
আন্দোলনে পুলিশি অত্যাচার এক ট্র্যাডিশন হয়ে উঠেছে। পুলিশের জন্য আদৌ কি দেশে কোনও আইন আছে? কোনও মিছিলকে ছত্রভঙ্গ করার নামে পুলিশ কি যথেচ্ছ আচরণ করতে পারে? ছাত্র আন্দোলন দমাতে পুলিশ কি গুলি ছুঁড়তে পারে? পুলিশের হামলায় নিরপরাধ শিক্ষার্থীরা প্রাণ হারালে কি শাস্তি হবে ওইসব দোষী পুলিশদের?
আন্দোলন মোকাবিলায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এই সঙ্গত প্রশ্নগুলি বছরের পর বছর ধরে উঠলেও উত্তর মেলেনি। সরকারের রাজনৈতিক রঙ বদল হয়েছে, কিন্তু উত্তরটা অধরাই থেকে গেছে। পুলিশ বা সরকার, কারও কাছ থেকেই আচরণ পরিবর্তনের কোনও আশ্বাস পাওয়া যায়নি।
‘যে সমস্ত শিক্ষক ছাত্রদের শরীর থেকে রক্ত ঝরানোর নির্দেশ দেন, তারা শিক্ষক নামের কলঙ্ক।’- সিলেটের শিল্পী ও সংগঠক অরূপ বাউল ‘রক্তাক্ত সাস্ট’ নামের এই ই-পোস্টার গোটা দেশের স্লোগানে পরিণত হয়েছে। পুলিশ আর ছাত্রলীগকে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দে’য়ার ভাইরাল ভিডিওটি হয়ে উঠেছে প্রতিবাদের ভাষা।
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। শাবিপ্রবির সাম্প্রতিক এই ঘটনা আসলে বিচ্ছিন্ন কোন কিছু নয়। এই চর্চার শেকড় অনেক গভীরে প্রথিত। তাই এই উত্তপ্ত সময়ে বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি এবং পুলিশের বিবিধ কারনামা সম্পর্কে কিছুটা জেনে নে’য়া যাক।
বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে ছাত্র আন্দোলন
বিশ শতকের বাংলা ও বাঙালির ইতিহাসের প্রধানতম ঘটনা কি, সে বিষয়ে হয়তো নানারকম বিতর্ক ও প্রশ্নই উঠবে। কিন্তু এই শতকে কারা ছিল এ দেশের প্রধান নিয়ামক শক্তি, সে প্রশ্নে সম্ভবত একটাই উত্তর আসবে— ছাত্ররা। বস্তুত এদেশের ছাত্ররা এবং একমাত্র ছাত্ররাই ছিল বিশ শতকে বাংলা ও বাঙালির জীবনে প্রধানতম ঘটনা। যদিও উনিশ শতকের গোড়া থেকেই আধুনিক বাঙালির যাত্রা শুরু, তথাপি উনিশ শতকের মাঝামাঝি থেকে ছাত্ররা একটি শক্তি হিসেবে বাংলার সমাজে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছিল।
১৮৪০ সালে যখন বৃটিশ সরকার সিদ্ধান্ত নিল বাংলার সকল জেলাতে একটি করে সরকারী কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হবে, একমাত্র তখনই কলকাতার বাইরে সারা বাংলায় ছাত্র সমাজের সংগঠিত কর্মকাণ্ড জেগে ওঠার সুযোগ সৃষ্টি হয়। তবে বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ, বিশেষ করে নব উত্থিত বাংলার মুসলমান ছাত্র সমাজের জন্যে ১৯২১ সালের একটি ঘটনা ছিল অপেক্ষিত। এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা শুধুমাত্র পূর্ব বাংলা অঞ্চলের মুসলমান ছাত্রদের জন্যে নয়, এ অঞ্চলের সমগ্র মুসলমান মধ্যবিত্ত সমাজের জন্যেও গুরুত্বপূর্ণ।
সেদিন কেউই হয়তো ভাবতে পারেনি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সমাজই একদিন বাঙালির স্বাধীন আবাসভূমি প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে প্রধান ভূমিকা পালন করবে। বৃটিশ বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর পাকিস্তানের কাঠামোতে এ দেশে ছাত্র সমাজ একটি সংগঠিত শক্তি হিসেবে সমগ্র রাজনৈতিক ইতিহাসকেই নিয়ন্ত্রণ করেছে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ছাত্ররাই ছিল একমাত্র আপোষহীন শক্তি। গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় ছাত্রদের এখনো বিকল্প নেই।
