খুলনার তেরখাদায় জোড়া খুনের মামলায় জামিন জালিয়াতির ঘটনায় ৭ আসামির জামিন বাতিল করে ১০ দিনের মধ্যে তাদের আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। আত্মসমর্পণ না করলে তাদের গ্রেফতার করার পদক্ষেপ নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জামিন আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে গতকাল রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি এম আতোয়ার রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। এ সময় আদালত প্রশ্ন করে, এভাবে কোর্টের সঙ্গে প্রতারণা করলে আমরা বিচার করব কীভাবে? আদেশে জামিন জালিয়াতিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে হাই কোর্টের রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে জালিয়াতিতে আইনজীবীর সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে তদন্ত কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। জামিন বাতিল হওয়া আসামিরা হলেন- শেখ সাইফুল ইসলাম, আবদুর রহমান, খালিদ শেখ, ইস্কান্দার শেখ, জমির শেখ, জিয়ারুল শেখ ও আব্বাস শেখ।
জামিন জালিয়াতি নিয়ে হাইকোর্টের প্রশ্ন
গতকাল শুনানিতে জামিন জালিয়াতির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে আদালত বলে, এই যদি জালিয়াতির নমুনা হয়, আমরা কোথায় যাব? হয়তো আমাদের দ-বিধির ৩০২ ধারার মামলার জামিন আবেদনের শুনানি গ্রহণ বন্ধ করে দিতে হবে। এভাবে কত জামিন জালিয়াতি হয়েছে কে জানে? এভাবে কোর্টের সঙ্গে প্রতারণা করলে আমরা জজিয়তি (বিচার) করব কীভাবে? ২০১৯ সালের ৭ আগস্ট খুলনার তেরখাদায় শত্রুতার জেরে নাঈম শেখকে (২৭) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় আহত হন নিহতের বাবা হিরু শেখ (৫৫)। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনিও মারা যান। এ ঘটনায় পরদিন তেরখাদা থানায় ১৬ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন নিহতের স্ত্রী মাহফুজা বেগম। এ মামলার এজাহার, নিম্ন আদালতের জামিন নামঞ্জুরের আদেশের অনুলিপি ও আসামিদের দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পরিবর্তন করে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্ট থেকে জামিন নেন এই ৭ আসামি। জাল-জালিয়াতির আশ্রয় করে নেওয়া জামিন বাতিলের জন্য হাই কোর্টে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
আপনার মতামত জানানঃ