তালিবানরা ক্ষমতায় আসার পরে ক্ষমা প্রার্থনা করে নানারকম প্রতিশ্রুতি দিলেও তা থেকে পল্টি নেয়া শুরু করেছে সরকার গঠনের প্রক্রিয়া মোটামুটি সম্পূর্ণ হতেই। তালিবানরা এবার নারী স্বাধীনতা নিয়ে উদার হবে জানালেও নারীদের জন্য প্রতিবন্ধকতা তৈরী করতে শুরু করে দিয়েছে ইতিমধ্যে।
আফগানিস্তানের নারীরা ক্রিকেটসহ কোনো ধরনের খেলাধুলায় অংশ নিতে পারবেন না বলে ঘোষণা করছে দেশটিতে সদ্য দায়িত্ব নেওয়া তালিবানের সাংস্কৃতিক কমিশন। আজ বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এ খবর জানা গেছে।
অস্ট্রেলিয়ার একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তালিবানের সাংস্কৃতিক কমিশনের উপ-প্রধান, আহমদুল্লাহ ওয়াসিক বলেন, ‘নারীদের জন্য খেলাধুলা করাটা গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়। আমি মনে করি না নারীদের ক্রিকেট খেলতে দেওয়া উচিত। কারণ নারীদের জন্য ক্রিকেট খেলা গুরুত্বপূর্ণ নয়।’
ওয়াসিক আরও বলেন, ‘ক্রিকেট খেলায় নারীদের মুখ আর শরীর ঢাকা থাকে না। ইসলাম নারীদের এভাবে চলাফেরার অনুমোদন দেয় না। এদিকে, গণমাধ্যমের এই যুগে সহজেই ছবি আর ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। আর সেসব পুরুষরাও দেখেন। ক্রিকেট আর অন্য যেসব খেলায় নারীদের বেপর্দা হওয়ার সুযোগ থাকে সেসব খেলা ইসলাম ও ইসলামী আমিরাত অনুমোদন করে না।’
এদিকে আফগান পুরুষরা খেলাধুলায় অংশ নিতে পারবে বলে গতমাসে এক গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন ওয়াসিক। চলতি বছরের শেষের দিকে পুরুষদের জাতীয় ক্রিকেট দলের অস্ট্রেলিয়া সফরের কথা রয়েছে। ওই সফরে পুরুষ ক্রিকেট দল যেতে পারবেন বলে জানিয়েছিলেন ওয়াসিক।
এদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করার সময় তালিবানরা দেশটিকে ‘ইসলামিক আমিরাত’ হিসাবেও ঘোষণা করেছে। তবে কথা রাখেনি তালিবান। নতুন মন্ত্রিপরিষদে স্থান পেয়েছেন শুধুমাত্র তালিবান বাহিনীর নেতারা। যাদের অনেকে আবার গেলো দুই দশক ধরে দেশটিতে অবস্থানরত মার্কিন সেনাদের ওপর হামলার জন্য কুখ্যাত হিসেবে পরিচিত।
এই মন্ত্রিপরিষদে কোনো নারী প্রতিনিধি নেই। নারী না থাকার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তালিবানের সংস্কৃতি বিষয়ক কমিশনের প্রধান আমানুল্লাহ ওয়াসিক অজুহাত দিয়ে বলেন, ‘মন্ত্রীসভার গঠন এখনও চূড়ান্ত হয়নি।’ তবে এর আগে তালিবান জানিয়েছিল যে মন্ত্রী পর্যায়ে কোন নারী থাকবেন না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, তালিবানরা প্রতিশ্রুতি রাখবে না এমন আশঙ্কা আগের থেকে করা হলেও, এখন তাদের রক্ষণশীল রূপ প্রকাশ হতে শুরু করলে উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছে আফগান নারীরা। ধীরে ধীরে সব জায়গা থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় নারীর উপস্থিতি কমতে শুরু করবে বলেও আশঙ্কা তাদের।
তালিবানের শীর্ষ নেতা নির্দেশ দিয়েছেন, শরীয়া আইনে দেশ পরিচালনা করতে হবে। এই আইনের অজুহাত দিয়ে তালিবানরা আবারও নারীদের প্রতি রক্ষণশীলতা আচরণ করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এসডব্লিউ/এমএন/ডব্লিউজেএ/২০৫১
আপনার মতামত জানানঃ