মাইক জেসন
যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের পর আফগানিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার এভাবে হঠাৎ ভেঙে পড়া— তালিবানের একের পর এক প্রাদেশিক রাজধানী দখল করা স্বপ্নের মতো লাগছে আমার কাছে।
২০০৫ সালে আমি বাগদাদের কাছে বিদ্রোহ দমনে পরিচালিত ইরাকি পদাতিক ব্যাটালিয়নের উপদেষ্টা ছিলাম; সেটা ছিল যুদ্ধের সবথেকে সংঘাতময় সময়ের সবথেকে সংঘাতময় অংশ; কোনও আশাই ছিল না। আমি আবার ২০০৯ সালে ইরাকে ফিরি; সেবার মসুলে। সেখানে আমার দলটি ইরাকের দু’টি সেনা বিভাগকে, একটি পুলিশ বিভাগকে এবং হাজার হাজার স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের পরামর্শ ও সহায়তা দে’য়ার কাজ করতো। সেবার আমি ইরাকে অনেক বেশি উন্নতির আশা রেখেছিলাম। ২০১০ সালে যখন ইরাক ছাড়ি, মনে হচ্ছিল আমরা বেশ ভালো কাজ করেছি, ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছি এবং সক্ষম ও যোগ্য একটি নিরাপত্তা বাহিনী তৈরি করতে পেরেছি। বছর খানেক পরে, আমি আফগানিস্তানের মাজার-ই-শরিফে যাই; আফগান পুলিশ দল এবং কমান্ডোদের একত্রিত করে প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করি। সেখানে নয় মাস কাটানোর পর, ফিরে আসার সময় ভেবেছিলাম আমরা দারুণ কাজ করেছি।
একেবারে শুরুতে, প্রায় দুই দশক আগে ইরাকি ও আফগান বাহিনীগুলোকে প্রশিক্ষিত করার আমেরিকার সেনাবাহিনীর যে প্রচেষ্টা ছিল, তা অনেকটা ধর তক্তা মার পেরেক ধরনের ছিল; পূর্ব পরিকল্পিত ছিল না, ছিল অনানুষ্ঠানিক, কৌশলহীন।
আমি উভয় ক্ষেত্রেই ভুল ছিলাম। ২০১৪ সালে ইসলামিক স্টেটের আক্রমণে কয়েক দিনেই আমাদের থেকে প্রশিক্ষণ নে’য়া ইরাকি বাহিনীকে হুড়মুড় ক’রে ভেঙে পড়তে দেখেছি। আজ তালিবান যখন আফগানিস্তানের একের পর এক অঞ্চলের দখল নিচ্ছে, এমনকি যেখানে আমি কাজ করেছি, প্রশিক্ষণ দিয়েছি সে অঞ্চলও দখল করে নিয়েছে— তখন আমি কিছুই করতে পারছি না; কেবল ভাবার চেষ্টা করছি যে, আমি এবং আমার সহকর্মীরা কোথায় ভুল করেছিলাম। ভেবে দেখলাম, অনেক ভুল করেছি।
একেবারে শুরুতে, প্রায় দুই দশক আগে ইরাকি ও আফগান বাহিনীগুলোকে প্রশিক্ষিত করার আমেরিকার সেনাবাহিনীর যে প্রচেষ্টা ছিল, তা অনেকটা ধর তক্তা মার পেরেক ধরনের ছিল; পূর্ব পরিকল্পিত ছিল না, ছিল অনানুষ্ঠানিক, কৌশলহীন। আমরা পদাতিক সেনা, নৌ সেনা, নাবিক এবং বিমান সেনাদের ছোট ছোট দল গঠন করে তাদের কিছু বেইসিক সার্ভাইভাল স্কিল শিখিয়েছিলাম এবং স্থানীয় ভাষায় ঘন্টাখানেক যুদ্ধ বিষয়ক জ্ঞান দিয়ে তাদের বিদেশি সেনাদের সাথে পাঠিয়ে দিয়েছি। আমরা এই দলগুলোকে ভিন্নভিন্ন নাম দিয়েছিলাম কিন্তু আদতে কিছুই তারা হয়ে উঠতে পারেনি বা আমরা তাদের কিছু হয়ে উঠতে সাহায্য করতে পারিনি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই পুরুষ এবং মহিলারা যখন বিদেশি সেনাদের সাথে ছিল, তখন সাহসিকতার সাথেই সবটা করেছে। কিন্তু আমরা প্রধানত প্রশাসনিক নিয়োগ থেকে প্রশিক্ষণহীনদের জড়ো করেছিলাম এবং তাদের অধিকাংশই জড়িত ছিল কৌশলগত কাজে; যেমন বিভিন্ন রঙের চার্ট গ্রাফ ব্যবহার করে রিপোর্ট তৈরি করার মতো কাজ।
