রাজধানীর মিন্টো রোডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন সেন্টারে গতকাল শনিবার (৭ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে কোভিড ফিল্ড হাসপাতাল উদ্বোধন করা হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এই হাসপাতাল উদ্বোধন করেন। তিনি জানান, তখন থেকেই হাসপাতালে রোগী ভর্তি শুরু হবে। অথচ উদ্বোধনের এক দিন পার হলেও অক্সিজেন লাইন প্রস্তুত না হওয়া, জনবল কম থাকার কারণে এই হাসপাতালে আজও রোগী ভর্তি শুরু হয়নি।
এদিকে উদ্বোধন হয়েছে দেখে রোগীরা সেখানে চিকিৎসার জন্য গিয়ে আশাহত হচ্ছেন। ভর্তির জন্য বসে আছেন ঘন্টার পর ঘন্টা। হাসপাতালকে সেবাদানের জন্য উপযুক্ত না করেই উদ্বোধন করায় এবং ভুল তথ্য দিয়ে আস্থা দেয়ায় রোগীরা সেখানে গিয়ে ভোগান্তিরও শিকার হচ্ছেন।
করোনাভাইরাসে সংক্রমিত জুলফিকার হোসেন সকালে চাঁদপুরের উত্তর মতলব থেকে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন সেন্টারে ফিল্ড হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়েছেন। ভর্তি হতে না পেরে দুপুরেও তাকে হাসপাতালে সিঁড়িতে অপেক্ষা করতে দেখেছে এক জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদক।
৬৯ বয়সী মো. জুলফিকার হোসেন করোনায় আক্রান্ত। মাস্ক পরে তিনি কোভিড ফিল্ড হাসপাতালের সামনে বসে আছেন। অপেক্ষা করতে তার কষ্ট হচ্ছে। তিনি ঐ জাতীয় দৈনিককে বলেন, ‘আমার খুব খারাপ লাগছে। ভর্তি করা হবে বলে হাসপাতাল থেকে জানাল। কিন্তু বিছানায় নিচ্ছে না। বিছানা এখনও তৈরি হয়নি। তিন ঘণ্টা ধরে বসে আছি। আর কতক্ষণ ধরে অপেক্ষা করব?’
হাসপাতাল উদ্বোধনের পরদিনও অক্সিজেন সিলিন্ডারে সমস্যা। আজকের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে বলে আশা করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপর রোগী ভর্তি নেওয়া সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
৮০ বছর বয়সী মা শামসুন নাহারকে কোভিড ফিল্ড হাসপাতালে ভর্তি করাতে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে অপেক্ষা করছেন সৈয়দ প্রিন্স। মায়ের জরুরি আইসিইউ সাপোর্ট দরকার। তাদের বাড়ি মাদারীপুরে। তিনি ঐ দৈনিককে বলেন, ‘আমরা রেফারেন্স নিয়ে আসছি, তা–ও ভর্তি করাতে পারছি না। অক্সিজেন লাইনে কাজ চলছে। উদ্বোধন করেছে হাসপাতাল, অথচ রোগী নিচ্ছে না। এ কেমন কথা।’
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নজরুল ইসলাম বলেন, অক্সিজেন সিলিন্ডার সমস্যা আজ বিকেলের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে। তখন রোগী ভর্তি হওয়া শুরু হবে। যাদের অক্সিজেন সংকট বেশি, সেই রোগী ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না। বাকিদের চিকিৎসা দিয়ে, পরামর্শ দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
অভ্যর্থনা ও তথ্যকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা অনিক নামের এক ব্যক্তি জানান, এই হাসপাতালে এখন পর্যন্ত কোনো রোগী ভর্তি হয়নি। এমনকি কোনো রোগী এখানে দেখা হচ্ছে না। তিনি বলেন, কিছু টেকনিক্যাল কাজ গোছানো বাকি আছে। ভর্তি হতে না পারা রোগীরা শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে বসে অপেক্ষা করছেন।
এসডব্লিউ/এমএন/ডব্লিউজেএ/১৮০০
আপনার মতামত জানানঃ