করোনা তার চূড়ান্ত ভয়ংকর রূপ দেখাতে শুরু করেছে। এই সময় স্বাস্থ্যজনিত কোনোকিছু নিয়ে হেলাফেলা করা মানে আরও বেশি বিপদকে আমন্ত্রণ জানানো। তবুও হুশ হচ্ছে না স্বাস্থ্যকর্মীদের। কর্তৃপক্ষের গা ছাড়া স্বভাব এর পেছনে দায়ি।
জানা যায়, মৌলভীবাজারে মেয়াদোত্তীর্ণ কৌটায় করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। এতে করোনা উপসর্গ নিয়ে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে নমুনা দিতে আসা সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিচ্ছে।
কৌটার মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে এটা সাধারণ মানুষ যাতে না বুঝে এজন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কৌশলে তারিখের জায়গাটুকু ছিঁড়ে ফেলেন। আবার কোনোটা মুছেও দিয়েছেন।
সূত্র মতে, গতকাল বুধবার সকালে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা করাতে আসা সাধারণ মানুষের হাতে একটি করে কৌটা দেয়া হয়। কৌটায় ব্যক্তির নাম ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর লেখা ছিল। এ সময় দেখা যায় কৌটার মেয়াদ গত জুন মাসে শেষ হয়েছে।
কৌটার মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে এটা সাধারণ মানুষ যাতে না বুঝে এজন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কৌশলে তারিখের জায়গাটুকু ছিঁড়ে ফেলেন। আবার কোনোটা মুছেও দিয়েছেন। এটা দেখে দূরদূরান্ত থেকে নমুনা দিতে আসা সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করে। জেলা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমন দায়িত্বহীন কর্মকাণ্ডে হতবাক নমুনা পরীক্ষা করাতে আসা জেলার সাধারণ মানুষ। তারা বলছেন, এই হাসপাতালে করোনার নমুনা পরীক্ষা লোক দেখানো ব্যতীত আর কিছুই নয়। পরীক্ষায় কার পজিটিভ কিংবা কার নেগেটিভ নির্ভুল ফলাফল পাওয়া যাবে না।
গত ২৪ ঘণ্টায় এ ভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে ১১ হাজার ৬৫১ জন। এখন পর্যন্ত এটিই একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্ত। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৯ লাখ ৮৯ হাজার ২১৯ জন। ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরো ১৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত এটি একদিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু। এ নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ১৫ হাজার ৭৯২ জন।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ কৌটা ব্যবহার করার কোনো সুযোগ নেই। এ রকম হয়ে থাকলে খুবই দুঃখজনক। নমুনা সংগ্রহের ফলাফল দেরিতে আসার বিষয়ে তিনি বলেন, ১-২ দিনের মধ্যে তো আশার কথা। হয়তো মাঝে মধ্যে একটু দেরি হয়।
এদিকে আজ বাংলাদেশ দেখলো সর্বার্ধিক শনাক্তের রেকর্ড। গত ২৪ ঘণ্টায় এ ভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে ১১ হাজার ৬৫১ জন। এখন পর্যন্ত এটিই একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্ত। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৯ লাখ ৮৯ হাজার ২১৯ জন। ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরো ১৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত এটি একদিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু। এ নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ১৫ হাজার ৭৯২ জন। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৩৮ হাজার ২৪ জনের। পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৬ হাজার ৮৫০টি। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ৬২ শতাংশ। দেশে এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৬৮ লাখ ৬৬ হাজার ৬৮২টি। মোট পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৪১ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১৯৯ জনের মধ্যে ৬৫ জনই ঢাকার। এছাড়া চট্টগ্রামে ৩৭, রাজশাহীতে ১৫, খুলনায় ৫৫, বরিশালে ৩, সিলেটে ৫, রংপুরে ৯ এবং ময়মনসিংহে ১০ জন মারা গেছেন।
মারা যাওয়াদের মধ্যে ১৩৩ জন পুরুষ এবং ৬৬ জন নারী। এদের মধ্যে ১২ জন বাসায় মারা গেছেন। বাকিরা হাসপাতালে মারা গেছেন। এ পর্যন্ত ভাইরাসটিতে মোট মারা যাওয়া ১৫ হাজার ৭৯২ জনের মধ্যে পুরুষ ১১ হাজার ১৩৫ জন এবং নারী ৪ হাজার ৬৫৭ জন।
এর আগে, গতকাল বুধবার ২০১ জনের মৃত্যু খবর জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর। একই সময়ে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয় ১১ হাজার ১৬২ জন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনার এই রকম পরিস্থিতিতে যখন স্বাস্থ্যকর্মীসহ এই সেক্টরের প্রত্যেকের অতিরিক্ত সচেতনতা দরকার, সে সময় নমুনা সংগ্রহের পাত্রের মত গুরুত্বপূর্ণ ইক্যুইপমেন্ট নিয়ে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীনতা খুবই ভয়ংকর এবং আশঙ্কাজনক।
এসডব্লিউ/এমএন/ডব্লিউজেএ/২৩১০
আপনার মতামত জানানঃ