রাশিয়ার পার্ম স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত আট জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ছয় জন। আজ সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) এক মুখোশধারী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলি চালানো শুরু করে।
খবর পেয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ক্যাম্পাস ঘিরে ফেলে। তাদের গুলিতে ওই বন্দুকধারীর মৃত্যু হয়। রুশ রাজধানী মস্কো থেকে ৭০০ মাইল পূর্বে পের্ম শহরে ওই বিশ্বদ্যিালয়টি অবস্থিত। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি ও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে অভিযুক্ত বন্দুকধারীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ নম্বর ভবনে প্রবেশের আগে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে দেখা যায়। অন্য আরেকটি ভিডিও ফুটেজে ওই ভবনে থাকা আতঙ্কিত শিক্ষার্থীদেরকে দোতলা থেকে নিচে ঝাঁপ দিতে দেখা যায়।
এছাড়া হামলাকারীর হাত থেকে নিরাপদ থাকতে কয়েক ডজন শিক্ষার্থী নিজেদেরকে শ্রেণিকক্ষে আবদ্ধ করে রেখেছেন বলেও দেখা গেছে ভিডিও ফুটেছে।
এদিকে এএফপি জানিয়েছে, অভিযুক্ত ওই হামলাকারীকে আটক করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। তবে এর আগেই ৮ জনকে হত্যা করে সে। আহত অবস্থায় অভিযুক্তকে আটক করা হয়। এর আগে বন্দুক হামলার তথ্য জানিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ৮ জন নিহত এবং ৬ জন আহত হওয়ার কথা জানিয়েছিল রুশ নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট জানিয়েছে, অভিযুক্ত হামলাকারী ইতোমধ্যেই নিহত হয়েছেন। অবশ্য স্থানীয় সময় বেলা ১২টার পরই অভিযুক্ত আটকের কথা নিশ্চিত করেছিল স্থানীয় পুলিশ বিভাগ।
স্থানীয় গণমাধ্যম হামলাকারী যুবককে ১৮ বছর বয়সী তিমুর বেকমানসুরভ বলে শনাক্ত করেছে। হামলার ঠিক আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে অভিযুক্ত বেকমানসুরভ বন্দুক ও শুটিং লাইসেন্স কিভাবে পেয়েছেন, সেটির প্রক্রিয়া বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেন। এমনকি তিনি মানসিক পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।
অভিযুক্ত তিমুর বেকমানসুরভের দাবি, হামলা চালানোর জন্য তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়কে বেছে নিয়েছেন কারণ চার বছর আগে ‘বিশ্ববিদ্যালয়টি একটি মারাত্মক ভুল করেছিল’।
সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় বেকমানসুরভের এই পোস্টে বোঝা যাচ্ছে, অল্পবয়সী একজন যুবক বিপর্যস্ত মানসিক অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া সর্বশেষ ওই পোস্টে তিনি আরও দাবি করেন, ‘এখন পর্যন্ত নিজেকে আমি যতটা চিনেছি, তাতে সবসময়ই আমি মৃত্যুর কথা চিন্তা করি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ১৮ বছরের একজন যুবকের মধ্যে এত হিংস্রতা মোটেও অস্বাভাবিক নয়। আমাদের বরাবরই মানসিক স্বাস্থ্যকে খুবই গুরুত্বের সাথে দেখা দরকার। তারপরও কোথাও না কোথাও আমরা শারীরিক স্বাস্থ্যের থেকে কম গুরুত্বের সাথেই দেখি মানসিক স্বাস্থ্যকে। এর ফলে বহু মানুষ বিকৃত মস্তিষ্কের অধিকারী হয়ে উঠছে গোপনে। এসব রুখতে মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
এসডব্লিউ/এমএন/ডব্লিউজেএ/১৯১৪
আপনার মতামত জানানঃ