ Ṣabi এর কগনেট তা আগেই বলা হয়েছে। কোরানে সাবিয়ানদের তিনবার উল্লেখ করা হয়েছে। মান্দিয়ানদের অনেক সময়ে সেইন্ট জনের খ্রিস্টান বলে উল্লেখ করা হয়।
জোরুন্ন জে বাকলি এবং অন্যান্য পণ্ডিতদের মতে, মান্দিয়ানরা প্রায় দুই হাজার বছর আগে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল অঞ্চলে উদ্ভূত হয়েছিল এবং পরবর্তীতে নিপীড়নের কারণে পূর্ব দিকে চলে যায়। অন্যরা দক্ষিণ-পশ্চিম মেসোপটেমিয়ার এদের উৎপত্তি বলে দাবি করেন। যাইহোক, কিছু পন্ডিত মনে করেন যে মান্দিজম পুরানো এবং প্রাক-খ্রিস্টীয় সময়ে উদ্ভুত। মান্দিয়ানরা দাবি করে যে তাদের ধর্ম ইহুদিধর্ম, খ্রীষ্টধর্ম এবং ইসলামকে একটি একেশ্বরবাদী বিশ্বাসের পূর্ববর্তী। তাদের মতে তারা মেসোপটেমিয়ায় নোয়াহ্ এর পুত্র শেমের সরাসরি বংশধর। তারা এও বিশ্বাস করে যে তারা জেরুজালেমে জন দ্য ব্যাপটিস্টের মূল নাসোরিয়ান মান্দিয়ান শিষ্যদের সরাসরি বংশধর।
এই বিশ্বাসের মূল মতবাদটি নাসিরুথা (Nāṣerutā) (নাসোরিয়ান নসিস বা ডিভাইন উইসডম) (নাসোরীয়বাদ বা নাজোরেনিজম নামেও পরিচিত), যার অনুসারীদের নাসোরায়ি (নাসোরীয় বা নাজোরিনস) বলা হয়। এই নাসোরীয়রা তারমিদুতা (যাজক) এবং মান্দাইউতা (লেইটি বা সাধারণ জনগণ)-তে বিভক্ত। মান্দাইউতা নামটি এসেছে জ্ঞান বা মান্দা শব্দ থেকে। এছাড়াও মান্দিজম শব্দটির উৎস যা তাদের সমগ্র সংস্কৃতি, আচার- অনুষ্ঠান, বিশ্বাস এবং বিশ্বাসকে অন্তর্ভুক্ত করে যা নাসেরুতার মতবাদের সাথে যুক্ত। মান্দিজমের অনুসারীদের মান্দিয়ান বলা হয়, তবে নাসোরিয়ানস (নাজোরিনস), নস্টিকস (জ্ঞানের জন্য গ্রিক শব্দ gnosis ব্যবহার করে) বা সাবিয়ানও বলা যেতে পারে।
ধর্মটি মূলত নিম্ন কারুণ, ইউফ্রেটিস এবং টাইগ্রিস এবং শাত-আল-আরব জলপথ, দক্ষিণ ইরাকের অংশ এবং ইরানের খুজেস্তান প্রদেশের অংশ ঘিরে থাকা নদীগুলির চারপাশে অনুশীলন করা হয়। বিশ্বব্যাপী, ৬০ থেকে ৭০ হাজার মান্দিয়ান আছে বলে মনে করা হয়। ইরাক যুদ্ধের আগ পর্যন্ত এদের প্রায় সবাই ইরাকে বসবাস করতো। ২০০৩ সালে ইরাক আক্রমণ এবং পরবর্তীতে মার্কিন সশস্ত্র বাহিনীর দখলদারিত্বের কারণে সৃষ্ট অশান্তি এবং চরমপন্থীদের দ্বারা সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সাথে সম্পর্কিত বৃদ্ধির কারণে অনেক মান্দিয়ান ইরাকে তাদের বসতি ছেড়ে পালিয়ে গেছে। ২০০৭ সালের মধ্যে ইরাকের মান্দিয়ানদের জনসংখ্যা প্রায় ৫,০০০-এ নেমে আসে।
মান্দিয়ানরা তীব্রভাবে পৃথক এবং প্রাইভেট হিসেবে রয়ে গেছে। তাদের এবং তাদের ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞানসমূহ প্রাথমিকভাবে বহিরাগতদের কাছ থেকে এসেছে: বিশেষ করে জুলিয়াস হাইনরিখ পিটারম্যান নামক একজন প্রাচ্যবাদী, ১৮৮৭ সালে মসুলের ফ্রেঞ্চ ভাইস কনসাল নিকোলাস সিওফি নামক একজন সিরিয়ান খ্রিস্টান, এবং ব্রিটিশ সাংস্কৃতিক নৃতত্ত্ববিদ লেডি ই. এস. ড্রোয়ারের থেকে এসেছে। ১৬৫০-এর দশকের ফরাসি ভ্রমণকারী জ্যঁ-ব্যাপটিস্ট ট্যাভারনিয়ার এদের নিয়ে একটি বৃত্তান্ত লেখেন যা খুব বায়াসড ও সংস্কারাচ্ছন বৃত্তান্ত ছিল।
তথ্যসূত্র
ইসলামে রোযা ও ঈদ–উল–ফিতরের উৎস্য
- William St. Clair Tisdall, The Original Sources of the Qu’ran (1905)
- Abu’l Fida, At Tawarikhu’l Qadimah
সাবিয়ান
- Á’ín-i Sábi’ín by Rúhu’lláh Mihrábkháni, Institute for Baháʼí Studies, Ontario, Canada, 1994
- Bernard Lewis, The Jews of Islam, 1987
- Buck, Christopher (1984). “The identity of the Ṣābiʼūn”
- Zaman, Muhammad Qasim (1997), Religion and Politics Under the Early ‘Abbasids: The Emergence of the Proto-Sunni Elite
- Elukin, Jonathan (October 2002). “Maimonides and the Rise and Fall of the Sabians: Explaining Mosaic Laws and the Limits of Scholarship”. Journal of the History of Ideas
- Daniel Chwolson, Die Ssabier und der Ssabismus (Sabians and Sabianism), 1856, I, 112; II, 543,
- Drower, Ethel Stephana (1960). The secret Adam, a study of Nasoraean gnosis (PDF). London UK: Clarendon Press.