১৮৩০ সালে বাংলার ছাত্র সমাজ দেশে ও জাতির প্রতি অসীম দায়িত্ব নিয়ে যে মহাযাত্রা শুরু করেছিল, ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে তার একটা সফল পরিণতি আসায় ছাত্রদের ঘরে ফিরে যাওয়ার কথা থাকলেও তারা ভুলে যেতে পারেনি। ১৯৭৫ সালের পর দুই-দুইটি সামরিক শাসন ছাত্রদের আবার রাজপথে নিয়ে আসে। নিকট অতীতেও রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলোর সবচেয়ে বড় আন্দোলন এরশাদের বিরুদ্ধে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন৷ ৯০-এর গণঅভ্যুত্থানে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের অনেক বড় ভূমিকা ছিল৷
এদিকে, দেশে গত একযুগে শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে যে কয়টি বড় আন্দোলন হয়েছে তার সাথে দেশের বড় কোনো রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন এবং নেতারা যুক্ত ছিলেন না৷ বরং সাধারণ ছাত্রদের দমাতেই সক্রিয় ছিল কোনো কোনো ছাত্র সংগঠন৷ রাজনীতির থেকে ছাত্রদের এই সরে আসা নিয়ে বিস্তারির এখানে বলবো না। তবে ছাত্র আন্দোলনকে রাজনৈতিকীকরণ, এদেশে বিগত বহু আন্দোলনের বিরুদ্ধে জনমত তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে। ছাত্রদের থেকে রাজনীতিকে আলাদা করে দে’য়া, মূলত ক্ষমতাকে দীর্ঘমেয়াদি করারই কূটকৌশল।
গত এক দশকে বাংলাদেশে চারটি বড় ছাত্র আন্দোলন হয়েছে৷ নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, কোটা সংস্কার আন্দোলন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্যাটবিরোধী আন্দোলন এবং চলমান অর্ধেক ভাড়া ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলন৷ এর কোনোটিতেই রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের অংশগ্রহণ নেই৷ সাধারণ ছাত্রদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশ গ্রহণেই এইসব আন্দোলন হয়েছে৷ এর বাইরে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক কিছু আন্দোলন হয়েছে৷ যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের পরীক্ষার দাবিতে আন্দোলন৷ তা-ও সাধারণ ছাত্রদেরই আন্দোলন৷
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলন চলে বছরব্যাপী৷ তাতে সফলতাও আসে৷ এই আন্দোলনের প্রভাব ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও পড়েছিল৷ সেখানেও কোটাবিরোধী আন্দোলন হয়৷ ওই বছরেরই ২৯ জুলাই থেকে ৭ আগস্ট নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে দেশের লাখ লাখ শিক্ষার্থী রাস্তায় নেমে এসেছিল৷ এর ফলে নিরাপদ সড়ক আইন হয়, যদিও তা এখনো কার্যকর হয়নি৷
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্যাটবিরোধী আন্দোলন হয়েছিল ২০১৫ সালের জুন মাসে৷ বাজেটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষার ওপর শতকরা ১০ ভাগ ভ্যাট বসানোর প্রস্তাব করা হয়েছিল৷ পরে আন্দোলনের মুখে সেই ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়৷ এখন চলছে সব ধরনের গণপরিবহণে শিক্ষার্থীদের জন্য অর্ধেক ভাড়া বা হাফ পাসের আন্দোলন৷
