করোনা টিকা ফাইজার-বায়োএনটেক শিশুদের করোনা প্রতিরোধে ৯০ দশমিক ৭ শতাংশ কার্যকর। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত এক জরিপে এ তথ্য এসেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
সূত্র মতে, শিশুদের শরীরে এ টিকা প্রয়োগের অনুমোদন চেয়ে ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) কাছে আবেদন করেছে ফাইজার। এ বিষয়ে আগামী মঙ্গলবার সিদ্ধান্ত নিতে পারে এফডিএ।
প্রসঙ্গত, গত ডিসেম্বরে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসাবে ফাইজার বায়োএনটেকের করোনাভাইরাস টিকার অনুমোদন দেয় যুক্তরাজ্য।
এফডিএতে জমা দেওয়া ব্রিফিং ডকুমেন্টে ফাইজার জানায়, ট্রায়ালে অংশ নেওয়া যেসব শিশুকে প্লাসিবো দেওয়া হয়েছিল তাদের ১৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়। আর যেসব শিশু টিকা নিয়েছিল, তাদের মধ্যে ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়।
শুক্রবার রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা টিকা ফাইজার-বায়োএনটেকের অন্যতম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ফাইজার সম্প্রতি ২ হাজার ২৬৮ শিশুর ওপর এই টিকার মেডিকেল ট্রায়াল পরিচালনা করেছে। ট্রায়ালে অংশ নেওয়া সবার বয়স ছিল ৫ থেকে ১১ বছরের মধ্যে।
টিকার দুই ডোজ দেওয়ার কিছু দিন পর এই শিশুদের দেহে ৯০ দশমিক ৭ শতাংশ করোনা প্রতিরোধী অ্যান্টিবডির অস্তিত্ব শনাক্ত হয়েছে বলে এক বিৃবতিতে জানিয়েছে ফাইজার কোম্পানির কর্তৃপক্ষ।
পূর্ণবয়স্কদের প্রতিটি টিকার ডোজ সাধারণত হয় ৩০ মাইক্রোগ্রামের। তবে এই ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারী শিশুদের দেওয়া প্রতিটি ডোজ ১০ মাইক্রোগ্রামের ছিল বলে বিবৃতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে, শীঘ্রই বাংলাদেশে সরকার ১২-১৭ বছর বয়সী শিশুদের করোনাভাইরাসের টিকা দেবে। সূত্র মতে, শুরুতে দেশের ৩০ লাখ ছেলেমেয়েকে এই টিকা দেয়া হবে। জন্ম-নিবন্ধন সনদের মাধ্যমে শিশুরা এই টিকার জন্য নিবন্ধন করতে পারবে।
এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, “সরকারের হাতে এই মুহূর্তে ৬০ লাখ ফাইজারের টিকা রয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ হাতে রেখে মোট ৩০ লাখ ছেলেমেয়েকে এই টিকা দেবো আমরা।”
তিনি বলেছেন, “আবার যখন আমাদের হাতে ফাইজারের টিকা আসবে, তখন আমরা (শিশুদের) এ সংখ্যা বৃদ্ধি করবো।”
গত সেপ্টেম্বরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সময় অপ্রাপ্তবয়সীদের টিকা দেয়ার ইস্যুটি সামনে আসে। সেসময় সরকার বলেছিল বিষয়টি নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে তারা।
এ নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি আমরা। ১২-১৭ বছরের শিক্ষার্থীদের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করার কথা বলে যখন জানতে চেয়েছি, তখন উনি বললেন যে সংক্রমণ রোধে এবং কোমরবিডিটি রয়েছে এমন ছেলেমেয়েদের টিকা দিতে পারেন আপনারা।
তিনি আরো বলেন, উনার (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক) সাথে কথা বলার পর আমি ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স-গ্যাভির সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছে, ফাইজার আর মডার্নার টিকা দিতে পারবে তারা আমাদের।
আসছে ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে দেশের প্রায় আট কোটি মানুষকে দুই ডোজ টিকা দেয়া সম্ভব হবে বলে আশা করছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয়েছে অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড, রাশিয়ার উৎপাদিত স্পুটনিক ভি, চীনের সিনোফার্ম, ফাইজার এবং মডার্নার টিকা।
এসডব্লিউ/এসএস/১১৫৭
আপনার মতামত জানানঃ