দেশজুড়ে নারীদের জন্য কঠোর নীতি বাস্তবায়ন করেছে আফগানিস্তানের তালবান সরকার। এতে অনেকটাই সংকুচিত হয়ে পড়েছে তাদের সামাজিক জীবন। আটকে পড়েছে ঘরের কোনায়। ফলত সময় কাটাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপনের দিকে ঝুঁকতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। এ খবর দিয়েছে বৃটিশ অনলাইন গণমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
এতে বলা হয়, ১৮ বছরের এক আফগান কিশোরীর নাম লিমা। সময় কাটানোর জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাই এখন তার সম্বল। বিবিসি তার কাছে জানতে চায়, তিনি কীভাবে সময় পার করছেন? জবাবে লিমা বলেন, উপন্যাস পড়ে অথবা এআই এর সঙ্গে আড্ডা দিয়ে। আমার ভেতরটা খালি করে দেয়ার জন্য আমি এআই এর সঙ্গে কথা বলি, তাকে প্রশ্ন করি। অনেকটা বন্ধুর মতোই। কিশোরীটি আরও বলেন, এআই নিজের পছন্দ মতো মানুষের চরিত্র ধারণ করে।
এর মাধ্যমে আপনি আপনার পরিচিত বিখ্যাত মানুষের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। ইচ্ছামত তাদের সঙ্গে কথা বলা যায়। আপনি তাদের প্রশ্ন করতে পারেন, মিথ্যা আশা দিতে পারেন এবং তাদের আপনার বন্ধু বা পরিবার বানাতে পারেন।
২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সৈন্য প্রত্যাহার করে নিলে কাবুলের ক্ষমতায় বসে তালেবান সরকার। এরপর থেকে নারীদের বিরুদ্ধে একের পর এক কঠোর নীতি বাস্তবায়ন করছে তারা। এতে সামাজিক পরিসরে আফগান নারীদের অবস্থান অনেকটাই সংকুচিত হয়ে পড়েছে।
ফলে আফগান নারীদের দৈনন্দিন জীবনের প্রায় সকল দিকে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। প্রাথমিকভাবে তালেবান সরকার নারীদের জন্য কাজ এবং পড়াশোনার অনুমতি দেয়ার ঘোষণা দিলেও পরে তারা এসবের ওপর বিধিনষেধ আরোপ করেছে।
৬ষ্ঠ শ্রেণির বেশি পড়া-লেখার সুযোগ নেই আফগান নারীদের। তাদের শিক্ষার অধিকার সংকুচিত করা হয়েছে। ধাত্রী হওয়ার প্রশিক্ষণও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নারীরা এখন পার্লার বা জিমে যেতে পারছে না। ঘর থেকে বের হওয়ার সময় মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢাকতে বাধ্য করা হচ্ছে।
পুরুষের তত্ত্বাবধান ছাড়া তাদের থাকার অনুমতি নেই। এছাড়া প্রকাশ্যে গান গাওয়া, কথা বলা, প্রার্থনা করারও অনুমতি নেই। এ বছরের জানুয়ারিতে তালেবান সরকার আবাসিক ভবনের জানালা নিষিদ্ধ করে একটি নতুন প্রধা চালু করেছে। যেন ঘরে অবস্থান করা কালীন নারীদের দেখা না যায়। এমন পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়েই মিথ্যা আশার আলো জ্বালাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে বন্ধু হিসেবে বেঁছে নিতে বাধ্য হচ্ছে আফগান নারীরা।
আপনার মতামত জানানঃ