পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিংয়ের বান্দরবানে সফরকালে দুই পর্যটন স্পটে পর্যটকদের ভ্রমণ না করার নির্দেশনা দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। ৩০ সেপ্টেম্বর তার আগমন উপলক্ষে তিন্দু ও রেমাক্রী ইউনিয়নে নদীপথে ভ্রমণে এই নোটিশ জারি করে থানচি উপজেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) থানচি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আতাউল গণি স্বাক্ষরিত এক জরুরি নোটিশে এই নির্দেশ দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উপজেলা প্রশাসনের নিবন্ধিত পর্যটক ও বোট মালিক-চালকদের বলা হয়েছে, মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং ২৯ সেপ্টেম্বর থানচিতে যাবেন এবং ৩০ সেপ্টেম্বর নদীপথে বড় মদক এলাকা সফর করবেন। এ কারণে পর্যটক ও পর্যটকবাহী নৌযানগুলোকে আগামী ৩০ অক্টোবর নদীপথে তিন্দু ও রেমাক্রী ইউনিয়নে ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ইউএনও আতাউল অনলাইন ভিত্তিক এক সংবাদমাধ্যমকে জানান, ৩০ থেকে ৩৫টি বিশেষ নৌকা মন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে সাঙ্গু নদীতে চলবে। এ সময় অন্য নৌযান নদীতে নামলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। এ কারণেই সাময়িকভাবে পর্যটকদের নৌপথে চলাচল থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বুধ ও বৃহস্পতিবার পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং দুই দিনের সফরে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন করবেন। বৃহস্পতিবার তিনি নদীপথে থানচির দুর্গম তিন্দু ও রেমাক্রী ইউনিয়নে সফর করবেন।
এর আগে গত বছরের ১৪ অক্টোবর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের কারণে থানচিতে তিন দিনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল উপজেলা প্রশাসন।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পৃথিবী মধ্যযুগ কাটিয়ে এখন আধুনিক যুগ পার করছে। অনেকে অবশ্য বলে থাকেন উত্তরাধুনিক যুগে আছে পৃথিবী। কিন্তু আমাদের দেশ এখনো মধ্যযুগীয় রাজা-বাদশাদের ক্ষমতাতন্ত্রেই পড়ে আছে। তাই তো এমপি মন্ত্রীদের আগমণ উপলক্ষ্যে প্রজাদের মত সারি বেঁধে শুভেচ্ছা জানাতে জনগণকে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এ কাজে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। পৃথিবী এগিয়ে গেলেও আমাদের মনমানসিকতা এখনো মধ্যযুগের রাজা-বাদশাদের আমলেই পড়ে আছে।
তারা বলেন, মন্ত্রী আসবে, তাই পর্যটকদের ঘোরাফেরা মানা! এও এক মধ্যযুগীয় নিয়ম। আর এসবের সূত্রপাত মূলত ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে। ক্ষমতার কারণে মন্ত্রী এমপি কেন, সরকারি কর্মচারীরাও নিজেদের জনগণের প্রভু ভেবে থাকেন। তাই তো কোথাও তাদের ‘স্যার’ না ডাকলে অপমানবোধ করেন, এমনকি মারধরও করে থাকেন। দেশের পার্থিব উন্নয়নের পাশাপাশি আমাদের মানসিক উন্নয়ন অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/২১২৮
আপনার মতামত জানানঃ