আমরা ইরাক এবং আফগানিস্তানের বাহিনীগুলোকে প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে পারিনি। আমরা ব্যর্থ হয়েছি প্রয়োজনীয় কাঠামো তৈরি করতে— যার মধ্যে আছে সামরিক শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, বেতন ব্যবস্থা, পেশাগত উন্নতি, কর্মচারি এবং দায়িত্ব। এগুলোই মূলত পেশাগত দক্ষ নিরাপত্তা বাহিনী গড়ে তোলে।
ইরাকে আমার যাত্রার শুরুর সময় থেকে আফগানিস্তান অব্দি, সবথেকে বড় পদ্ধতিগত সমস্যাই কখনও বিবেচনায় আনা হয়নি। আমরা ইরাক এবং আফগানিস্তানের বাহিনীগুলোকে প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে পারিনি। আমরা ব্যর্থ হয়েছি প্রয়োজনীয় কাঠামো তৈরি করতে— যার মধ্যে আছে সামরিক শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, বেতন ব্যবস্থা, পেশাগত উন্নতি, কর্মচারি এবং দায়িত্ব। এগুলোই মূলত পেশাগত দক্ষ নিরাপত্তা বাহিনী গড়ে তোলে। ছয় মাস থেকে এক বছরের সীমিত সময়ের কর্মপদ্ধতিতে আমরা ইরাকের এবং আফগানিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রধান সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারিনি। যেগুলো হল স্থানীয় দুর্নীতি, ভঙ্গুর মনোবল, মাদকাসক্তি, সম্পদ রক্ষণাবেক্ষনের অভাব এবং অপর্যাপ্ত সরবরাহ। আমরা সফল হয়েছি পল্টন তৈরিতে, চেকপয়েন্ট পরিচালনায় কিন্তু এর বাইরে কাজ হয়েছে খুবই অল্প। তবু আজকের দিনে কোনও প্রকার সহায়তা ছাড়াই আফগানিস্তানে কমান্ডোদের বিশেষ বাহিনীটা সাহসিকতার সাথে দারুণ লড়াই চালাচ্ছে।
আমাদের কাজগুলো পর্যাপ্ত ছিল না। আর কিছু কাজ আছে আমরা একেবারে করিনি, এড়িয়ে গেছি— যেমন পুলিশদের প্রশিক্ষণ দে’য়া। আমরা সাধারণত স্বীকার করি যে, বিদ্রোহী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য ছিল যুদ্ধটার দায়িত্ব স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দে’য়া এবং লক্ষ্য করা যে তারা সেনাবাহিনীর সাহায্য ছাড়াই পরিস্থিতি সামলাতে পারছে কিনা। কিন্তু আমেরিকার কোনও জাতীয় পুলিশ বাহিনীই নেই। তাই পুলিশ প্রশিক্ষণের কাজটা পড়েছিল সেনাবাহিনীর উপর। ইরাক এবং আফগানিস্তানে আমি হাজার হাজার পুলিশ দেখেছি। আফগানিস্তানের জাতীয় পুলিশ বাহিনীকে ওয়ারেন্ট ভিত্তিক বিদ্রোহীদের আটক করতে সাহায্য করার সময় আমি একটা টাস্ক ফোর্স পরিচালনা করেছিলাম— যেটা প্রায় তিন হাজার স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের পরীক্ষা করেছিল এবং বাছাই করেছিল। আমই স্পষ্ট ক’রে জানিয়ে রাখি, আমার আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর কোনও অভিজ্ঞতাই নেই, অধিকাংশ মার্কিন সেনাবাহিনীরই এই অভিজ্ঞতা নেই। তবে কিছু জাতীয় ও সংরক্ষিত বাহিনীর এই অভিজ্ঞতা আছে। যদিও আমাদের সেনাবাহিনীর পুলিশ ইউনিট আছে, কিন্তু তাদের কাজের ধরন, আমরা যে বাহিনীগুলো নিয়ে ইরাকে ও