অভিনয়ে নাম লেখালেন সৌদি আরবের মক্কা নগরীর পবিত্র গ্র্যান্ড মসজিদের সাবেক ইমাম শায়খ আদেল আল কালবানি। রিয়াদ সিজন-২০২১-এর উৎসবের ‘কমব্যাট ফিল্ড’-এর একটি টিভি বিজ্ঞাপনে অভিনয় করেছেন পবিত্র গ্র্যান্ড মসজিদের সাবেক এই ইমাম। সে বিজ্ঞাপনের একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সমালোচনার ঝড় উঠেছে শায়েখ আদেল কালবানির বিরুদ্ধে।
সৌদির মক্কা নগরীর পবিত্র গ্র্যান্ড মসজিদের সাবেক ইমাম শায়েখ আদেল কালবানি। তার পুরো নাম শায়েখ আদিল বিন সেলিম বিন সাইদ আল কালবানি আবু আবদুল্লাহ। তার প্রাণ জুড়ানো তেলাওয়াত ইউটিউবে মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউ হয়েছে। ইসলামের দাঈ হিসেবেও বেশ সমাদৃত তিনি। এবার নতুন এই বিতর্কে পা দিলেন তিনি। যা নিয়ে বিশ্বজুড়ে হচ্ছে সমালোচনা।
ওই ভিডিওতে দেখা যায় যে, সৈন্যরা যুদ্ধে নিযুক্ত এবং যুদ্ধের অস্ত্র ব্যবহার করছে। ২ মিনিট ৪১ সেকেন্ডের ভিডিও ক্লিপটিতে শায়েখ আদেল কালবানিকে একটি সংক্ষিপ্ত এন্ট্রি করতে দেখা গিয়েছে।
সৌদি আরবের ‘জেনারেল অথরিটি ফর এন্টারটেইনমেন্ট’ এর ভিডিওটি টুইটারে শেয়ার করেছেন জনপ্রিয় তারকা তুর্কি আল-শেখ। সেই ভিডিওটি নিজের টুইটারে শেয়ার করে শায়েখ আদেল আল-কালবানি টুইটের নিচে রসিকতা করে লিখেন, ‘আপনি কি মনে করেন আমি হলিউডে যেতে পারি?’
কমেন্টে জিইএ’র চেয়ারম্যান তুর্কি আল শেখ লিখেছেন, ‘হ্যাঁ প্রিয়, আমি মনে করি আপনি যেকোনো কিছুতেই এগিয়ে যাবেন।’
ভিডিওতে শিল্পী, ফুটবল তারকাসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদেরও দেখা যায়। শিল্পী খালেদ আব্দুল রহমান, সৌদি আরবের ফুটবল দলের গোলরক্ষক মোহাম্মদ আল দেয়া, সাবেক খেলোয়াড় সাইদ আল ওয়াইরানসহ অনেককে জাপানি গেমের যুদ্ধের দৃশ্যে দেখা যায়। এতে প্রধান নেতা হিসেবে অনেক সহযোগীসহ আদেল আল কালবানি ভিডিওতে উঠে এসেছেন।
এদিকে, অনলাইন গেমের প্রচারণার জন্য নির্মিত ভিডিওতে অংশ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন আল কালবানি। অনেকে তাকে ‘মূর্খ’ বলে অবিহিত করে বলছেন, আল কালবানি যা করেছেন তা ইসলাম পরিপন্থি। এমনকি অনেকে তাকে ‘দুর্নীতির সহযোগী’ হিসেবেও অভিযুক্ত করেছেন।
একজন লিখেছেন, এটা আল্লাহর নির্দেশ এবং নবীর দেখানো পথের বিরুদ্ধে। আরেকজন বলেন, উনার মত একজন রোল মডেলের এমন কাজ করাটা কি ঠিক হয়েছে?
উল্লেখ্য, ‘কমব্যাট ফিল্ড’ ভার্চ্যুয়াল গেমটি রিয়াদের বার্ষিক বিনোদন উৎসবের প্রধান আকর্ষণ হিসেবে রয়েছে। গত ২৩ অক্টোবর এই বিনোদন উৎসব শুরু হয় এবং আগামী বছরের ১৬ মার্চ পর্যন্ত তা চলবে। উৎসবে যুগ যুগ ধরে নানা উপায়ে চলে আসা লড়াই, যুদ্ধ, তরবারি, তীর, ধনুক ও ড্রোনের ব্যবহার দর্শকরা দেখার সুযোগ পাবেন।
শায়খ আদেল আল কালবানি ছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের রস আল খাইমাহ থেকে আগত একজন দরিদ্র অভিবাসীর পুত্র।
যিনি ১৯৫০ এর দশকে সৌদি আরব এসেছিলেন। তার বাবা সরকারী ক্লার্কের কাজ করতেন। পরিবারের আর্থিক অবস্থার কারণে আল-কালবানি উচ্চ বিদ্যালয় শেষ করে সৌদি আরব এয়ারলাইন্সে চাকরি নিয়েছিলেন, যেখানে কিং সউদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্ধ্যকালীন ক্লাসে অংশগ্রহণ করেন।
তার কণ্ঠে পবিত্র কোরআনের প্রাণ জুড়ানো তেলাওয়াতের ভিডিও ইউটিউবে মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউ হয়েছে।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৭৪৭
আপনার মতামত জানানঃ