- Drower, Ethel Stefana. The Mandaeans of Iraq and Iran. Oxford At The Clarendon Press, 1937
- Häberl, Charles G. (2009), The neo-Mandaic dialect of Khorramshahr, Otto Harrassowitz Verlag
- Sabah, Zaid (27 September 2007). “Sabian sect keeps the faith”. USA Today
- Al-Saadi, Qais; Al-Saadi, Hamed (2019). Ginza Rabba (2nd ed.)
- Brikhah S. Nasoraia (2012). “Sacred Text and Esoteric Praxis in Sabian Mandaean Religion”
- Smith, Andrew Phillip (16 August 2016). John the Baptist and the Last Gnostics: The Secret History of the Mandaeans. Watkins Media Limited
- Buckley, Jorunn Jacobsen (2002), The Mandaeans: ancient texts and modern people (PDF), Oxford: Oxford University Press,
- Ibn al-Nadim. al-Fihrist
- Poonawala, Ismail K. (1990). The History of al-Tabari-Volume IX The Last Years of the Prophet. State University of New York Press.
- Bahá’u’lláh (1994) [1873–92]. Tablets of Bahá’u’lláh Revealed After the Kitáb-i-Aqdas. Wilmette, Illinois, USA: Baháʼí Publishing Trust
মান্দিজম
- Häberl, Charles G. (2009), The neo-Mandaic dialect of Khorramshahr, Otto Harrassowitz Verlag, ISBN 978-3-447-05874-2
- Buckley, Jorunn Jacobsen. 2002. The Mandaeans: Ancient Texts and Modern People. Oxford: Oxford University Press.
- Buckley. J.J. “Mandaeans” in Encyclopædia Iranica
- Drower, Ethel Stefana. 2002. The Mandaeans of Iraq and Iran: Their Cults, Customs, Magic Legends, and Folklore (reprint). Piscataway, NJ: Gorgias Press.
- Porter, Tom (22 December 2021). “Religion Scholar Jorunn Buckley Honored by Library of Congress”. Bowdoin. Retrieved 10 January 2022.
- Issam Khalaf Al-Zuhairy (1998). “A Study of the Ancient Mesopotamian Roots of Mandaean Religion” (Doctoral dissertation). University of Manchester.
- Rudolph, Kurt (1977). “Mandaeism”. In Moore, Albert C. (ed.). Iconography of Religions: An Introduction. Vol. 21. Chris Robertson. ISBN 9780800604882.
- Edmondo, Lupieri (2004). “Friar of Ignatius of Jesus (Carlo Leonelli) and the First “Scholarly” Book on Mandaeaism (1652)”. ARAM Periodical. 16 (Mandaeans and Manichaeans): 25–46. ISSN 0959-4213.
- Häberl, Charles G.; McGrath, James F. (2019). The Mandaean Book of John: Text and Translation (PDF). Open Access Version. Berlin/Boston: De Gruyter.
- Thaler, Kai (March 9, 2007). “Iraqi minority group needs U.S. attention”. Yale Daily News.
- Crawford, Angus (4 March 2007). “Iraq’s Mandaeans ‘face extinction'”. BBC News.
- Deutsch, Nathaniel (6 October 2007). “Save the Gnostics”. The New York Times.
- Tavernier, J.-B. (1678). The Six Voyages of John Baptista Tavernier. Translated by Phillips, J
- Foerster, Werner (1974). Gnosis: A Selection of Gnostic texts. Vol. 2. Oxford University Press. p. 126. ISBN 9780198264347.
আপনার মতামত জানানঃ