আফগানিস্তানে কাজ করেছি তা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। আমরা এই কমতি পূরণ করতে কিছু সাহসি অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের নিযুক্ত করেছিলাম মার্কিন বাহিনীর পাশাপাশি পরামর্শদাতা ও প্রশিক্ষক হিসেবে। তবে তারাও শুধু কৌশলগত কাজে সাহায্য করতে পেরেছে। জাতীয় বাহিনী ও ব্যবস্থা গড়ে তোলার মতো পেশাগত কিংবা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা তাদেরও ছিল না। আমাদের পুলিশি কাজের কোন সুযোগই কখনও ছিল না। মার্কিন সেনাবাহিনী আমাদের জাতীয় ও প্রাতিষ্ঠানিক অভিজ্ঞতার এই অভাব মূলত কাটিয়ে উঠতে পারেনি।
পেছনে ফিরে তাকালে আমরা বৃহৎ আকারে দেশটির প্রচলিত বাহিনীগুলোর ক্ষেত্রেও পরমার্শ দে’য়াকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পারিনি। কেউ কোনও দায়িত্বও কাঁধে তুলে নেয়নি। সবকিছু এগিয়ে নিতে আমার মতো কর্মকর্তাকেও সাধারণ দায়িত্ব বণ্টনের মতো কাজও করতে হয়েছে। আফগানিস্তানের সেনাবাহিনী পদোন্নতি ও নির্বাচন বোর্ডের পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে চেষ্টা করেছিলাম আমরা। তবে যখন আমরা সবকিছু সত্ত্বেও ২০১৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়ক ব্রিগেড গঠান করি, তখন দেখা যায় নতুন দায়িত্ব প্রাপ্ত কারওরই এই ধরণের কাজের কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই।
গত এই ২০ বছরে, আমরা অনেকভাবে ব্যর্থ হয়েছি। যখন একথা বলি যে মিত্রদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি আমরা, উন্নতির কারণ হয়েছি; পাশাপাশি তাদের শক্তিশালী করার মিশনে আমাদের বাহিনীর নিরাপত্তা এবং সুবিধাদি নিয়ে কথা বলি; তখম আমরা ব্যর্থতার বাক্সটাও খুলে দেখি। (যখন আফগান সঙ্গীরাই আমাদের উপর গুলি চালিয়েছিল, ‘গ্রিন অন ব্লু’ ঘটনায়, আমাদের সহকর্মীদের হত্যা করেছিল, আমরা আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে জোরদার করেছিলাম কিন্তু কেন তারা আমাদের উপর গুলি চালালো এই কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে চাইনি।) আমরা যথাযথ লোকদের পাঠাইনি, তাদের যথাযথভাবে তৈরি করিনি এবং পুরষ্কৃতও করিনি। আমরা অপরিচিতদের বছরের জন্য ইরাকে বা আফগানিস্তানে পাঠিয়ে প্রত্যাশা করেছি তারা স্থানীয়দের সাথে সম্পর্ক তৈরি করবে। আমরা মাত্রাতিরিক্ত আশাবাদী ছিলাম এবং পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়াই এগিয়েছি। আমরা ভুল অনুধাবন করিনি এবং ওয়াশিংটনের কঠিন প্রশ্নগুলো এড়িয়েছি। ইরাকে ও আফগানিস্তানে আমাদের দায়িত্বের অনেক কিছুতেই আমাদের কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না, আমরা হোঁচট খেয়েছি, ব্যর্থ হয়েছি।
আমরা নাইন ইলেভেনের পরে সঙ্গত কারণেই আফগানিস্তানে আক্রমণ করেছিলাম কিন্তু তারপর কী? তারপরেও বছরের পর বছর ধরে আমেরিকা আফগানিস্তানে কেন ছিল? পাকিস্তানের সাথে আমাদের সম্পর্ক এবং আফগানিস্তানে তাদের প্রভাবেরই বা কী হল?
