করোনা মহামারী শুরুর পর থেকে এক দেশ থেকে আরেক দেশে ভ্রমণ, অভিবাসন বা যেকোনো কারণে যাত্রাই খুব জটিল হয়ে পড়েছে। এর জন্য দরকার করোনার সনদ। বাংলাদেশের যেকোনো সরকারী কাজেই সাধারণ মানুষকে ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। এরই সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন অসাধু চক্র বিভিন্ন বিভিন্ন জালিয়াতি করে থাকে। এবার করোনার জাল সনদ তৈরীর চক্রের একজন পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে।
নোয়াখালীতে বিদেশগামীদের করোনা সনদ জালিয়াতি চক্রের এক দালালকে আটক করেছে সুধারাম মডেল থানা পুলিশ। আজ সোমবার (২৩ আগস্ট) সকালে নোয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন অফিস সংলগ্ন এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। আটককৃত দালাল মো. কামরুল ইসলাম (২৮) বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর গ্রামের মো. আবুল হোসেনের ছেলে।
নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বলেন, কামরুল বিদেশগামী যাত্রীদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ দেওয়া এবং দ্রুত সনদ দেওয়ার কথা বলে সনদ প্রার্থীদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে দশ থেকে বিশ হাজার টাকা হাতিয়ে নিতেন। বিষয়টি জানতে পেরে আমাদের এবং গোয়েন্দা সংস্থার যৌথ অভিযানের ভিত্তিতে তাকে আটক করে সুধারাম মডেল থানায় সোপর্দ করা হয়।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাহেদ উদ্দিন বলেন, করোনা সনদ জালিয়াতির অভিযোগে কামরুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এর আগের থেকে ঘটে আসছে এমন ঘটনা। বিদেশগামীদের করোনা পরীক্ষা করার অনুমতি পেয়েছিল রাজধানীর বাংলা মোটরে অবস্থিত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ‘স্টিমজ হেলথ কেয়ার’। এ প্রতিষ্ঠানটির হয়ে কাজ করা এক দালাল করোনার ভুয়া সনদ তৈরী করে ধরা পড়েছে। এই দালালেরা মোবাইলে ম্যাসেজ পাঠিয়ে করোনার রেজাল্ট পাঠানোর পাশাপাশি সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া কিউআর কোডসহ করোনা নেগেটিভের সনদও পাঠায়, যেখানে দেখা যায় ‘স্টিমজ হেলথ কেয়ার’ থেকে করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। কিউআর কোডে মোবাইল ফোনের ক্যামেরা ধরার পর স্বাস্থ্য অধিপ্তরের ওয়েবসাইটেও পাওয়া যায় করোনাভাইরাসমুক্ত একই সনদ।
সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও করোনা পরীক্ষার ভুয়া সনদ দেওয়ার অভিযোগে রাজধানীর চারটি বেসরকারি পরীক্ষাগার সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে। এগুলো হলো বাংলা মোটরের স্টিমজ হেলথ কেয়ার, বিজয় সরণির সিএসবিএফ হেলথ সেন্টার, পুরানা পল্টনের আল জামী ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসেস লিমিটেডের মিরপুর শাখা। নমুনা পরীক্ষা না করেই করোনা পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে শাস্তিমূলক এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিলো।
এর আগে গত বছর পরীক্ষা না করিয়ে ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান চিকিৎসক সাবরিনা আরিফ চৌধুরী ও তার স্বামী আরিফুল হক চৌধুরী। ওই ঘটনায় তারা দুজনসহ আটজনের বিরুদ্ধে করা মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। অভিযুক্তদের বিচার চলছে। তারা কারাগারে রয়েছেন। সমসাময়িক সময়ে টাকার বিনিময়ে করোনা পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মো. সাহেদকে আটক করেছিলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এসডব্লিউ/এমএন/ডব্লিউজেএ/১৮২১
আপনার মতামত জানানঃ