করোনা ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে করোনা মুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে কোনটি বেশি কার্যকরী? স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরির মাধ্যমে করোনা মুক্ত হওয়া, না কি ভ্যাকসিনের মাধ্যমে করোনাকে ঠেকিয়ে রাখ, কোনটা ভাল পদ্ধতি? এই নিয়ে অনেক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি মডার্ণা এবং ফাইজার ভ্যাকসিনের কার্যকারীতা প্রকাশ পেতেই নানা মহলে নানা মত জানান হয়েছে।
মার্কিন সেনেটর পল যেমন জানিয়েছেন ভ্যাকসিনের কার্যকারীতা ৯০ শতাংশ থেকে ৯৫ শতাংশ, সেখানে স্বাভাবিক ভাবে যারা করোনা মুক্ত হচ্ছে সেই কার্যকারীতা ৯৯.৯৯ শতাংশ। অর্থাৎ ভ্যাকসিনের থেকে অনেকাংশে ভাল। উল্লেখ্য এই সেনেটর নিজেও করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন।
যদিও সেনেটরের এই লজিক মানতে নারাজ টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিউনোলজিস্ট জেনিফার গোমেরম্যান। তিনি জানিয়েছেন স্বাভাবিক ভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হওয়া এবং করোনার মত ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে সুস্থ হওয়া নিঃসন্দেহে ভাল। কিন্তু এর সঙ্গে ভ্যাকসিনের তুলনা হয় না। এখনও পর্যন্ত ভ্যাকসিন সুরক্ষিত। এমনকী নতুন করে করোনা আক্রমণের সম্ভাবনাও অনেকটা কমিয়ে দেয় ভ্যাকসিন।
এখন প্রশ্ন উঠতে পারে ভ্যাকসিনের কার্যকারীতা নিয়ে। একটি নির্দিষ্ট শতাংশের মানুষের মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়ে গেলে ভ্যাকসিনের প্রয়োজন সেখানে অনেকটাই কম হয়। তবে, পরীক্ষা বলছে করোনার ক্ষেত্রে কিন্তু মানবদেহে নিজের থেকে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে স্বল্প সংখ্যক। কোভিড-১৯ ভাইরাসের মতো রোগ প্রতিরোধে যা যথেষ্ট নয়। এক্ষেত্রে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন। তা হল (১) কতটা পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে, (২) সেগুলি ‘নিউট্রিলাইজিং অ্যান্টিবডি’ কি না? কারণ এই ‘নিউট্রিলাইজিং অ্যান্টিবডি’রাই আদতে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখে। সেরোলজিকাল সার্ভে কিন্তু সেই তথ্য দিচ্ছে না।
যদিও সেনেটারের দাবি স্বাভাবিক ভাবে যারা করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠছেন তাঁরা অনেক বেশি ক্ষমতাবান এবং সেটাই ভাল উপায়। সেক্ষেত্রে দেহে নিজের থেকেই অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে। তিনি এও বলেন যে ভ্যাকসিন দিলে তা বছরের পর বছর ধরে কার্যকরী ভূমিকা নেবে এমন কথাও কোথাও বলা হয়নি। এমনকী ভ্যাকসিন নিলে পুনসংক্রমণ হবে না তেমনটাও নয়।
তবে কি ভ্যাকসিনের প্রয়োজনীয়তা নেই? বিজ্ঞানীরা বলছেন অবশ্যই আছে। রোগ আসার আগেই ভ্যাকসিন নিলে সুরক্ষিত থাকার সুযোগ রয়েছে অনেকটাই।
[soliloquy id=”2368″]
এসডব্লিউ/নসদ/১৩১৫
আপনার মতামত জানানঃ