এই ব্যর্থতাগুলো মর্মান্তিক— যা সশস্ত্র বাহনীগুলোকে বলির পাঁঠা বানিয়েছে। মূলত, সেনাবাহিনী, আমাদের মিত্ররা এবং ইরাকি ও আফগান সঙ্গীরাও আমাদের অবান্তর নীতি ও পরিকল্পনায় সায় দিয়েছিল।
আমরা নাইন ইলেভেনের পরে সঙ্গত কারণেই আফগানিস্তানে আক্রমণ করেছিলাম কিন্তু তারপর কী? তারপরেও বছরের পর বছর ধরে আমেরিকা আফগানিস্তানে কেন ছিল? পাকিস্তানের সাথে আমাদের সম্পর্ক এবং আফগানিস্তানে তাদের প্রভাবেরই বা কী হল? একটি সুসংহত পরিকল্পনা আফগানিস্তানে আমার কাজকে সহজ করে দিতে পারতো। আর সবার আগে এবং সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, কোনও লক্ষ্য ছিল না আমাদের; একটি সুস্পষ্ট লক্ষ্য আফগান অংশীদার এবং অন্যান্য দেশের মিত্রদের আমাদের লক্ষ্য সম্পর্কে নিশ্চয়তা দিতে পারতো; তা হয়নি। এই সমস্ত কিছুর দায়িত্ব প্রতিরক্ষা বিভাগের উপর ছেড়ে না দিয়ে, সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে সমানুপাতিক ভাবে সহযোগিতার কৌশল নিলে, আফগানিস্তানের ফলাফল অন্য কিছু হতে পারতো। ২০ বছর আগে লক্ষ্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন হলে আমাদের মিত্রদের কাছে তা বেশি গ্রহণযোগ্য হতো; তাদের অনেকেরই নিজস্ব জাতীয় পুলিশ বাহিনী আছে এবং এই ধরনের মিশনে সফলতার ইতিহাসও অনেক। সম্ভবত সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হল, পাকিস্তানকে নিয়ে একটি স্পষ্ট এবং জোরালো বৈদেশিক নীতির প্রয়োজন ছিল; যার মধ্যে নতুন আফগান সেনাদের সাহায্যও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারতো এবং এটা আমাদের সেনাবাহিনীকে মিশনের লক্ষ্য সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দিতো।
আমরা আফগানিস্তানে ২০ বছর দীর্ঘ কোনও যুদ্ধ করিনি। আমরা ২০ টি বিচ্ছিন্ন, অসংলগ্ন যুদ্ধ লড়েছি, প্রতিবছর একটি করে, কোনও লক্ষ্য ছাড়াই। আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর এই পরাজয়ে মার্কিন সেনাবাহিনীকে দোষ দে’য়া যায় এবং উচিতও— আমি এর সমস্ত দায়ভার বহন করতে প্রস্তুত। এই বিপর্যয় আমাকে সারারাত জাগিয়ে রাখে। গত ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে, প্রতিবেদন এবং সংবাদের শিরোনামে কী জেনেছে মানুষ কিছুতেই কিছু যায় আসে না; ইরাকি ও আফগান বাহিনীকে প্রশিক্ষণের সব প্রচেষ্টা ছিল লক্ষ্যহীন, এলোমেলো এবং এটা কখনও যেন আমাদের মূল উদ্দেশ্যই ছিল না— যা হচ্ছে তার জন্য আমরা দায়ী।
তবে আমরাই একমাত্র দায়ী নই। কোনও একদিন এখন যারা তরুণ, তাদের এই একই কাজ করতে বলবো— বিদেশে গিয়ে যুদ্ধ করতে, সেখানকার স্থানীয় বাহিনীর সঙ্গী হতে, তাদের প্রশিক্ষণ দিতে এবং একজোট করতে। কিন্তু তা বলার আগ অব্দি আমরা তাদের ছুঁড়ে দে’য়া কঠিন প্রশ্নটার মুখোমুখি হবো বারবার— কেন এবং কীভাবে আমরা পরাজিত হলাম।
[মার্কিন সেনাবাহিনীর কর্নেল মাইক জেসন ২০১৯ সালে ২৪ বছরের সুদীর্ঘ কর্মজীবন থেকে অবসর নেন। তিনি জার্মানি, কসোভো, কুয়েত, ইরাক এবং আফগানিস্তানে যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন। মাইক জেসন এর মতামতটি The Atlantic থেকে ভাষান্তর করেছেন সরকার শুভ্র]
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/১৮২০
আপনার মতামত জানানঃ