এমন পরিস্থিতিতে ফরিদপুরের জেনারেল হাসপাতাল থেকে বৃষ্টিতে ভিজে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে গ্রামের বাড়ি মাগুরায় সদ্য জন্ম নেয়া শিশুসহ মাকে ভ্যানযোগে নিয়ে যাচ্ছিলেন স্বজনরা। এই খবর পেয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার শিশুসহ তার পরিবারকে গাড়ি ব্যবস্থা করে নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দেন।
গত পাঁচদিন লকডাউনে প্রায় স্থবির সারাদেশ। চলছে না গণপরিবহন। সারাদেশের মতো ফরিদপুরেও চলছে কঠোর বিধিনিষেধ। রিকশা, জরুরি ও পণ্যবাহী গাড়ি ছাড়া সব ধরনের যানবাহন বন্ধ। অ্যাম্বুলেন্সও পাওয়া যাচ্ছিল না। দিনভর বৃষ্টিতে তাই দুর্ভোগ চরমে মানুষের।
সূত্র মতে, রোববার (৪ জুলাই) সকালে ফরিদপুর সদর হাসপাতালে শিশুটি জন্মগ্রহণ করে। দুপুরের পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান শিশুটিসহ তার মা। পরে বৃষ্টিতে ভিজে শিশুটিসহ মাকে নিয়ে নিজে ভ্যান চালিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হন নানা সৈয়দ ফায়েক আলী।
বিষয়টি জানতে পারেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার। তার সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কুইক রেসপন্স টিমের গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়। অক্সিজেনসহ গাড়িতে করে নবজাতকসহ পরিবারটিকে মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর থানার বালিদিয়ায় নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করেন। এ সময় পরিবারের অনুমতিতে গাড়ির ভেতরেই নবজাতক শিশুটির নাম রাখা হয় ‘মোহাইমিনুল ইসলাম শুভ’।
শুভর নানা সৈয়দ ফায়েক আলী বলেন, ‘পরিবারের নতুন সদস্য নাতি বাড়ি নিতে হবে। কিন্তু যানবাহন সবইতো বন্ধ। কি আর করার। তাই নিজে ভ্যান চালিয়ে রওনা করেছিলাম। কীভাবে যেন ডিসি জানতে পেরে গাড়িতে করে সবাইকে বাড়িতে পৌঁছে দেন। সঙ্গে আবার পুলিশও দেন। মনে হচ্ছে আমার নাতিটি ভাগ্যবান। শুভ লক্ষণ নিয়ে পৃথিবীতে এসেছে, এজন্য তার নাম রাখা হয়েছে শুভ।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, ‘খবর পেয়ে তাদের বাড়ি পৌঁছে দেয়া হয়েছে। পথে যাতে তাদের কোনো সমস্যা না হয়, এজন্য পুলিশের সহায়তা নেয়া হয়েছে।’
এখানে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, একজনকে সাহায্য করে গণমাধ্যমে হিরো ব’নে যাওয়া আমাদের এই দেশে, প্রকৃত সমস্যা কবে মানুষের সামনে আসবে? এই লকডাউনে রোগীদের পরিবহনের ব্যবস্থা করা উচিত ছিল প্রতিটি জেলা ও থানা পর্যায়ে। কিন্তু সেদিকে হেলদোল নেই প্রশাসনের। এই নবজাতককে সাহায্য করেই দেশ উদ্ধার করে ফেলেছেন জেলা প্রশাসক।
এসডব্লিউ/এমএন/ওজেএ/১৫৫০
আপনার মতামত জানানঃ