এই আন্দোলন চলার মধ্যেই গত ২৪ নভেম্বর ঢাকায় নটরডেম কলেজের ছাত্র নাঈম হাসান সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়িতে পিষ্ট হয়ে নিহত হন৷ ওইদিন থেকে নিরাপদ সড়কের আন্দোলনও শুরু করেন শিক্ষার্থীরা৷ তারা ৯ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলন করেছেন৷ তবে সড়ক কতটা নিরাপদ হয়েছে, তা রাস্তায় বের হওয়া প্রতিটা মানুষ জানে। ছাত্র আন্দোলন থেকে রাজনীতিকে আলাদা করে চিন্তা করার যে বীজ আমাদের মনে গেঁথে দে’য়া হয়েছে, তারই ফল আন্দোলনে নিয়মিতভাবে ব্যর্থ হওয়া। আন্দোলনের নামে আন্দোলন হচ্ছে। তবে রাষ্ট্র সেইসব দাবিই কেবল মেনে নিচ্ছে, যা সে মানতে চায়।
আন্দোলনে পুলিশি অত্যাচার এক পুরনো ট্র্যাডিশন
১৮৬১ প্রণয়নের মাধ্যমে জনগণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধানের উদ্দেশ্য করে ১৮৬১ সালে আইনগতভাবে এ উপমহাদেশে পুলিশ বাহিনী গঠন করা হয়েছিল। তবে উদ্দেশ্য আজও বিধেয় হতে পারেনি। হয়েছে রাজনৈতিক হাতিয়ার। দমনের কৌশল।
গোটা বিশ্বে এক সময় গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চাপে পুলিশ কোডে লেখা হয়েছিল মিছিলকারীদের উপর বলপ্রয়োগ যদি করতেও হয়, সে ক্ষেত্রে পুলিশ প্রথমে গ্রেপ্তার করবে, না হলে খালি হাতেই ঠেলে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে। না পারলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নির্দেশ নিয়ে যদি আঘাত করতেই হয়, তবে তা পায়ের নিচের অংশে করতে হবে। আঘাত যাতে কোনও মতেই জীবনঘাতী না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে ইত্যাদি। পরবর্তীকালে প্রাণঘাতী বুলেটের পরিবর্তে রাবার বুলেট, জলকামান ইত্যাদি ব্যবহারের কথা এসেছে।
গণতন্ত্রের মুখোশ বজায় রাখতে পুলিশের আচরণবিধিতে লেখা হয়েছে এমন অনেক কথাই, কিন্তু তা মেনে চলতে পুলিশকে বাধ্য করবে কে? সরকার? এর জন্য শাসকদের যে জনমুখী দৃষ্টিভঙ্গি থাকা প্রয়োজন তা এই সোনার দেশে নেই। আন্দোলনকারীরা মাটিতে পড়ে যাবার পরেও একাধিক পুলিশ কর্মী মিলে পেটানোর ঘটনা, গুলি ছোঁড়া, নানা অজুহাতে বন্দি করে অত্যাচার করা যেন ‘স্বাভাবিক’ হয়ে উঠেছে।
পুলিশের অতিউৎসাহী কর্মকর্তার রাজনৈতিক আচরণ তাদের লোভনীয় প্রমোশন ও পোস্টিংয়ের বিষয়ে সহায়ক ভূমিকা পালন করে আসছে। রাজনীতিবিদরা ক্ষমতায় বসেই প্রতিপক্ষকে দমন-পীড়নের জন্য পুলিশ তোষণ শুরু করেন। ফলে তাদের (পুলিশ) জিহ্বা বড় হতে হতে এত বড় হয়েছে যে, ছোটখাটো রাজনৈতিক নেতাদের এখন আর তারা তোয়াজ করে না। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিচে তাদের কোনো প্রটোকল আছে বলে তারা মনে করে না।
এই ইতিহাসটাও অনেক পুরনো। বাংলাদেশের পুলিশ কখনও-ই জনগণের বন্ধু হয়ে উঠতে পারেনি। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর অবৈধ ও সামরিক সরকারগুলো পুলিশ বাহিনীকে নিজেদের রক্ষার কাজে যতটা ব্যবহার করেছে, জনগণের স্বার্থে ততটা ব্যবহার করেনি। এরপর গণতান্ত্রিক সরকার এলেও পুলিশবাহিনীকে গণমুখী করার প্রয়াস লক্ষ্য করা যায়নি। বাংলাদেশে স্বাধীনতা পরবর্তী সব সময়ই সরকারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী৷
রাষ্ট্রীয়ভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড শুরু করেছিল বিএনপি ২০০৪ সালে অপারেশন ক্লিনহার্টের মাধ্যমে। পরে সে সরকারের আমলে গঠিত হয় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন- র্যাব। এই সংস্কৃতির সবথেকে বড় প্রতিপালক আজকের আওয়ামী লীগ। যদিও সম্প্রতি র্যাবের উপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা বিচারবহির্ভূত হত্যার মুখে লাগাম টানতে সক্ষম হয়েছে।
দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী রাজনীতিবিদদের দ্বারা অনেক আগে থেকেই নিয়ন্ত্রিত৷ রাজনৈতিক নেতাদের ইচ্ছা-অনিচ্ছায় পরিচালিত হয় প্রশাসন৷ ফলে পুলিশ-র্যাব কার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বা নেবে না, তাও ঠিক করেন সরকার পক্ষের রাজনীতিকরা৷
সরকার বিরোধী প্রতিবাদ কিংবা মিছিলে পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনা বারবার ঘটেছে বাংলাদেশে৷ এরশাদের আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পুলিশ গুলি করে ছাত্রদের হত্যা করে৷ এমন ঘটনা অব্যাহত ছিল গণতান্ত্রিক সরকারের আমলেও৷ ২০০৬ সালে কানসাটে বিদ্যুতের দাবিতে গণবিক্ষোভে ২০ জন নিহত হয়৷
গত এক দশকের প্রতিটি আন্দোলনেই হামলা হয়েছে৷ হামলার অভিযোগ শাসক দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ ও পুলিশের বিরুদ্ধে। রাজধানীতে কোটাপদ্ধতি সংস্কার চেয়ে করা মিছিলে পুলিশের হামলার ঘটনা ঘটে। পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে এবং লাঠিপেটা করে। আন্দোলনকারীরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দিতে গেলে পুলিশ তাদের প্রথমে বাধা দেয়। পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে তারা মন্ত্রণালয়ের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করলে একপর্যায়ে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে ও লাঠিপেটা করে। ওই সময় হাইকোর্ট এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
২০১৮ সালে ২৯ জুলাই কুর্মিটোলায় বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। নিরাপদ সড়কের দাবিতে সড়কে নেমে আসে শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ যায় শিক্ষার্থীদের হাতে। আন্দোলন পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়ে।।এর মাঝেই ধানমন্ডিতে শিক্ষার্থীদের বিশাল জমায়েত হয়। সেখানে পুলিশের ছত্রচ্ছায়ায় হামলা চালায় ছাত্রলীগ। রেহাই পাননি সাংবাদিক ও পথচারীরাও। নীরব দর্শক বনে যায় পুলিশ। এভাবে এভাবে পুলিশি পাহারায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে।
পুলিশের ছত্রছায়ায় শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগের হামলা এই সময়ের সবচেয়ে বহুল পঠিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রতিল বাসে অর্ধেক ভাড়ায় (হাফ পাস) যাতায়াতের সুবিধা নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহতও হয়েছেন।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুলিশের প্রভাব বহুমাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ ভোটবিহীন, ২০১৮ সালের কথিত নির্বাচনে সরকারকে ক্ষমতায় বসানোর পেছনে পুলিশের একক কৃতিত্ব রয়েছে বলে তাদের দাবি। কোনো কোনো পুলিশ অফিসার প্রকাশ্যেই এ ধরনের মন্তব্য করে থাকেন। পুলিশের এ ধারণা থেকেই গায়েবি মামলার পরে এখন গায়েবি হামলা ও গায়েবি অগ্নিসংযোগের প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে, লুট করছে প্রভৃতি। দেশের মুখপাত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধেও দেদারসে লেলিয়ে দে’য়া হচ্ছে এই রাষ্ট্রীয় গুন্ডাদের। দইচ্ছে সরকার, দিচ্ছে শিক্ষকেরা; আর এটাই এই সময়ের সবথেকে বড় ট্রাজেডি।
সম্পাদনা: শুভ্র সরকার
এসডব্লিউ/এসএস/১৬৫৭
আপনার মতামত জানানঃ